পরমাণু অস্ত্রের ব্যবহার নিয়ে ‘ভাঁওতা’ দিচ্ছেন না পুতিন
ইউক্রেন যুদ্ধে পরমাণু অস্ত্রের সম্ভাব্য ব্যবহার নিয়ে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন কোনো ‘ভাঁওতাবাজি’ করছেন না বলে মন্তব্য করেছেন সার্বিয়ার প্রেসিডেন্ট আলেক্সান্দার ভুকিক। তিনি আরও বলেছেন, যারা পুতিনের সতর্কবার্তাকে পাত্তা দিচ্ছেন না— তারা হয় ‘পাগল’ নয়তো পুতিন সম্পর্কে ‘অজ্ঞ’।
বৃহস্পতিবার রাজধানী বেলগ্রেডে এক অনুষ্ঠানে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির জেলেনস্কিকে উদ্দেশ্য করে ভুকিক বলেন, “যদি ভেবে থাকেন যে আপনার কাছে যত পশ্চিমা অস্ত্র রয়েছে, সেসব দিয়ে রুশ ভূখণ্ডে হামলা চালাবেন এবং পুতিন যে অস্ত্র ব্যবহারের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন— তা ব্যবহার করা থেকে তিনি বিরত থাকবেন, তাহলে হয় আপনি তাকে জানেন না, নয়তো আপনি অস্বাভাবিক।”
গত বুধবার ইউক্রেনের দিনিপ্রো শহরকে লক্ষ্য করে একটি আন্তঃমহাদেশীয় ক্ষেপণাস্ত্র (আইসিবিএম) ছুড়েছে রুশ সেনাাবহিনী। নিজের বক্তব্যে এ ঘটনা উল্লেখ করে সার্বিয়ার প্রেসিডেন্ট বলেছেন, “এই পৃথিবী ধ্বংসের দিকে যাচ্ছে। এখানে কেউ কথা শোনে না, কেউ শান্তির কথা বলে না। আজকে আইসিবিএম ছোড়া হচ্ছে, কাল হয়তো তার চেয়েও বেশি শক্তিশালী অস্ত্র ছোড়া হবে।”
প্রসঙ্গত, ক্রিমিয়া উপদ্বীপকে রুশ ভূখণ্ড হিসেবে স্বীকৃতি প্রদান না করা এবং যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন সামরিক জোট ন্যাটোর সদস্যপদের জন্য তদবিরের জেরে কয়েক বছর টানাপোড়েনের পর ২০২২ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে সামরিক অভিযান শুরু করে রুশ বাহিনী, যা এখনও চলছে। প্রেসিডেন্ট পুতিন নিজে এই অভিযানের নির্দেশ দিয়েছিলেন। এ অভিযানে প্রায় তিন বছরে নিহত হয়েছেন উভয়পক্ষের হাজার হাজার সামরিক-বেসামরিক মানুষ।
যুদ্ধের ১০০০তম তিন দিন পূর্তি হয়েছে গত ১৯ নভেম্বর। এই দিনই রুশ বাহিনীকে পরমাণু অস্ত্র ব্যবহারের অনুমতি দেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। গত প্রায় তিন বছর ধরে চলা এই যুদ্ধে এই প্রথম এমন অনুমতি দিয়েছেন তিনি।
পুতিনের এ পদক্ষেপে স্বাভাবিকভাবেই আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় উদ্বেগ বোধ করছে। কারণ, এই মুহূর্তে ইউক্রেনে পরমাণু অস্ত্রের ব্যবহার মানে হলো তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ শুরু হয়ে যাওয়া।
বৃহস্পতিবারের অনুষ্ঠানে সার্বিয়ার প্রেসিডেন্ট বলেন, পুতিন পরমাণু অস্ত্রকে ‘শেষ পন্থা’ হিসেবে দেখন এবং যদি রাশিয়ার নিরাপত্তা সরাসরি হুমকির মধ্যে পড়ে, সেক্ষেত্রে ‘শেষ পন্থা’ ব্যবহারে তিনি ইতঃস্তত করবেন না।
“যদি মস্কোর নিরাপত্তা কিংবা তার সেনাবাহিনী সত্যিকারের ঝুঁকিতে পড়ে এবং যদি আর কোনো বিকল্প উপস্থিত না থাকে, তাহলে পুতিন পরমাণু অস্ত্র ব্যবহার করবেন। এটা কোনা ভাঁওতাবাজি নয়, বরং এটাই সত্য এবং সেক্ষেত্রে আমরা ব্যাপক ঝুঁকিতে আছি।”