তিউনিশিয়া উপকূলে নৌকাডুবিতে ২৭ অভিবাসীর মৃত্যু
ভূমধ্যসাগর পেরিয়ে ইউরোপে যাওয়ার পথে তিউনিশিয়ার মধ্যাঞ্চলীয় উপকূলের কাছে জোড়া নৌকাডুবির ঘটনায় অন্তত ২৭ অভিবাসী নিহত হয়েছেন। এই ঘটনায় ডুবে যাওয়া নৌকার আরও অন্তত ৮৩ অভিবাসীকে উদ্ধার করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার তিউনিশিয়ার একজন বেসামরিক প্রতিরক্ষা কর্মকর্তা ফরাসি বার্তা সংস্থা এএফপিকে এই তথ্য জানিয়েছেন।
দেশটির স্ফ্যাক্স শহরের বেসামরিক প্রতিরক্ষা বাহিনীর প্রধান জেইদ সিদিরি বলেছেন, তিউনিসিয়ার কেরকেনাহ দ্বীপপুঞ্জ থেকে অভিবাসীদের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। এ সময় জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে ৮৩ জনকে। অভিবাসীদের সবাই আফ্রিকার সাব-সাহারা অঞ্চলের বিভিন্ন দেশের নাগরিক। তাদের সবার গন্তব্য ছিল ইউরোপ।
তিউনিশিয়ার জাতীয় উপকূলরক্ষী বাহিনীর তথ্য অনুযায়ী, জোড়া নৌকাডুবির ঘটনায় সম্ভাব্য নিখোঁজ যাত্রীদের সন্ধানে এখনও তল্লাশি অভিযান চলছে।
দারিদ্র্য ও সংঘাত থেকে পালিয়ে ইউরোপে উন্নত জীবনের আশায় আফ্রিকা, এশিয়া ও মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশের হাজার হাজার মানুষ প্রায়ই ভূমধ্যসাগর পাড়ি দেওয়ার চেষ্টা করেন। বর্তমানে অভিবাসীদের ইউরোপে যাওয়ার অন্যতম প্রস্থান পয়েন্ট হয়ে উঠছে তিউনিশিয়া। দেশটি নজিরবিহীন অভিবাসন সংকটের মুখোমুখি হয়েছে।
তিউনিশিয়া থেকে ইতালির লাম্পেদুসা দ্বীপের দূরত্ব মাত্র ১৫০ কিলোমিটার। তিউনিশিয়া হয়ে ভূমধ্যসাগর পেরিয়ে ইউরোপে যাওয়ার জন্য প্রথম নোঙর পয়েন্ট হিসেবে এই দ্বীপকে বেছে নেন অভিবাসীরা।
প্রতি বছর হাজার হাজার মানুষ বিপজ্জনক ভূমধ্যসাগর পাড়ি দেওয়ার চেষ্টা করেন। বৈরী আবহাওয়া চলাকালীন উত্তাল সাগর পাড়ি দিতে গিয়ে অনেকেই দুর্ঘটনার কবলে পড়েন।
গত ১৮ ডিসেম্বর আফ্রিকার সাব-সাহারা অঞ্চল থেকে ইউরোপের উদ্দেশে যাত্রা করা অভিবাসীদের একটি নৌকাডুবির ঘটনা ঘটে। তিউনিশিয়ার স্ফ্যাক্স শহরের উপকূলীয় এলাকায় জাহাজডুবির এই ঘটনায় কমপক্ষে ২০ জন নিহত ও পাঁচজন নিখোঁজ হন।
এর আগে, গত ১২ ডিসেম্বর তিউনিশিয়ার উপকূলরক্ষী বাহিনী স্ফ্যাক্সের উত্তরের জেবেনিয়ানার কাছে ২৭ আফ্রিকান অভিবাসীকে উদ্ধার করে। ওই দুর্ঘটনায় অন্তত ১৫ জন নিহত অথবা নিখোঁজ হয়েছেন বলে খবর পাওয়া যায়।
দেশটির স্থানীয় মানবাধিকার সংস্থা তিউনিশীয় ফোরাম ফর ইকোনমিক অ্যান্ড সোশ্যাল রাইটস (এফটিডিইএস) বলেছে, ২০২৪ সালে রেকর্ডসংখ্যক অভিবাসী তিউনিসিয়ার উপকূল থেকে ভূমধ্যসাগর পাড়ি দিয়েছেন। এ সময় তিউনিসিয়ার কাছে জাহাজডুবির ঘটনায় নিহত বা নিখোঁজ হয়েছেন ৬০০ থেকে ৭০০ অভিবাসী। আর ২০২৩ সালে সমুদ্র পাড়ি দিতে গিয়ে নৌকাডুবিতে প্রাণ যায় ১ হাজার ৩০০ জনেরও বেশি অভিবাসীর।
সূত্র: এএফপি।
এসএস