মণিপুরে চরম উত্তেজনা, অ্যান্টি-ড্রোন ব্যবস্থা মোতায়েন
ড্রোন-রকেট হামলা ও বন্দুকযুদ্ধের ঘটনায় কয়েকজনের প্রাণহানির পর ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য মণিপুরে ব্যাপক আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। ড্রোন ব্যবহার করে বিচ্ছিন্নতাবাদীদের বোমা হামলা চালানোর ঘটনায় স্থানীয় প্রশাসনের মাঝে চরম উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। এই পরিস্থিতি মোকাবিলায় রোববার রাজ্যজুড়ে ব্যাপক নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। মোতায়েন করা হয়েছে অ্যান্টি ড্রোন ব্যবস্থাও।
মণিপুরের স্থানীয় কর্মকর্তারা বলেছেন, রাজ্যের বিভিন্ন স্থানে ড্রোন-বিরোধী ব্যবস্থা মোতায়েন করা হয়েছে। সেখানকার পরিস্থিতি উত্তপ্ত হলেও বর্তমানে নিয়ন্ত্রণে রয়েছে বলে দাবি করেছেন তারা।
রাজ্য সরকারের একজন কর্মকর্তা বলেছেন, রাজ্যে রোববার এখন পর্যন্ত সহিংসতার কোনও ঘটনা ঘটেনি। রাজ্যের বিভিন্ন জেলার পুলিশ সুপাররা অন্যান্য নিরাপত্তা বাহিনীর সাথে সমন্বয় করে পরিস্থিতি অনবরত পর্যবেক্ষণ করে চলছেন।
তিনি বলেন, রাজধানী ইম্ফল উপত্যকার প্রত্যন্ত অঞ্চলে যেকোনও ধরনের দুর্বৃত্ত ড্রোনের হামলার চেষ্টা নস্যাৎ করে দিতে অ্যান্টি-ড্রোন ব্যবস্থা মোতায়েন করেছে আসাম রাইফেলস। এছাড়া রাজ্য পুলিশের কাছে একটি অ্যান্টি-ড্রোন ব্যবস্থা হস্তান্তর করেছে কেন্দ্রীয় আধা-সামরিক বাহিনী (সিআরপিএফ)।
— Manipur Police (@manipur_police) September 7, 2024
গত বছরের মে মাসে মণিপুরের সংখ্যাগরিষ্ঠ মেইতে সম্প্রদায় এবং কুকি-জো উপজাতিদের মধ্যে সহিংসতা শুরু হয়। ওই সহিংসতায় দুই শতাধিক মানুষের প্রাণহানি ও প্রায় ৫০ হাজার মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়। এরপর রাজ্যজুড়ে থেমে থেমে সহিংসতা চললেও এই প্রথমবারের মতো চলমান জাতিগত সংঘাতে ড্রোন ও রকেট ব্যবহার করে হামলা চালানো হয়েছে।
রাজ্যের বিচ্ছিন্নতাবাদী গোষ্ঠীগুলোর হঠাৎ করে ড্রোন ও রকেট ব্যবহার করে হামলা চালানোর ঘটনায় দেশটির কেন্দ্রীয় সরকার উদ্বেগে রয়েছে। চলমান সহিংসতায় মণিপুরে প্রথম ড্রোন হামলা চালানো হয়েছে গত ১ সেপ্টেম্বর। ওই দিন ইম্ফল পশ্চিম জেলার কৌত্রুক গ্রামের কাছে ড্রোন থেকে বোমা নিক্ষেপ করা হয়। সেদিন ড্রোন থেকে বোমা হামলার পাশাপাশি কৌত্রুকে বন্দুক হামলাও চালানো হয়। এতে অন্তত দু’জন নিহত ও ৯ জন আহত হন।
পরের দিন কৌত্রুক থেকে ৩ কিলোমিটার দূরের সেনজাম চিরাং এলাকায় আবারও ড্রোন হামলার ঘটনা ঘটে। এতে আহত হন অন্তত তিনজন। এদিকে, পরিস্থিতি ভয়াবহ আকার ধারণ করায় মণিপুরের জিরিবাম জেলায় শনিবার রাতে জরুরি অবস্থা জারি করা হয়েছে। সরকারের জারি করা এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, জরুরি অবস্থা চলাকালীন পাঁচজন বা তার বেশিসংখ্যক মানুষ একসঙ্গে কোথাও জমায়েত হতে পারবেন না।
শনিবার কেবল জিরিবামেই হামলা-পাল্টা হামলায় এক সৈন্যসহ অন্তত ছয়জন নিহত হয়েছেন। মণিপুর পুলিশ বলছে, শনিবার জিরিবামে বাড়িতে ঢুকে ঘুমের মধ্যে গুলি চালিয়ে একজনকে হত্যা করেছে সন্ত্রাসীরা। এই হত্যাকাণ্ডের পর সেখানে বিচ্ছিন্নতাবাদী সশস্ত্র গোষ্ঠীর সদস্যদের সাথে আইনশৃঙ্খলাবাহিনীর ব্যাপক গোলাগুলি হয়। এতে কমপক্ষে চারজন নিহত হন; যাদের সবাই সশস্ত্র ছিলেন।
সূত্র: পিটিআই।
এসএস