বায়ু দূষণ: সাত সকালে ধোঁয়াশায় আচ্ছন্ন দিল্লি, ব্যাহত ফ্লাইট চলাচল
আরও কমে গেছে ভারতের রাজধানী দিল্লির বাতাসের গুণগত মান। টানা দ্বিতীয় দিনের মতো সকালে ঘন ধোঁয়াশায় ঢেকে গেছে প্রতিবেশী দেশটির এই জাতীয় রাজধানী। কম দৃশ্যমানতার কারণে ব্যাহত হয়েছে ফ্লাইট চলাচলও।
এছাড়া দিল্লিতে উত্তরোত্তর দূষণ বৃদ্ধি নিয়ে চিন্তিত সেখানকার প্রশাসন। বৃহস্পতিবার (১৪ নভেম্বর) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি।
ভারতের সেন্ট্রাল পলিউশন কন্ট্রোল বোর্ডের (সিপিসিবি) তথ্য অনুসারে, বৃহস্পতিবার সকাল ৬টায় দিল্লিতে বায়ুর গুণমান সূচক (একিউআই) রেকর্ড করা হয়েছে ৪৩২। যার অর্থ দিল্লির বাতাস “গুরুতর” অবস্থায় রয়েছে।
ভারী ধোঁয়াশার জেরে কম দৃশ্যমানতার কারণে দিল্লি থেকে ও বিভিন্ন শহর থেকে দিল্লি অভিমুখে ফ্লাইট চলাচলও ব্যাহত হচ্ছে। আর ভোর সাড়ে ৫টায় পাঞ্জাবের অমৃতসর এবং পাঠানখোট বিমানবন্দর দৃশ্যমানতা ছিল শূন্য।
মূলত একিউআই স্কোর ১০১ থেকে ২০০ হলে সংবেদনশীল গোষ্ঠীর জন্য ‘অস্বাস্থ্যকর’ ধরা হয়। অন্যদিকে ২০১ থেকে ৩০০ একিউআই স্কোরকে ‘খুব অস্বাস্থ্যকর’ বলে মনে করা হয় এবং ৩০১ থেকে ৪০০ একিউআই স্কোরকে ‘বিপজ্জনক’ হিসেবে বিবেচনা করা হয়, যা বাসিন্দাদের জন্য গুরুতর স্বাস্থ্য ঝুঁকি তৈরি করে।
এদিকে বায়ুর ধোঁয়াশাময় পরিস্থিতিতে যাত্রীদের জন্য ভ্রমণ সংক্রান্ত পরামর্শ জারি করেছে আকাশপথে সেবাদানকারী ভারতীয় সংস্থা ইন্ডিগো। সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম এক্সে দেওয়া এক পোস্টে সংস্থাটি যাত্রীদের তাদের ফ্লাইটের অবস্থা সম্পর্কে আপডেট তথ্যের দিকে নজর রাখার অনুরোধ করেছে। “শীতের কুয়াশার” কারণে কিছু ফ্লাইট বিলম্বিত হতে পারে বলেও এতে জানানো হয়েছে।
মৌসম ভবনের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, বুধবার সকালে দিল্লির বাতাসের গুণগত মান (এয়ার কোয়ালিটি ইনডেক্স বা একিউআই) ছিল ৩৭০, যা ‘খুব খারাপ’ পর্যায়ে পড়ে। আর মঙ্গলবার একিউআই ছিল ৩৬১। সেই তুলনায় বৃহস্পতিবার বাতাসের গুণগত মানের আরও অবনতি হয়েছে।
আরও পড়ুন
এর আগে গত মঙ্গলবার রাতে পাঞ্জাবের অমৃতসর থেকে দিল্লিগামী তিনটি ফ্লাইট বাতিল করতে হয়েছিল। এছাড়া বেশ কয়েকটি ফ্লাইটের সময়সূচিও পরিবর্তন হয়ে যায়। এমনকি, ধোঁয়াশার কারণে উপরাষ্ট্রপতি জগদীপ ধনখড়ের ফ্লাইটও লুধিয়ানায় অবতরণ করতে পারেনি। শেষপর্যন্ত তার বিমান অমৃতসরে অবতরণ করে।
ধোঁয়াশায় ঢেকে গেছে দিল্লি-মীরাট এক্সপ্রেসওয়েও। যার জেরে ব্যাহত হয়েছে যান চলাচলও। কোথাও কোথাও দৃশ্যমানতা শূন্যে নেমে এসেছে। রাস্তায় চলাচলের জন্য ‘ফগ লাইট’-এর সাহায্য নিতে হচ্ছে গাড়ি চালকদের।
মূলত গত নভেম্বরের মাসের শুরু থেকেই দিল্লির বাতাসের গুণগত মান আরও খারাপ হতে শুরু করে। গত মাসের শেষে দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অতিশী এবং পরিবেশমন্ত্রী গোপাল রাই দূষণ নিয়ে উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক করেন। দূষণ ঠেকাতে ৯৯টি দলও গঠন করা হয়।
এছাড়া ২০০টি ‘অ্যান্টি স্মগ গান’ মোতায়েন করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। দিল্লি পৌরসভার পাশাপাশি দূষণ রোধে কাজ শুরু করেছে এনসিআরটিসি এবং দিল্লি মেট্রোও।
টিএম