বাশারের উৎখাতে ব্যাপক খুশি, কৃতিত্ব দাবি নেতানিয়াহুর
সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদ ক্ষমতাচ্যুত হওয়ায় উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছেন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু। সেই সঙ্গে তিনি বলেছেন, বাশারের পতন হিজবুল্লাহ ও ইরানের বিরুদ্ধে ইসরায়েলি বাহিনীর অভিযানের ‘সরাসরি ফলাফল’।
মাত্র ১২ দিনের অভিযানে রোববার সিরিয়ার রাজধানী দামেস্কের দখল নিয়েছে দেশটির সরকারবিরোধী বিদ্রোহীরা। সিরিয়ার সশস্ত্র রাজনৈতিক গোষ্ঠী হায়াত তাহরির আল শাম (এইচটিএস) এ অভিযানের নেতৃত্ব দিয়েছে।
রোববার সকালে ইসরায়েল-সিরিয়ার সীমান্ত সফরে গিয়েছিলেন নেতানিয়াহু। সেখান থেকে পোস্ট করা এক ভিডিওবার্তায় বাশার আল আসাদের দেশত্যাগের সংবাদে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করে নেতানিয়াহু বলেন, “আজকের দিনটি মধ্যপ্রাচ্যের ইতিহাসের একটি দিন। ইরানের যে শয়তানের অক্ষ, তার কেন্দ্রে থাকা বাশার আল আসাদ এবং তার নেতৃত্বাধীন সরকারের পতন হয়েছে।”
“ইরান এবং হিজবুল্লাহর বিরুদ্ধে আমরা যে অভিযান পরিচালনা করেছি, তার সরাসরি ফলাফল বাশার আল আসাদের পতন। কারণ এরাই তার নেতৃত্বাধীন সরকারের মূল সমর্থক ছিল।”
“এবং এ বিজয় শুধু এখানেই থেমে থাকবে না। মধ্যপ্রাচ্যের যেসব দেশের জনগণ দমনমূলক এবং নিষ্ঠুর সরকারের হাত থেকে পরিত্রাণের পথ খুঁজছেন, তাদের মধ্যে চেইন রিঅ্যাকশনের মতো এটি ছড়িয়ে পড়বে।”
বাশার আল আসাদের পতন মূলত ইরানের জন্য একটি বিশাল আঘাত। এখন তাদের লেবানন অঞ্চলে প্রভাব বিস্তারের পথ আর থাকবে না। লেবাননে নিজেদের গুরুত্বপূর্ণ মিত্র হিজবুল্লাহর কাছে স্থলপথে পৌঁছানোর সুযোগ পাবে না ইরান।
এতে হামাসের মতো ফিলিস্তিনি গোষ্ঠীগুলোও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বাশারের নেতৃত্বাধীন সরকার নিজেদের প্রতিরোধের অক্ষের (অ্যাক্সিস অব রেজিস্ট্যান্স) অংশ হিসেবে উপস্থাপন করত।
এতে সিরিয়ার দিক থেকে ফিলিস্তিনি গোষ্ঠীগুলো সমর্থন পেত। এখন আর তা তারা পাবে না।
ফলে এ ঘটনায় স্বাভাবিকভাবেই প্রবলভাবে খুশি ইরানের চিরশত্রু ইসরায়েল। নেতানিয়াহুর ভিডিওবার্তায় তা প্রকাশিতও হয়েছে। প্রথম থেকেই ইসরায়েল সিরিয়ার বিদ্রোহীদের সহায়তা দিয়ে আসছিল।
ইসরায়েলের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন বিদ্রোহীরাও। চলতি সপ্তাহে ইসরায়েলের সংবাদমাধ্যম কান ব্রডকাস্টারকে সাক্ষাৎকার দিয়েছিলেন বিদ্রোহীদের এক মুখপাত্র। সেখানে ইসরায়েলের ভূয়সী প্রশংসা করে ওই মুখপাত্র বলেছিলেন, “আমরা ইসরায়েলকে ভালবাসি এবং আমরা কখনও দেশটিকে শত্রু মনে করিনি। কারণ আমরা জানি যে যারা ইসরায়েলকে শত্রু মনে করে না, ইসরায়েলও তাদেরকে শত্রু মনে করে না।”
“আমরা আপনাদের ঘৃণা করি না, বরং ভালবাসি এবং অনেক ভালবাসি”, কান ব্রডকাস্টারকে বলেন ওই মুখপাত্র।
এদিকে রোববার দামেস্কের পতনের পর স্ত্রী আসমা আসাদ এবং তিন সন্তানকে নিয়ে মস্কোর উদ্দেশ্য উড়াল দেন বাশার আল আসাদ। রাশিয়ার প্রেসিডেন্টের দপ্তর ক্রেমলিন থেকে বলা হয়েছে, বাশার আল আসাদ এবং তার পরিবারের সদস্যদের রাজনৈতিক আশ্রয় প্রদান করা হয়েছে।
সূত্র : আরটি, টাইমস অব ইসরায়েল
এসএমডব্লিউ