পারমাণবিক যুদ্ধের বিষয়ে সতর্ক করলেন কিম জং উন
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে কোরীয় উপদ্বীপে উত্তেজনা ও উসকানি বৃদ্ধির অভিযোগ করেছেন উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং উন। তিনি বলেছেন, কোরীয় উপদ্বীপ এর আগে কখনই পারমাণবিক যুদ্ধের বড় ঝুঁকির সম্মুখীন হয়নি। শুক্রবার উত্তর কোরিয়ার রাষ্ট্রায়ত্ত সংবাদমাধ্যম কেসিএনএর এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানানো হয়েছে।
পিয়ংইয়ং ও মস্কোর ক্রমবর্ধমান ঘনিষ্ঠ সামরিক সহযোগিতা এবং ইউক্রেন যুদ্ধে রাশিয়ার সমর্থনে ১০ হাজারের বেশি সৈন্য পাঠানো নিয়ে পিয়ংইয়ংয়ের আন্তর্জাতিক সমালোচনার প্রতিক্রিয়ায় এই মন্তব্য করেছেন কিম জং উন।
কেসিএনএ বলেছে, রাজধানী পিয়ংইয়ংয়ে এক সামরিক প্রদর্শনীতে অংশ নিয়ে কিম জং উন বলেছেন, ওয়াশিংটনের সাথে পূর্ববর্তী আলোচনা উত্তর কোরিয়ার প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের ‘‘আক্রমণাত্মক এবং বৈরী’’ নীতিকে তুলে ধরেছে।
উত্তর কোরিয়ার এই নেতা বলেছেন, কোরীয় উপদ্বীপে যুদ্ধরত পক্ষগুলো কখনই এত বিপজ্জনক এবং তীব্র সংঘাতের মুখোমুখি হয়নি। এই পরিস্থিতি সবচেয়ে ধ্বংসাত্মক থার্মোনিউক্লিয়ার যুদ্ধে পরিণত হতে পারে।
তিনি বলেন, ‘‘আমরা ইতিমধ্যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাথে আলোচনার জন্য যতটা সম্ভব অগ্রসর হয়েছি। কিন্তু সেই আলোচনায় উত্তর কোরিয়ার প্রতি ওয়াশিংটনের আক্রমণাত্মক ও বৈরী নীতির কখনই পরিবর্তন ঘটতে পারে না বলে প্রমাণিত হয়েছে।’’
উত্তর কোরিয়ার রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যমে গত ৫ নভেম্বরের নির্বাচনে ডোনাল্ড ট্রাম্পের পুনঃনির্বাচিত হওয়ার বিষয়ে এখন পর্যন্ত কোনও তথ্য উল্লেখ করা হয়নি। যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক এই প্রেসিডেন্ট ২০১৮ এবং ২০১৯ সালে তার প্রথম মেয়াদে সিঙ্গাপুর, হ্যানয় এবং কোরীয় সীমান্তে কিমের সঙ্গে নজিরবিহীন তিনটি বৈঠক করেছিলেন।
কিন্তু উত্তর কোরিয়াকে পারমাণবিক অস্ত্র পরিত্যাগ করার জন্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের আহ্বান এবং নিষেধাজ্ঞা প্রশমনে কিমের দাবির মধ্যে ব্যবধান থাকায় দুই নেতার কূটনীতির সুনির্দিষ্ট কোনও ফলাফল দেখা যায়নি।
দীর্ঘদিন ধরে কিমের সঙ্গে নিজের সম্পর্কের কথা বলে আসছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। গত মাসে তিনি বলেছিলেন, দুই দেশের মাঝে পারমাণবিক যুদ্ধের আশঙ্কা ছিল; যে যুদ্ধে লাখ লাখ মানুষের প্রাণহানি ঘটতো। কিন্তু উত্তর কোরিয়ার নেতার সঙ্গে সম্পর্ক থাকায় সেই যুদ্ধ বন্ধ করতে পেরেছিলেন বলে মন্তব্য করেন ট্রাম্প।
সিউলের কোরিয়া ইনস্টিটিউট ফর ন্যাশনাল ইউনিফিকেশনের রিসার্চ ফেলো হং মিন বলেন, ট্রাম্পের দ্বিতীয় মেয়াদের আগে কূটনীতির দরজা খোলা রেখে উত্তরের পারমাণবিক ক্ষমতার ওপর জোর দেওয়ার চেষ্টা করতে পারেন কিম। নতুন করে যে কোনও ধরনের আলোচনা পুনরায় শুরু করা এবং মার্কিন বৈরী মনোভাবের পরিবর্তনের আহ্বান জানানোর আগে ট্রাম্পকে তার ‘‘সহাবস্থানের ইচ্ছা’’ দেখানো উচিত; কিম হয়তো এমন ইঙ্গিত দিতে চাচ্ছেন।
সূত্র: রয়টার্স।
এসএস