প্রথমবার প্রেসিডেন্ট হয়ে ফিলিস্তিনের বিপক্ষে যা করেছিলেন ট্রাম্প
ফের যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হওয়ার পরই ডোনাল্ড ট্রাম্পকে শুভেচ্ছা জানানো শুরু করে দখলদার ইসরায়েলের রাজনীতিবিদরা। যদিও চলমান গাজা যুদ্ধে ইসরায়েলকে ১৭ বিলিয়নের বেশি ডলার সহায়তা দিয়েছে বাইডেন-হ্যারিস প্রশাসন। তা সত্ত্বেও ট্রাম্পের বিরুদ্ধে কমালা হ্যারিসের পরাজয়কে রীতিমত ‘উদযাপন’ করেছে ইসরায়েলিরা।
কারণ ট্রাম্প হলেন ইতিহাসের সবচেয়ে বড় ইসরায়েলপন্থি মার্কিন প্রেসিডেন্ট। ট্রাম্প নিজেই এমন দাবি করেছেন।
ট্রাম্প এর আগে ২০১৬ সালে প্রথমবার প্রেসিডেন্ট হন। সেই সময় ইসরায়েলের পক্ষ হয়ে ফিলিস্তিনের বিরুদ্ধে অনেক কাজ করেছেন তিনি।
তার প্রথম শাসনামলে ফিলিস্তিনের অধিকৃত পশ্চিমতীরে রেকর্ড পরিমাণ জমি দখল করেছিল ইসরায়েল। অবৈধভাবে ফিলিস্তিনি ভূখণ্ড দখল করলেও ট্রাম্প এবং তার প্রশাসন এ ব্যাপারে কিছু করেনি বলেনি।
এছাড়া ২০১৮ সালে জেরুজালেমকে ইসরায়েলের রাজধানী হিসেবে স্বীকৃতি দেন ট্রাম্প। সে বছর জেরুজালেমে যুক্তরাষ্ট্র তাদের দূতাবাস খোলে। মার্কিনিদের এমন সিদ্ধান্তে বিক্ষোভে ফেটে পড়েন সাধারণ ফিলিস্তিনিরা। ওই সময় গাজা সীমান্তে ৫৮ ফিলিস্তিনিকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়। জেরুজালেমে মার্কিন দূতাবাস খুলতে সেখানে উপস্থিত হন ট্রাম্পের মেয়ে ইভানকা ট্রাম্প। ইভানকা যখন হাসিমুখে দূতাবাসের উদ্বোধন করছিলেন তখন নিজেদের রক্ত দিচ্ছিল ফিলিস্তিনিরা।
যুক্তরাষ্ট্র জেরুজালেমকে ইসরায়েলের রাজধানীর স্বীকৃতি দিলেও পূর্ব জেরুজালেমের বেশিরভাগ বাসিন্দা ফিলিস্তিনি এবং স্বাধীন ফিলিস্তিনের রাজধানী জেরুজালেম থাকবে এমন স্বপ্ন দেখেন তারা।
এছাড়া ২০১৮ সালে দখলকৃত গোলান হাইটকে ইসরায়েলের অংশ হিসেবে স্বীকৃতি দেন ট্রাম্প। যা আন্তর্জাতিক আইনে অবৈধ।
প্রথমবার প্রেসিডেন্ট থাকা অবস্থায় ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্রকে জাতিসংঘের মানবিধার কাউন্সিল থেকে প্রত্যাহার করে নেন এবং ফিলিস্তিনিদের জন্য বরাদ্দকৃত মার্কিন সহায়তা বন্ধ করে দেন।
২০২০ সালে ট্রাম্প কথিত ‘শান্তি পরিকল্পনা’ প্রস্তাব করেন। এতে জেরুজালেমের পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ ইসরায়েলের হাতে থাকা, অবৈধ বসতিকে স্বীকৃতি দেওয়া এবং ফিলিস্তিনি সীমান্তগুলোতে ইসরায়েলের নিয়ন্ত্রণ থাকার কথা বলা হয়। এই পরিকল্পনায় তিনি এমন এক ফিলিস্তিন রাষ্ট্র গঠনের প্রস্তাব দেন যেখানে এক অংশের সঙ্গে আরেক অংশের কোনো সংযোগ নেই। অর্থাৎ ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র ভূখণ্ড নিয়ে ফিলিস্তিনি গঠিত হবে। আবার এই স্বাধীন ফিলিস্তিনের নিয়ন্ত্রণ থাকবে ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর হাতে।
এছাড়া ইসরায়েলের সঙ্গে আরব দেশগুলোর কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপনে বড় ভূমিকা রাখেন ট্রাম্প। এসব তিনি করেছেন স্বাধীন ফিলিস্তিন গঠন ছাড়াই। যা যুক্তরাষ্ট্রের নীতির স্ববিরোধীতা।
ট্রাম্পের জয় নিশ্চিত হওয়ার পর দখলদার ইসরায়েলের জাতীয় নিরাপত্তামন্ত্রী ইতামার বেন গিভির বলেন এখন ইসরায়েলের ‘পূর্ণ সার্বভৌমতা ও পূর্ণ বিজয়ের সময়’।
বার্তাসংস্থা রয়টার্সকে গাজার খান ইউনিসের এক বাসিন্দা বলেছেন, ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট হওয়ায় তারা আতঙ্কিত। তিনি শঙ্কা প্রকাশ করে বলেন, এতদিন ধরে গাজায় ইসরায়েল যে বর্বরতা চালিয়েছে ট্রাম্পেরে শাসনামলে তা ছাড়িয়ে যেতে পারে।
সূত্র: আলজাজিরা
এমটিআই