১ লাখ ৬০ হাজার পুরুষকে সেনাবাহিনীতে যোগ দেওয়ার নির্দেশ ইউক্রেনের
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির জেলেনস্কির নেতৃত্বাধীন প্রশাসন দেশের ১ লাখ ৬০ হাজার পুরুষ নাগরিককে সেনাবাহিনীতে যোগ দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে। আগামী ৩ মাসের মধ্যে শেষ হবে তাদের নিয়োগ প্রক্রিয়া।
ইউক্রেনের জাতীয় নিরাপত্তা ও প্রতিরক্ষা পরিষদের সদস্য আলেক্সান্দার লিৎভিনেঙ্কো বুধবার রাজধানী কিয়েভে সাংবাদিকদের সঙ্গে এক মত বিনিময় সভায় এ প্রসঙ্গে বলেন, “আমাদের সেনাবাহিনীর বিভিন্ন ইউনিট ব্যাপকমাত্রায় জনবল সংকটে ভুগছে। যদি আগামী ৩ মাসের মধ্যে ১ লাখ ৬০ হাজার সেনা যোগ দেয়, তাহলে এই সংকটের ৮৫ শতাংশ সমাধান হবে বলে আমরা আশা করছি।”
অবশ্য এই প্রথম যে ইউক্রেন দেশের নাগরিকদের জন্য সেনাবাহিনীতে প্রবেশ করা বাধ্যতামূলক কলল— এমন নয়। রাশিয়ার সঙ্গে চলমান যুদ্ধের বিভিন্ন সময়ে বেসামরিক নাগরিকদের সেনাবাহিনীতে যোগ দিতে বাধ্য করেছে কিয়েভ। বুধবার ইউক্রেনের আইনপ্রণেতা অ্যালেক্সেই গনচারেঙ্কো বলেন, “২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে যুদ্ধ শুরুর পর থেকে এ পর্যন্ত মোট ১০ লাখ ৫ হাজার ইউক্রেনীয় নারী-পুরুষকে সেনাবাহিনীতে যোগ দিতে বাধ্য করা হয়েছে।”
২০১৫ সালে সাক্ষরিত মিনস্ক চুক্তির শর্ত লঙ্ঘণ, ক্রিমিয়াকে রুশ ভূখণ্ড হিসেবে স্বীকৃতি না দেওয়া এবং যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন সামরিক জোট ন্যাটোর সদস্যপদের জন্য ২০২২ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে সামরিক অভিযান শুরু করে রুশ বাহিনী, যা এখনও চলছে। রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন এ অভিযানের নির্দেশ দিয়েছিলেন।
ইউক্রেনের প্রতিরক্ষা বাহিনীর তথ্য অনুযায়ী, যুদ্ধের শুরুর দিকে ইউক্রেনের সেনাবাহিনীতে সক্রিয় সদস্যের সংখ্যা ছিল প্রায় আড়াই লাখ। কিন্তু সেনা সদস্যরা ক্রমাগত নিহত ও আহত অল্প সময়ের মধ্যেই জনবল সংকটে পড়ে ইউক্রেনীয় বাহিনী। এ কারণে এর আগে কয়েক বার বেসামরিক নাগরিকদের সেনাবাহিনীতে বাধ্যতামূলক করে নির্দেশ জারি করেছে কিয়েভ।
যুদ্ধের শুরু থেকে এ পর্যন্ত ইউক্রেনীয় বাহিনীর কত সংখ্যক সেনা নিহত হয়েছেন, সে সম্পর্কিত স্পষ্ট সঠিক তথ্য কখনও প্রকাশ করেনি ইউক্রেনের সেনাবাহিনী। জেলেনস্কি অবশ্য কয়েক মাস আগে বলেছিলেন, যুদ্ধে ৩১ হাজার ইউক্রেনীয় সেনা নিহত হয়েছেন, কিন্তু তার এই বক্তব্য দেশজুড়ে হাস্যরসের সৃষ্টি করেছিল। তারপর থেকে নিহত সেনাসদস্যদের সংখ্যা নিয়ে আর কোনো মন্তব্য করতে দেখা যায়নি জেলেনস্কিকে।
এদিকে প্রায় তিন বছরের যুদ্ধে দোনেৎস্ক, লুহানস্ক, ঝাপোরিজ্জিয়া এবং খেরসন— এই চার প্রদেশের দখল করেছে রাশিয়া। মস্কোর প্রস্তাব— কিয়েভ যদি ক্রিমিয়াসহ এই চার প্রদেশকে রুশ ভূখণ্ড হিসেবে স্বীকৃতি দেয়, তাহলে ইউক্রেনে সামরিক অভিয়ানের সমাপ্তি ঘোষণা করা হবে। অন্যদিকে কিয়েভের বক্তব্য, রাশিয়া যদি অধিকৃত অঞ্চলগুলো থেকে সেনা প্রত্যাহার করে নেয়, শুধু তাহলেই শান্তি সংলাপে বসবে ইউক্রেন।
সূত্র : আরটি
এসএমডব্লিউ