পরমাণু কেন্দ্রের ভেতরের ছবি আইএইএ’কে দেবে না ইরান
পরমাণু স্থাপনা বা কেন্দ্রের ভেতরের আর কোনো ছবি আন্তর্জাতিক আণবিক শক্তি সংস্থা (আইএইএ)-কে সরবরাহ না করার ঘোষণা দিয়েছে ইরান। রোববার (২৩ মে) দেশটির পার্লামেন্টের স্পিকার মোহাম্মদ বাকের গালিবফ এই ঘোষণা দেন বলে জানিয়েছে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আলজাজিরা।
সংবাদমাধ্যমটি জানিয়েছে, ইরানের সঙ্গে আইএইএ’র তিন মাসব্যাপী চুক্তির মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ার কারণে সংস্থাটিকে পরমাণু স্থাপনার আর কোনো দৃশ্য দেখতে না দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে তেহরান।
রোববার পার্লামেন্ট অধিবেশনে ভাষণ দেওয়ার সময় স্পিকার মোহাম্মাদ বাকের গালিবফ বলেন, ‘চলতি মাসের ২২ মে আইএইএ’র সঙ্গে তিন মাসব্যাপী চুক্তির মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ায় ইরানের পরমাণু স্থাপনাগুলোতে স্থাপিত ক্যামেরার মাধ্যমে সংগৃহিত কোনো ছবি বা ভিডিও আর সংস্থাটিকে সরবরাহ করা হবে না।’
তিনি বলেন, পশ্চিমা দেশগুলোর সঙ্গে ২০১৫ সালে স্বাক্ষরিত পরমাণু সমঝোতায় ইরান তার পরমাণু কর্মকাণ্ড সীমিত করার যেসব প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল তার কোনোটি এখন আর বাস্তবায়ন করা হচ্ছে না এবং পার্লামেন্ট নিজ উদ্যোগে বিষয়টির ওপর নজরদারি করছে। গত ডিসেম্বরে ইরানের পার্লামেন্টই সরকারকে এ কাজে বাধ্য করতে একটি বিল পাস করেছিল।
ইরানি স্পিকার বলেন, ‘শনিবার (২২ মে) এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়েছে। পার্লামেন্টে পাস হওয়া আইনটি পরিপূর্ণভাবে বাস্তবায়ন করতে হবে। সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ খামেনির এ ব্যাপারে পূর্ণ সম্মতি রয়েছে।’
পার্লামেন্টে পাস হওয়া ওই আইনে বলা হয়েছে, ইরানের ওপর থেকে আমেরিকার নিষেধাজ্ঞা পুরোপুরি তুলে না দেওয়া পর্যন্ত তেহরান আইএইএ’কে এনপিটি চুক্তির বাইরে অতিরিক্ত কোনো সহযোগিতা করবে না।
কিন্তু ওই আইনের বাইরেও যাতে আইএইএ ইরানের পরমাণু স্থাপনাগুলোতে বসানো ক্যামেরার মাধ্যমে দূর নিয়ন্ত্রিতভাবে এসব স্থাপনার ওপর নজরদারি করতে পারে সে ব্যাপারে গত ফেব্রুয়ারি মাসে সংস্থাটির সঙ্গে ইরানের তিন মাসব্যাপী চুক্তি হয়েছিল। গত ২২ মে সেই চুক্তির মেয়াদ শেষ হয়।
প্রসঙ্গত, পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির জন্য ৯০ শতাংশ মাত্রায় ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ করতে হয়। ইউনিয়াম ৬০ শতাংশ হারে সমৃদ্ধকরণ করতে পারলে ইরান সন্দেহাতীত ভাবে ব্যাপক বিধ্বংসী এই অস্ত্রটি অর্জনের দিকে আরও এক ধাপ এগিয়ে যাবে। তবে তেহরান বরাবরই বলে আসছে যে, তাদের পারমাণবিক কর্মসূচি শান্তিপূর্ণ।
২০১৫ সালে ইরানের সঙ্গে ছয় বিশ্ব পরাশক্তির মধ্যে পরমাণু চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। কিন্তু ২০১৮ সালে যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ‘ত্রুটিপূর্ণ’, ‘একপেশে’, ‘এর কোনো ভবিষ্যৎ নেই’ অভিযোগ তুলে চুক্তি থেকে যুক্তরাষ্ট্রকে বের করে নিয়ে যান। যুক্তরাষ্ট্রের বেরিয়ে যাওয়ার পর চুক্তির শর্তগুলো মেনে চলার ব্যাপারে ইরানও উদাসীন হয়ে পড়ে।
টিএম