সুচিকে ভ্যাটিক্যানে রাজনৈতিক আশ্রয় দিতে চান পোপ
মিয়ানমারের কারাবন্দি গণতন্ত্রপন্থি নেত্রী অং সান সুচিকে ভ্যাটিক্যানে রাজনৈতিক আশ্রয় দিতে চান খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বীদের আধ্যাত্মিক নেতা পোপ ফ্রান্সিস। সম্প্রতি এ প্রসঙ্গে সুচির ছেলের সঙ্গে কথা হয়েছে বলেও জানিয়েছেন তিনি।
পোপের ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত রোমান ক্যাথলিকপন্থি সন্ন্যাসী আন্তোনিও স্পাদারো এ তথ্য জানিয়েছেন। মঙ্গলবার তার বরাত দিয়ে ইতালির প্রায় সব সংবাদমাধ্যম প্রকাশ করেছে এ সংবাদটি।
গত ২ থেকে ১৩ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ইন্দোনেশিয়া, পূর্ব তিমুর এবং সিঙ্গাপুর সফরে গিয়েছিলেন পোপ ফ্রান্সিস। ইন্দোনেশিয়ায় রোমান ক্যাথলিকপন্থি খৃস্টানদের অন্যতম শাখা জেসুইট সম্প্রদায়ের এক সভায় যোগ দিয়েছিলেন পোপ। সেখানে তিনি বলেছেন, “আমি নিজে অং সান সুচিকে মুক্তি দেওয়ার জন্য মিয়ানমারের ক্ষমতাসীনদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছি। সম্প্রতি রোমে সুচির ছেলের সঙ্গে আমার সাক্ষাৎ হয়েছিল। আমি তাকে বলেছি যে ভ্যাটিক্যান সুচিকে রাজনৈতিক আশ্রয় প্রদান করতে প্রস্তুত।”
ওই সভায় পোপ আরও বলেন, “যে কোনো দেশের উন্নতি নির্ভর করে শান্তিপূর্ণ সমাজিক পরিস্থিতির ওপর। যে সমাজ সবার সম্মান এবং মৌলিক অধিকারের স্বীকৃতি দেয়, গণতান্ত্রিক মূল্যবোধকে ঊর্ধ্বে তুলে ধরে এবং সবাইকে সঙ্গে নিয়ে অগ্রসর হতে চায়, সেই সমাজ বা রাষ্ট্রই আসলে প্রকৃত অর্থে উন্নত এবং এই মানব সভ্যতার ভবিষ্যৎ।”
“গত দু’বছর ধরে মিয়ানমারে যা হচ্ছে, আমরা তাতে চুপচাপ থাকতে পারি না। এই ইস্যুতে অবশ্যই আমাদের কিছু করা উচিত।”
প্রসঙ্গত, ২০২০ সালের নির্বাচনে কারচুপির অভিযোগ তুলে ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারি অভ্যুত্থানের মাধ্যমে জাতীয় ক্ষমতা দখল করে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী। সেনাপ্রধান জেনারেল মিন অং হ্লেইং এই অভ্যুত্থানের নেতৃত্ব দিয়েছিলেন। বর্তমানে মিয়ানমারে ক্ষমতাসীন সামরিক সরকারের প্রধানও তিনি।
এদিকে অভ্যুত্থানের পরপরই গ্রেপ্তার ও কারা অন্তরীণ করা হয়েছিল অং সান সুচিকে। তার বিরুদ্ধে বেশ কয়েকটি দুর্নীতির অভিযোগ এনেছে সেনা সরকার। নেইপিদোর একটি সামরিক আদালতে সেসব অভিযোগের বিচার চলছে।
অং সান সুচির বয়স বর্তমানে ৭৫ বছর। মিয়ানমারের রাজনীতি বিশ্লেষকদের মতে, সু চির বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ আনা হয়েছে— সেগুলোর সবগুলোতে যদি তার সাজা হয়, সেক্ষেত্রে কমপক্ষে আগামী ১৫০ বছর কারগারে থাকতে হবে তাকে।
সূত্র : এএফপি
এসএমডব্লিউ