ছয় ইরানির মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করল সৌদি
মাদকপাচারের মামলায় দোষী সাব্যস্ত অন্তত ছয় ইরানির মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করেছে মধ্যপ্রাচ্যের দেশ সৌদি আরব। বুধবার সৌদি আরবের রাষ্ট্রায়ত্ত বার্তা সংস্থা সৌদি প্রেস এজেন্সির (এসপিএ) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানানো হয়েছে।
দেশটির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বরাত দিয়ে ওই ছয় ইরানির সর্বোচ্চ সাজা কার্যকরের তথ্য নিশ্চিত করেছে এসপিএ। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘‘গোপনে মাদক চোরাচালানের দায়ে সৌদি আরবের উপসাগরীয় শহর দাম্মামে অন্তত ছয় ইরানির মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়েছে।’’
তবে ইরানি এসব নাগরিকের মৃত্যুদণ্ড কবে কার্যকর করা হয়েছে, সেই বিষয়ে কোনও তথ্য জানায়নি সৌদির রাষ্ট্রায়ত্ত বার্তা সংস্থাটি। ফরাসি বার্তা সংস্থা এএফপির পরিসংখ্যান অনুযায়ী, মানবপাচারের অভিযোগে ২০২৪ সালে সৌদি আরবে ১১৭ জনের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়েছে।
২০২৩ সালে উপসাগরীয় অঞ্চলের এই দেশটির কর্তৃপক্ষ বহুল আলোচিত মাদকবিরোধী অভিযান শুরু করে। ওই সময় ধারাবাহিক অভিযান চালিয়ে শত শত মানুষকে গ্রেপ্তার করা হয়। দুই বছর আগে মাদক চোরাচালানের অভিযোগে মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের ওপর থেকে স্থগিতাদেশ প্রত্যাহার করে নেওয়ার পর থেকে দেশটিতে পাচারকারীদের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর বৃদ্ধি পেয়েছে।
২০১৬ সালে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের অভিযোগে শিয়া মতাবলম্বী নেতা নিমর আল-নিমরের মৃত্যুদণ্ড রিয়াদ কার্যকর করার পর ইরানের সঙ্গে সৌদি আরবের সম্পর্কের চরম অবনতি ঘটে। নিমরের মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের প্রতিশোধে তেহরানে নিযুক্ত সৌদি আরবের দূতাবাসে হামলা চালায় শত শত ইরানি। এই হামলার পর ইরানের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করে সৌদি আরব।
পরে চীনের মধ্যস্থতায় মধ্যপ্রাচ্যের চিরবৈরী দুই আঞ্চলিক প্রতিদ্বন্দ্বী সৌদি আরব ও ইরান নিজেদের কূটনৈতিক সম্পর্ক পুনরায় স্থাপন করে। যুক্তরাজ্য-ভিত্তিক আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের মতে, ২০২৩ সালে চীন ও ইরানের পর সৌদি আরব বিশ্বে তৃতীয় সর্বোচ্চসংখ্যক কারাবন্দির মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করেছে।
এর আগে, দেশটিতে এক বছরে মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের সর্বোচ্চ রেকর্ড হয়েছিল ২০২২ সালে। ওই বছর দেশটিতে বিভিন্ন ধরনের অপরাধের দায়ে মোট ১৯৬ জনের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয় বলে জানিয়েছে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল। লন্ডন-ভিত্তিক এই মানবাধিকার সংস্থা ১৯৯০ সাল থেকে সৌদি আরবে মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের বার্ষিক পরিসংখ্যানের রেকর্ড রাখতে শুরু করে।
সূত্র: এএফপি।
এসএস