স্পেনের ক্যানারি রুটে নিহত-নিখোঁজ প্রায় ১০ হাজার অভিবাসী
অভিবাসীদের ইউরোপে পাড়ি জমানোর বহুল ব্যবহৃত স্পেনের ক্যানারি দ্বীপপুঞ্জ রুটকে বর্তমানে ‘বিশ্বের সবচেয়ে প্রাণঘাতী অভিবাসন রুট’ হিসাবে অভিহিত করেছে স্প্যানিশ এনজিও ক্যামিনান্দো ফ্রন্টেরাস। চলতি বছর ইতোমধ্যে এই রুটে প্রায় ১০ হাজার অনিয়মিত অভিবাসী নিখোঁজ অথবা মারা গেছেন।
স্প্যানিশ এই এনজিওর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০২৪ সালে অ্যাটলান্টিক ও ভূমধ্যসাগর পেরিয়ে ক্যানারি দ্বীপপুঞ্জে পৌঁছাতে গিয়ে ১০ হাজার ৪৫৭ জন অনিয়মিত অভিবাসী মারা গেছেন অথবা নিখোঁজ হয়েছেন।
অর্থাৎ প্রতিদিন গড়ে ৩০ জন অভিবাসী মারা গেছেন বা নিখোঁজ হয়েছেন। ভুক্তভোগীদের মধ্যে এক হাজার ৫৩৮ জন শিশু রয়েছে। এনজিও ক্যামিনান্দো ফ্রন্টেরাস বছরজুড়ে নৌকাডুবির ঘটনায় বেঁচে যাওয়া পরিবার এবং বেঁচে থাকা ব্যক্তিদের তথ্যের ভিত্তিতে প্রতিবেদনটি তৈরি করেছে বলে জানিয়েছে। ২০২৪ সালে এই রুটে অতীতের সব রেকর্ড ভেঙেছে বলে দাবি করেছে এনজিওটি।
২০২৩ সালে এই রুটে ছয় হাজার ৬১৮ জনের প্রাণহানি অথবা নিখোঁজের তথ্য দিয়েছিল এনজিওটি। ২০২৪ সালের পরিসংখ্যান ২০২২ সালের তুলনায় ১৭৭ শতাংশ বেশি। ২০০৭ সালের পর এটি সর্বোচ্চ বলে দাবি করেছে ক্যামিনান্দো ফ্রন্টেরাস।
আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থা (আইওএম) একই রুটে ২০২৪ সালে ৯৭৯ অভিবাসী মৃত্যুর পরিসংখ্যান প্রকাশ করেছে। কামিনান্দো ফ্রন্তেরাসের পরিসংখ্যানের সাথে আইওম-এর বড় পার্থক্য দেখা গেছে।
অবশ্য সংস্থা দু’টি পরিসংখ্যানের ক্ষেত্রে আলাদা পদ্ধতি প্রয়োগ করেছে। কামিনান্দো ফ্রন্তেরাস সমুদ্রে অভিবাসীদের বা তাদের পরিবারের কাছ থেকে পাওয়া তথ্য এবং অ্যালার্ম ফোনসহ বিভিন্ন হট লাইন থেকে পাওয়া ফোন কলের উপর ভিত্তি করে রিপোর্ট তৈরি করেছে।
আইওএম ভূমধ্যসাগরীয় সমন্বয় অফিসের মুখপাত্র ফ্ল্যাভিও ডি জাকোমো গত বছর জানিয়েছিলেন, ‘‘উপকূলে আসা নৌকাগুলোর তথ্য এবং নৌকাডুবির ঘটনায় শতভাগ নিশ্চিত হয়ে আমরা তালিকাভুক্ত করি। আমরা এই বিষয়ে বেশ কঠোর।’’
এছাড়া গণমাধ্যমের প্রতিবেদনও আমলে নেওয়া হয় বলে জানায় আইওএম। তিনি বলেন, ‘‘অ্যাটলান্টিক রুটের তুলনায় ভূমধ্যসাগরীয় রুটের পরিসংখ্যানের ব্যাপারে নিশ্চিত হওয়া সহজ। কারণ অ্যাটলান্টিকে নৌকাগুলোকে চিহ্নিত করা বেশ কঠিন।’’
আইওএমের এই কর্মকর্তা বলেন, ‘‘অ্যাটলান্টিকের উন্মুক্ত সমুদ্রের এই পথটি খুবই বিপজ্জনক। তাই অনেক নৌকাডুবির ঘটনা শোনা না যাওয়ার প্রবল আশঙ্কা রয়েছে।’’
ক্যানারি দ্বীপপুঞ্জের রুটটি ২০০৫ সাল থেকে সক্রিয় রয়েছে। ২০০৭ সালে নিরাপত্তারক্ষী মোতায়েনের পর রুটটিতে অভিবাসী আগমন কমেছিল। ২০১৮ সাল থেকে লিবিয়া এবং ভূমধ্যসাগরে সামরিকীকরণ করা হলে আবারও অভিবাসীরা অ্যাটলান্টিকের রুটে ফিরতে শুরু করেন। ইনফোমাইগ্রেন্টস।
এসএস