কঙ্গোতে সক্রিয় আগ্নেয়গিরি, স্থানীয়দের এলাকা ছাড়ার নির্দেশ
পূর্ব আফ্রিকার দেশ ডেমেক্রেটিক রিপাবলিক (ডিআর) কঙ্গোর উত্তর কিভু প্রদেশে ফের সক্রিয় হয়ে উঠেছে আগ্নেয়গিরি নাইরাগঙ্গো। পর্বতের জ্বালামুখ থেকে লাভা ছিটকে বেরি আসছে। অগ্নুৎপাতের ফলে লাল হয়ে উঠেছে নাইরাগঙ্গোর আশপাশের এলাকা ও রাজধানী গোমা শহরের আকাশ।
আগ্নেয়গিরি সক্রিয় হয়ে ওঠার সঙ্গে সঙ্গেই নাইরাগঙ্গোর পাদদেশের শহর গোমার অধিবাসীদের নিরাপদ এলকায় সরিয়ে নেওয়ার কাজ শুরু করে স্থানীয় কর্তৃপক্ষ। ডিআর কঙ্গোর সরকারি দুযোর্গ ব্যবস্থাপনা বিভাগের এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, শহরের অধিকাংশ মানুষকে ইতোমধ্যে নিরাপদ এলাকায় নেওয়া হয়েছে, বাকিদেরও দ্রুত সরিয়ে নেওয়ার প্রক্রিয়া চলছে।
গোমা শহর থেকে নাইরাগঙ্গো আগ্নেয় পর্বতের দূরত্ব ১০ কিলোমিটার (৬ মাইল)। সর্বশেষ এই পর্বতটিতে অগ্নুৎপাত হয়েছিল ২০০২ সালে। সে সময় অগ্নুৎপাতের ফলে মারা গিয়েছিলেন প্রায় আড়াইশ’র মতো মানুষ, বাস্তুহারা হয়েছিলেন ১ লাখ ২০ হাজার।
তার আগে বিস্ফোরণ হয়েছিল ১৯৭৭ সালে। সে সময় মারা গিয়েছিলেন ৬ শতাধিক মানুষ।
কেরিন এমবালা নামে শহরের এক বাসিন্দা বার্তা সংস্থা এএফপিকে বলেন, বাতাসে সালফারের গন্ধ পাওয়া যাচ্ছে। সামান্য দূরেই পাহাড় থেকে আসা আগুনের শিখা দেখা যায়।
— The New Times (Rwanda) (@NewTimesRwanda) May 22, 2021
প্রায় ২০ বছর নীরব থাকার পর হঠাৎ নাইনাগঙ্গো সক্রিয় হয়ে ওঠায় গোমা শহরের মানুষদের মধ্যে দেখা দিয়েছে তীব্র আতঙ্ক। জাচারি পালুকু নামে গোমার এক বাসিন্দা মার্কিন বার্তাসংস্থা অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস (এপি) কে জানান, ‘আমরা ব্যাপক মানসিক বিপর্যয়ের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছি। প্রত্যেকেই আতঙ্কগ্রস্ত। সবই ছুটছে। আমরা সত্যিই জানি না আমাদের কী করা উচিত আসলে।’
গোমার বাসিন্দা দারিও তেড়েস্কো বার্তাসংস্থা রয়টার্সকে বলেন, জ্বালমুখ ছাড়াও এর কাছে পর্বতের একটি অংশে ফাটল দেখা দিয়েছে। সেই ফাটল থেকেও নিঃসৃত হচ্ছে লাভা। পর্বতের যে দিকের ফাটল লাভা বের হচ্ছে, সেটি অব্যাহত থাকলে শহরের বিমানবন্দর পর্যন্ত লাভা এসে পড়তে পারে।
রোববার কঙ্গোর যোগাযোগ মন্ত্রী প্যাটট্রিক মুইয়াইয়া এক টুইট বার্তায় বলেন, গোমা শহরকে খালি করার ঘোষণা কার্যকর করা হয়েছে। তিনি বলেন, সরকার জরুরি পদক্ষেপ নেওয়ার বিষয়ে আলোচনা করছে।
কঙ্গোর উত্তর কিভু প্রদেশের সামরিক গভর্নরের দফতর থেকে বলা হয়, স্থানীয় সময় রোববার সন্ধ্যা ৭টার দিকে আগ্নেয়গিরিটি বিস্ফোরিত হয়। কর্তৃপক্ষ গোমার বাসিন্দাদের শান্ত থাকার আহ্বান জানিয়েছে।
নাইরাগঙ্গো বিশ্বের সবচেয়ে সক্রিয় আগ্নেয়গিরিগুলোর মধ্যে অন্যতম। কিন্তু গত কয়েক বছর এর গতিবিধি সম্পর্কে নিয়মিত খোঁজ খবর রাখছে না গোমা আগ্নেয়গিরি পর্যবেক্ষণ সংস্থা; কারণ, এই প্রকল্পটি ওয়ার্ল্ডব্যাংকের দানের টাকায় চলত এবং দুর্নীতির অভিযোগে কয়েকবছর আগে ওয়ার্ল্ডব্যাংক প্রকল্পে টাকা দেওয়া বন্ধ করে দেয়।
সূত্র: বিবিসি
এসএমডব্লিউ