হাসান নাসরাল্লাহকে হত্যার ঘটনায় প্রতিশোধের হুংকার ইরানের
লেবাননের শক্তিশালী সশস্ত্র গোষ্ঠী হিজবুল্লাহর প্রধান হাসান নাসরাল্লাহ নিহত হয়েছেন। ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী বলেছে, গত শুক্রবার রাজধানী বৈরুতে এক হামলায় নাসরাল্লাহকে হত্যা করা হয়।
এছাড়া নাসরাল্লাহর হত্যাকাণ্ডের কথা স্বীকার করে লড়াই চালিয়ে যাওয়া ঘোষণা দিয়েছে হিজবুল্লাহ। তবে এই ঘটনায় প্রতিশোধের হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছে ইরান। একইসঙ্গে দেশটি পাঁচদিনের শোকও ঘোষণা করেছে।
রোববার (২৯ সেপ্টেম্বর) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা।
ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনি বলেছেন, হিজবুল্লাহ নেতা হাসান নাসারুল্লাহর মৃত্যু ‘প্রতিশোধহীন’ যাবে না। হত্যাকাণ্ডের একদিন পর তিনি এই হুঁশিয়ারি দেন। একইসাথে তিনি পাঁচ দিনের শোক ঘোষণা করেছেন।
আয়াতুল্লাহ আলী খামেনি এই হত্যাকাণ্ডকে “মহান নাসরাল্লাহর শাহাদাত” বলে অভিহিত করেছেন। এছাড়া তাকে “একটি পথ এবং চিন্তাধারা” হিসাবেও বর্ণনা করেছেন যা অব্যাহত থাকবে।
ইরান একইসাথে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের সভা জরুরি ভিত্তিতে ডাকার আহ্বান জানিয়েছে। অন্যদিকে, ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু নাসারুল্লাহর মৃত্যুকে ‘ঐতিহাসিক মোড় ঘুরানো ঘটনা’ হিসেবে উল্লেখ করেছেন।
আর যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এই হত্যাকাণ্ডকে ‘ন্যায়বিচারমূলক পদক্ষেপ’ হিসেবে বর্ণনা করেছেন।
ইরানি গণমাধ্যম জানিয়েছে, শুক্রবার বৈরুতে হওয়া ওই ইসরায়েলি হামলায় ইরানের বিপ্লবী গার্ডের একজন জেনারেলও নিহত হয়েছেন।
ইসরায়েলের সামরিক বাহিনী বলেছে, নাসরুল্লাহর হাতে “হাজার হাজার মানুষের রক্ত ছিল...” এবং “আরও আসন্ন হামলার নির্দেশ” দেওয়ার সময় তাকে হামলার লক্ষ্যবস্তু করা হয়।
অবশ্য সাম্প্রতিক এই হত্যাকাণ্ড হিজবুল্লাহর মতো ইরানের জন্যও একটি বড় ধাক্কা। দেশটি ইতোমধ্যেই পাঁচ দিনের শোক ঘোষণা করেছে। এছাড়া দেশটি তাদের নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনিকেও সতর্কতামূলক পদক্ষেপ হিসেবে গোপন জায়গায় সরিয়ে নিয়েছে।
তেহরানের গেস্ট হাউজে হামাস প্রধান ইসমাইল হানিয়ার অপমানজনক হত্যাকাণ্ডের প্রতিশোধ ইরান এখনও নিতে পারেনি। যদিও পুরো মধ্যপ্রাচ্য জুড়ে ইরানের বেশ কিছু সশস্ত্র সহযোগী গোষ্ঠী আছে। যেটি তথাকথিত ‘প্রতিরোধের অক্ষ’ নামে পরিচিত।
আরও পড়ুন
হিজবুল্লাহর মতো ইয়েমেনে আছে হুথি এবং ইরাক আর সিরিয়ায় আছে কয়েকটি গোষ্ঠী। ইরান এসব গোষ্ঠীকে ইসরায়েলে এবং ওই অঞ্চলে যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থানে হামলা করার নির্দেশওে দিতে পারে।
এমন অবস্থায় হাসনি নাসারুল্লাহর এই হত্যাকাণ্ড সম্ভবত ওই অঞ্চলকে আরও বিস্তৃত ও বিপজ্জনক সংঘাতের আরেক ধাপ কাছে নিয়ে গেল। যা যুক্তরাষ্ট্র ও ইরান উভয়কেই এই সংঘাতে টেনে আনতে পারে।
মূলত মধ্যপ্রাচ্যে পরবর্তীতে ঠিক কী ঘটতে চলেছে তা নির্ভর করছে আয়াতুল্লাহ খামেনি এখন ঠিক কী সিদ্ধান্ত নেন তার ওপর।
টিএম