ইসরায়েলি হামলায় গাজার হাসপাতালগুলো ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে: জাতিসংঘ
ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা ভূখণ্ডের হাসপাতালগুলোতে ইসরায়েলের সামরিক বাহিনীর উপর্যুপরি হামলা এবং আশপাশের এলাকায় সামরিক অভিযান গাজার স্বাস্থ্য ব্যবস্থাকে ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে নিয়ে গেছে।
জাতিসংঘের মানবাধিকার দপ্তরের এক প্রতিবেদনে এমনই তথ্য তুলে ধরা হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, গাজার স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থা পুরোপুরি ভেঙ্গে পড়ার দ্বারপ্রান্তে পৌঁছে গেছে।
মঙ্গলবার (৩১ ডিসেম্বর) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা।
সংবাদমাধ্যমটি বলছে, মঙ্গলবার প্রকাশিত ২৩ পাতার এই রিপোর্টে ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর থেকে ২০২৪ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত পরিস্থিতি পর্যালোচনা করা হয়। এই রিপোর্ট বলছে, হাসপাতালে এবং হাসপাতালের কাছাকাছি “ভয়াবহ ইসরায়েলি হামলার প্যাটার্ন”-এর ফলে “গাজার বেশিরভাগ হাসপাতাল ধ্বংস হয়ে গেছে,” যার ফলে অনেক হাসপাতালের আশপাশে যুদ্ধ চলেছে এবং “স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থাকে পুরোপুরি ভেঙ্গে পড়ার দ্বারপ্রান্তে নিয়ে গেছে।”
এতে আরও বলা হয়েছে, “২০২৩ সালের অক্টোবরের পর পরিস্থিতির মারাত্মক অবনতি হয়েছে। আগে থেকেই নাজুক অবস্থায় থাকার গাজার স্বাস্থ্য ব্যবস্থাকে লক্ষ্য করে দফায় দফায় হামলা চালানো হয়েছে যার ফলে শত শত স্বাস্থ্যকর্মী এবং মেডিকেল পেশাজীবী নিহত হয়েছেন।”
রিপোর্টে পর্যালোচনা করা সময়ের মধ্যে, প্রতিবেদনে অন্তত ২৭টি হাসপাতাল এবং ১২টি স্বাস্থ্যকেন্দ্রে কমপক্ষে ১৩৬টি হামলা নথিভুক্ত করা হয়েছে এবং স্বাস্থ্য কর্মী আর বেসামরিক মানুষদের মধ্যে বহু হতাহত হওয়ার কথা উল্লেখ করা হয়েছে। রিপোর্টে আরও বলা হয়েছে, পুরোপুরি ধ্বংস না হলেও হামলার ফলে বেসামরিক অবকাঠামোর মারাত্মক ক্ষতি হয়েছে।
জাতিসংঘের হাইকমিশনার ফর হিউম্যান রাইটস ফলকার টুর্ক এক বিবৃতিতে বলেন, “এই প্রতিবেদন গাজার স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থা ধ্বংস করার বর্ণনা সচিত্র ভাবে তুলে ধরেছে। এসব আক্রমণে আন্তর্জাতিক মানবিক এবং মানবাধিকার আইন সম্পূর্ণ অবজ্ঞা করে রোগী, স্বাস্থ্যকর্মী এবং অন্যান্য বেসামরিক মানুষ হত্যার মাত্রা প্রতিবেদনে তুলে ধরা হয়েছে।”
আরও পড়ুন
তিনি বলেন, এই প্রতিবেদনে ইসরায়েলের আন্তর্জাতিক আইন মানার ব্যাপারে গুরুতর উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে। প্রতিবেদনে বিশেষ করে উল্লেখ করা হয়েছে, আন্তর্জাতিক মানবিক আইনে হাসপাতালকে নির্দিষ্টভাবে সুরক্ষা দেওয়ার কথা বলা আছে। তবে শর্ত রয়েছে, হাসপাতালে মানবিক কার্যক্রমের বাইরে এমন কোনও কাজ করবে না বা করার জন্য তাদের ব্যবহার করা হবে না, যা শত্রুর জন্য ক্ষতিকর।
তিনি আরও বলেন, “যুদ্ধের সময় হাসপাতালের নিরাপত্তা আবশ্যক এবং সেটা সব পক্ষকে, সব সময় মেনে চলতে হবে।”
টিএম