কুরস্কে ইউক্রেনের হামলা শান্তি আলোচনাকে শেষ করে দিয়েছে : রাশিয়া
ইউক্রেনে চলমান যুদ্ধের মধ্যেই সম্প্রতি রাশিয়ার কুরস্ক অঞ্চলে অনুপ্রবেশ করেছে ইউক্রেনীয় সেনারা। রুশ এই অঞ্চলের বেশ গভীরে ইউক্রেনীয় সেনারা চলে গেছে এবং বিভিন্ন লক্ষ্যবস্তুতে হামলা করে চলেছে কিয়েভের বাহিনী।
এই ঘটনায় কঠোর প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে রাশিয়া। দেশটি বলছে, কুরস্ক অঞ্চলে ইউক্রেনের অনুপ্রবেশ শান্তি আলোচনার যেকোনও সম্ভাবনাকে শেষ করে দিয়েছে। বৃহস্পতিবার (২২ আগস্ট) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা আনাদোলু।
রাশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মারিয়া জাখারোভা বুধবার বলেছেন, রাশিয়ার কুরস্ক অঞ্চলে ইউক্রেনের অনুপ্রবেশ ‘যেকোনও শান্তি আলোচনার সম্ভাবনাকে শেষ করে দিয়েছে।’
মস্কোতে এক সংবাদ সম্মেলনে বক্তৃতাকালে জাখারোভা কুরস্কে কিয়েভের আক্রমণকে ‘সন্ত্রাসী অভিযান’ বলে নিন্দা করেছেন। তিনি বলেন, এই ধরনের ‘হামলার পরে, কেউ তাদের (ইউক্রেনীয় কর্তৃপক্ষ) সাথে মোটেও আলোচনা করবে না।’
জাখারোভা বলেন, ‘ইউক্রেনীয় সশস্ত্র বাহিনীর আমাদের ভূখণ্ডে আক্রমণ করার এই প্রচেষ্টা দস্যু জান্তার সাথে যেকোনও আলোচনার সম্ভাবনাকে বাতিল করে দিয়েছে।’
জাখারোভা আরও বলেছেন, রুশ ভূখণ্ডে আগ্রাসন চালানোর মাধ্যমে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি তার অবস্থানকে শক্তিশালী করতে চেয়েছিলেন। তিনি তার দেশের নাগরিকদের চোখে তার ভাবমূর্তি আরও উন্নত করতে এবং পশ্চিমা দেশগুলোর কাছ থেকে আরও তহবিল পাওয়ার আশা করেছিলেন।
এদিকে রাশিয়ার মাটিতে হামলার বিষয়ে পশ্চিমা রাজনীতিবিদদের বিবৃতিকে ‘মিথ্যা’ হিসেবে আখ্যায়িত করে নিন্দা করেন। ওই বিবৃতিতে দাবি করা হয়েছিল, কিয়েভ তাদের সমর্থন ছাড়াই হামলার পরিকল্পনাটি করেছে এবং তা বাস্তবায়ন করেছে।
তিনি বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র, ব্রিটেন এবং (অন্যান্য) ন্যাটো দেশগুলো কেবল আদর্শিক অনুপ্রেরণাদাতা এবং পৃষ্ঠপোষকই নয় বরং আক্ষরিক অর্থে তারা কিয়েভ সরকারকে রাশিয়ান ফেডারেশনের ভূখণ্ডে বিভিন্ন লক্ষ্যবস্তুতে হামলার নির্দেশ দিচ্ছে। তাই তাদের পশ্চিমাদের সমর্থন ছাড়াই এই ঘটনা ঘটছে এমন বিবৃতি মিথ্যা।’
আরও পড়ুন
এদিকে কুরস্ক অঞ্চলে রাশিয়ান এবং ইউক্রেনীয় বাহিনীর মধ্যে সংঘর্ষ অব্যাহত রয়েছে। গত ৫-৬ আগস্ট সেখানে ঢুকে পড়ে হাজার হাজার ইউক্রেনীয় সেনা। রাশিয়ান কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, কিয়েভের আক্রমণ শুরু হওয়ার পর থেকে ১৭ জন নিহত এবং আরও ১৪০ জন আহত হয়েছেন। এছাড়া আরও ১ লাখ ২১ হাজারের বেশি লোককে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।
জেলেনস্কি দাবি করেছেন, ইউক্রেনীয় বাহিনী ৯২ টি রাশিয়ান বসতি দখল করেছে। আর এই অপারেশনের উদ্দেশ্যকে ‘বাফার জোন প্রতিষ্ঠা’ হিসাবে বর্ণনা করেছে কিয়েভ।
তবে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন এই হামলাকে ‘সন্ত্রাসী হামলা’ বলে নিন্দা করেছেন।
টিএম