আকস্মিক অভিযান চালিয়ে সিরিয়ার আলেপ্পো শহরে ঢুকল সুন্নি বিদ্রোহীরা
সিরিয়ার দ্বিতীয় বৃহৎ শহর আলেপ্পোতে প্রবেশ করেছে দেশটির সরকার বিরোধী সশস্ত্র বিদ্রোহীরা। শুক্রবার (২৯ নভেম্বর) এই তথ্য জানিয়েছে বিদ্রোহীদের গঠিত নতুন জোট ‘দ্য মিলিটারি অপারেশন্স কমান্ড’।
মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএন জানিয়েছে, ২০১৬ সালে বিদ্রোহীদের আলেপ্পোকে থেকে সরিয়ে দেয় সিরিয়ান সেনাবাহিনী। দীর্ঘ ৮ বছর পর আবার আজ আবারও সেখানে প্রবেশ করেছে তারা।
দ্য মিলিটারি অপারেশন্স কমান্ড বিবৃতিতে বলেছে, “আমাদের সৈন্যরা আলেপ্পো শহরে প্রবেশ শুরু করেছে।”
এর আগে সিরিয়ান সেনাবাহিনী জানিয়েছিল , তারা ‘জঙ্গি সংগঠনের বড় হামলা’ প্রতিহত করছে। সেনাবাহিনীর দাবি, সশস্ত্র গোষ্ঠীর সদস্যরা ভারী অস্ত্রসস্ত্রে সজ্জিত। এছাড়া তাদের কাছে ড্রোনও আছে।
দ্য মিলিটারি অপারেশন্স কমান্ড এর আগে জানিয়েছিল তারা আলেপ্পোর উপকণ্ঠে সিরিয়ান সরকারের সামরিক বৈজ্ঞানিক গবেষণা কেন্দ্র দখল করেছে। এটি দখলে সরকারি বাহিনী ও ইরানি সশস্ত্র গোষ্ঠীর সঙ্গে তীব্র লড়াই হয়েছে বলেও দাবি করে তারা।
শুক্রবার সকালে আলেপ্পো বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রাবাস লক্ষ্য করে কামান হামলার ঘটনা ঘটে। দেশটির সরকার জানিয়েছে, এতে চারজনের মৃত্যু হয়েছে। তবে বিদ্রোহীরা চার শিক্ষার্থীর মৃত্যুকে ‘মিথ্যা তথ্য’ হিসেবে দাবি করেছে। বিদ্রোহীদের মুখপাত্র বলেছেন, “এটি সরকারের ভিত্তিহীন মিথ্যা।”
গত বুধবার সিরিয়ার সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে বড় ধরনের অভিযান শুরু করে বিদ্রোহীরা। তারা প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদকে ক্ষমতাচ্যুত করতে চায়। প্রেসিডেন্ট বাশার ২০০০ সাল থেকে সিরিয়ার ক্ষমতায় রয়েছেন।
২০১১ সালে আরব বসন্ত শুরু হলে এর ছোয়া পড়ে সিরিয়াতেও। ওই সময় সুন্নি বিদ্রোহীরা শিয়া মুসলিম পেসিডেন্ট আসাদকে সরিয়ে দেওয়ার চেস্টা করে। কিন্তু আসাদ সরকার বিরোধীদের দমনে কঠোর অবস্থান গ্রহণ করে। এতে দেশটিতে শুরু হয় গৃহযুদ্ধ।
শিয়া মুসলিম বাসার আল-আসাদকে রক্ষায় সিরিয়ায় নিজেদের সেনাদের পাঠায় রাশিয়া। এছাড়া তাকে সহায়তায় কাজ করছে ইরানপন্থি সশস্ত্র গোষ্ঠীর সদস্যরা। অপরদিকে সুন্নি বিদ্রোহীদের সহায়তা করা শুরু করে তুরস্ক, যুক্তরাষ্ট্র ও সৌদিসহ অন্যান্য দেশ।
আলেপ্পো বিশ্ববিদ্যালয়ের এক কর্মকর্তা নাম গোপন রাখার শর্তে সিএনএনকে জানিয়েছেন, ছাত্রাবাসের দ্বিতীয় তলায় একটি গোলা আঘাত হেনেছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, ছাত্ররা জীবনরক্ষায় দৌড়ে পালাচ্ছেন।
এদিকে ইরান অভিযোগ করেছে, লেবাননে হিজবুল্লাহর বিরুদ্ধে পরাজয় হওয়ার পর ইসরায়েল ও যুক্তরাষ্ট্র মিলে সিরিয়াকে অস্থিতিশীল করা শুরু করেছে। এর অংশ হিসেবে বিদ্রোহীদের সহায়তা করছে তারা।
সূত্র: সিএনএন
এমটিআই