আসাদের পতনে অভিনন্দন জানাল ইরানের মিত্র হামাস
প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদকে ক্ষমতাচ্যুত করে ‘‘স্বাধীনতা ও ন্যায়বিচারের আকাঙ্ক্ষা’’ অর্জন করায় সিরিয়ার জনগণকে অভিনন্দন জানিয়েছে মধ্যপ্রাচ্যে ইরানের অন্যতম ঘনিষ্ঠ মিত্র ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস। দুই দশকের বেশি সময় ধরে সিরিয়ার ক্ষমতায় থাকা আসাদের পতনের একদিন পর সোমবার হামাস এই অভিনন্দন জানিয়েছে।
গাজা উপত্যকার ক্ষমতাসীন এই গোষ্ঠী এক বিবৃতিতে বলেছে, ‘‘আমরা সিরিয়ার মহান জনগণের পাশে দৃঢ়ভাবে রয়েছি...এবং সিরিয়ার জনগণের আকাঙ্ক্ষা, স্বাধীনতা এবং রাজনৈতিক পছন্দকে সম্মান জানাই।’’
হামাস বলেছে, আসাদ-পরবর্তী সিরিয়া ফিলিস্তিনি জনগনের প্রতি সমর্থনের ক্ষেত্রে ঐতিহাসিক ও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা জারি রাখবে বলে আশা করছে তারা।
পৃথক এক বিবৃতিতে ইরান-সমর্থিত আরেক গোষ্ঠী ও হামাসের মিত্র ইসলামিক জিহাদের প্রধান জিয়াদ আল-নাখালা প্রায় একই ধরনের আশা প্রকাশ করেছেন। নাখালা বলেছেন, ‘‘ইসলামিক জিহাদ প্রত্যাশা করছে, ফিলিস্তিনি জনগণের ন্যায্য দাবির প্রতি সিরিয়ার সত্যিকারের সমর্থন থাকবে, যেমনটি সবসময় ছিল।’’
সিরিয়ার পলাতক প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদের বিরুদ্ধে ২০১১ সালে গড়ে ওঠা দেশটির সুন্নিপন্থী মুসলিমদের আন্দোলনের প্রতি প্রথমবারের মতো প্রকাশ্যে সমর্থন জানিয়েছিল হামাস। পরে ২০১২ সালে দামেস্কে নিযুক্ত নিজেদের সদরদপ্তর খালি করে সংগঠনটি; যা আসাদের ঘনিষ্ঠ মিত্র ও তাদের পৃষ্ঠপোষক ইরানকে ক্ষুব্ধ করে তুলেছিল।
হামাসের মতাদর্শগত শিকড় সুন্নি ইসলামপন্থী মুসলিম ব্রাদারহুড থেকে উদ্ভূত হওয়ায় আসাদ থেকে নিজেদের দূরে সরিয়ে নিয়েছিল সংগঠনটি। কারণ বাশার আল-আসাদ সিরিয়ার শিয়াপন্থী সংখ্যালঘু আলাউইত সম্প্রদায়ের সদস্য। ক্ষমতার জন্য হুমকি হয়ে ওঠা সুন্নি মুসলিম বিক্ষোভকারী ও বিদ্রোহীদের ওপর ব্যাপক দমন-পীড়ন চালিয়েছিলেন আসাদ।
পরে ২০২২ সালে আসাদ নেতৃত্বাধীন সিরিয়ার সরকারের সাথে সম্পর্ক পুনর্স্থাপনের সিদ্ধান্ত নেয় ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী গোষ্ঠীটি। ওই সময় দামেস্কে একটি প্রতিনিধি দল পাঠায় হামাস। এই প্রতিনিধি দলের সদস্যরা সিরিয়ার সঙ্গে সম্পর্ক মেরামতের আশায় আসাদের সঙ্গে বৈঠকও করেছিলেন।
লেবাননের সশস্ত্র গোষ্ঠী হিজবুল্লাহ ও ইসরায়েলের বিরোধিতাকারী ফিলিস্তিনি সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোকে সঙ্গে নিয়ে একটি ‘‘প্রতিরোধ অক্ষ’’ গঠন করে আসাদ নেতৃত্বাধীন সিরিয়া এবং ইরান।
আসাদের পতনে হামাসের এই ইতিবাচক প্রতিক্রিয়া শিয়াপন্থী হিজবুল্লাহর অবস্থানের বিপরীত। লেবাননের এই গোষ্ঠীটি বছরের পর বছর ধরে যুদ্ধের মাধ্যমে আসাদকে ক্ষমতায় রাখতে বড় ভূমিকা পালন করেছিল। এছাড়া দীর্ঘদিন ধরে হিজবুল্লাহকে অস্ত্র সরবরাহের জন্য ইরানের গুরুত্বপূর্ণ বাহক হিসেবে কাজ করেছিল আসাদের সিরিয়া।
সোমবার হিজবুল্লাহর জ্যেষ্ঠ এক রাজনীতিক সিরিয়ার পরিবর্তিত পরিস্থিতিকে অত্যন্ত বিপজ্জনক হিসাবে আখ্যা দিয়েছেন।
সূত্র: রয়টার্স।
এসএস