গাজায় ইসরায়েলি বর্বরতায় ২ শতাধিক নবজাতকসহ নিহত ১১০০ শিশু
ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা ভূখণ্ডে ইসরায়েলি বর্বরতায় প্রায় হারিয়েছে প্রায় ১১০০ শিশু। নিহত এই শিশুদের মধ্যে নবজাতকের সংখ্যা দুই শতাধিক। ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে গাজায় চলমান ইসরায়েলি আগ্রাসনে প্রাণ হারিয়েছে তারা।
বুধবার (১ জানুয়ারি) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা আনাদোলু।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে ইসরায়েলি হামলায় প্রায় ১১০০ ফিলিস্তিনি শিশু নিহত হয়েছে বলে বুধবার স্থানীয় কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে। গাজার সরকারি মিডিয়া অফিস জানিয়েছে, ইসরায়েলি হামলায় ২৩৮ নবজাতকসহ ১,০৯১ শিশু প্রাণ হারিয়েছে।
স্থানীয় স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ গত সোমবার জানিয়েছে, অবরুদ্ধ এই ভূখণ্ডে ইসরায়েলি অবরোধের মধ্যে শীতের কারণে ঠান্ডায় জমে ছয় শিশুসহ কমপক্ষে সাতজন মারা গেছে।
এদিকে ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে গাজা উপত্যকা এবং পশ্চিম তীরে চলমান ইসরায়েলি গণহত্যার মধ্যে প্রায় ১২ হাজার ৯৪৩ জন ফিলিস্তিনি শিক্ষার্থী নিহত হয়েছেন এবং আরও ২১ হাজার ৬৮১ জন আহত হয়েছেন বলে ফিলিস্তিনি তথ্য কেন্দ্রের বরাতে প্রকাশ করেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।
গত মঙ্গলবার দেওয়া এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, হামলা চালিয়ে হতাহত করার পাশাপাশি আরও ৫৪২ শিক্ষার্থীকে আটক করা হয়েছে। এছাড়া ইসরায়েলি হামলায় নিহত শিক্ষক ও প্রশাসনিক কর্মীর সংখ্যা ৬৩০ জন এবং আহত হয়েছেন আরও ৩ হাজার ৮৬৫ জন।
মন্ত্রণালয় আরও উল্লেখ করেছে, গাজায় চলমান যুদ্ধে ৪২৫টি স্কুল, বিশ্ববিদ্যালয় এবং অন্যান্য শিক্ষা-সংশ্লিষ্ট ভবন এবং এর পাশাপাশি ইউএনআরডব্লিউএ-অধিভুক্ত ৬৫ স্কুলও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং পশ্চিম তীরে ১০৯টি স্কুল ও সাতটি বিশ্ববিদ্যালয়ে অভিযান চালিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত করা হয়েছে।
আরও পড়ুন
উল্লেখ্য, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাসের নজিরবিহীন আন্তঃসীমান্ত হামলার পর থেকে ইসরায়েল গাজা উপত্যকায় অবিরাম বিমান ও স্থল হামলা চালিয়ে যাচ্ছে। ইসরায়েলি এই হামলায় হাসপাতাল, স্কুল, শরণার্থী শিবির, মসজিদ, গির্জাসহ হাজার হাজার ভবন ক্ষতিগ্রস্ত বা ধ্বংস হয়ে গেছে। হামাসের সেই আন্তঃসীমান্ত হামলার পর থেকে ইসরায়েল গাজায় ৪৫ হাজারেরও বেশি মানুষকে হত্যা করেছে, যাদের বেশিরভাগই নারী ও শিশু।
ফিলিস্তিনি স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ মনে করছে, গাজা উপত্যকা জুড়ে ধ্বংস হওয়া বাড়ির ধ্বংসস্তূপের নিচে এখনও ১০ হাজারেরও বেশি লোক নিখোঁজ রয়েছেন। মূলত গাজায় অবিলম্বে যুদ্ধবিরতির দাবি জানিয়ে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের প্রস্তাব সত্ত্বেও ইসরায়েল অবরুদ্ধ এই ভূখণ্ডে তার নৃশংস আক্রমণ অব্যাহত রেখেছে।
এছাড়া ইসরায়েলি আগ্রাসনের কারণে প্রায় ২০ লাখেরও বেশি বাসিন্দা তাদের বাড়িঘর ছাড়তে বাধ্য হয়েছেন।
ইসরায়েল ইতোমধ্যেই আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে গণহত্যার অভিযোগে অভিযুক্ত হয়েছে। গত মাসে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত গাজায় যুদ্ধাপরাধ এবং মানবতাবিরোধী অপরাধের জন্য ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু এবং সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্টের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছে।
টিএম