এই প্রথম নারী গভর্নর পেল সিরিয়ার কেন্দ্রীয় ব্যাংক
সিরিয়ার কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নতুন গভর্নর হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে মায়সা সাবরিনকে। তার এই নিয়োগের মাধ্যমে নিজেদের ইতিহাসে এই প্রথম নারী গভর্নর পেল মধ্যপ্রাচ্যের এ দেশটির কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
দামেস্ক বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অ্যাকাউন্টিং বিষয়ে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি নেওয়ার পর ২০১০ সালে সিরিয়ার কেন্দ্রীয় ব্যাংকে কর্মকর্তা হিসেবে যোগ দেন মায়সা। তারপর সিরিয়ার পুঁজিবাজারের সরকারি সংস্থা দামেস্ক সিকিউরিটি এক্সচেঞ্জের নির্বাহী বোর্ডে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রতিনিধিত্ব করেছেন ২০১৮ সাল পর্যন্ত। তারপর ওই বছরই কেন্দ্রীয় ব্যাংকের অফিস নিয়ন্ত্রণ বিভাগের প্রধান হিসেবে বদলি হন। গভর্নরের পদে পদোন্নতি পাওয়ার আগ পর্যন্ত সেই বিভাগেই ছিলেন তিনি।
সোমবার পদোন্নতির মাধ্যমে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সাবেক গভর্নর মোহাম্মদ ইসাম হাজিমের স্থলাভিষিক্ত হলেন মায়সা। ২০২১ সালে ইসামকে গভর্নর হিসেবে নিয়োগ দিয়েছিলেন সিরিয়ার সাবেক প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদ। সরকারবিরোধী সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোর এক অভূতপূর্ব অভ্যুত্থানে পদচ্যুত হয়ে ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহে দেশ ছেড়ে রাশিয়ায় আশ্রয় নিতে বাধ্য হন বাশার। তবে বাশারের পতনের পরও তিন সপ্তাহ গভর্নরের পদে ছিলেন ইসাম।
২০০১ সালে সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট হন বাশার আল আসাদ। তিনি প্রেসিডেন্ট হওয়ার ১০ বছরের মাথায়, ২০১১ সালে দেশটিতে শুরু হয় গৃহযুদ্ধ। এদিকে রাশিয়ার সঙ্গে ঘনিষ্ঠতার জেরে সিরিয়ার ওপর বেশ কিছু অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞাও জারি করে যুক্তরাষ্ট্র। ফলে একদিকে গৃহযুদ্ধ এবং অন্যদিকে নিষেধাজ্ঞার চাপে নড়বড়ে অবস্থায় পৌঁছায় সিরিয়ার অর্থনীতি।
বাশার আল আসাদের পতনের পর ক্ষমতাসীন নতুন সরকার দেশটির অর্থনীতিকে ঢেলে সাজানোর কাজ শুরু করেছে। বাশারের আমলে অর্থনীতিতে রাষ্ট্রের কঠোর নিয়ন্ত্রণ ছিল; নতুন সরকার সেই প্যাটার্ন বদলে অর্থনীতিকে আধুনিক ও মুক্ত করার জন্য ইতোমধ্যে বেশ কিছু পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্যেও রাষ্ট্রের নিয়ন্ত্রণ হ্রাস করা হয়েছে।
গত ১৬ ডিসেম্বর কেন্দ্রীয় ব্যাংক পরিদর্শন করেছেন সিরিয়ার বর্তমান সরকারের প্রতিনিধিরা। পরিদর্শনের সময় তারা দেখতে পান, দেশটির বিদেশি মুদ্রার রিজার্ভ মাত্র ২০ কোটি ডলারের সমমূল্যের হলেও ব্যাংকের ভল্টে মজুত রয়েছে ২৮ টন সোনার।
অর্থনীতিবিদরা জানিয়েছেন, স্বর্ণের একটি সন্তোষজনক মজুত থাকায় আপাতত খানিকটা সংকটের মধ্যে দিয়ে গেলেও বড় কোনো আর্থিক সংকটে পড়বে না সিরিয়া।
সূত্র : এএফপি, এনডিটিভি ওয়ার্ল্ড
এসএমডব্লিউ