ইংল্যান্ডে মসজিদের বাইরে দাঙ্গা, আহত অন্তত ৩৯ পুলিশ
ইংল্যান্ডের মার্সিসাইড জেলার সাউথপোর্ট শহরের একটি মসজিদের বাইরের সড়কে সংঘটিত দাঙ্গায় আহত হয়েছেন ব্রিটেন পুলিশের ৩৯ জন কর্মকর্তা ও সদস্য। তাদের মধ্যে অন্তত আটজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।
সোমবার স্থানীয় সময় বেলা ১১টা ৪৭ মিনিটে সাউথপোর্টে একটি শিশুদের নাচের কর্মশালায় ছুরি হাতে অতর্কিত হামলা চালায় ১৭ বছর বয়সী এক তরুণ। এতে নিহত হয় দুই শিশু এবং আহত হয় দুই প্রাপ্তবয়স্কসহ ৯ জন। আহতদের মধ্যে দুই প্রাপ্তবয়স্কসহ ৬ জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানিয়েছে বিবিসি। নিহত ও আহত শিশুদের সবার বয়স ৬ থেকে ১০ বছরের মধ্যে।
হামলাকারী তরুণকে ইতোমধ্যে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তাকে জিজ্ঞাসাবাদও করা হচ্ছে। তবে ব্রিটেনের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ওই তরুণের নাম-পরিচয় প্রকাশ করেনি। তবে গুজব ছড়িয়ে পড়েছে যে হামলাকারী ওই তরুণ মুসলিম।
মঙ্গলবার সন্ধ্যায় নিহতদের স্মরণে শোক মিছিল করে ঘটনাস্থলে যান হতাহতদের স্বজন ও সাধারণ লোকজন। সেখানে ফুল, মোমবাতি, খেলনা নিবেদন করেন তারা।
সাউথপোর্টের যে এলাকায় এই ঘটনা ঘটেছে, তার কাছাকাছেই অবস্থিত একটি মসজিদ। হতাহত শিশুদের স্বজনদের শোক মিছিল শেষ হওয়ার কিছুক্ষণ পর একদল দাঙ্গাকারী মসজিদটিকে লক্ষ্য হামলা চালান। এ সময় পুলিশ কর্মকর্তা ও সদস্যরা তাদের ছত্রভঙ্গ করে দেওয়ার চেষ্টা করলে তাদেরকেও হামলা করেন দাঙ্গাকারীরা। পুলিশকে লক্ষ্য করে অজস্র ইট-পাটকেল ও বোতল ছুড়েছেন তারা।
কয়েক ঘণ্টা সংঘাতের পর দাঙ্গাকারীদের সরিয়ে দিতে সক্ষম হয় পুলিশ। ওই এলাকার পরিস্থিতি এখনও থমথমে বলে জানিয়েছে বিবিসি।
পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীসূত্রে জানা গেছে, এই দাঙ্গাকারীরা ইংলিশ ডিফেন্স লীগ নামের একটি উগ্র ডানপন্থি রাজনৈতিক দলের কর্মী-সদস্য। এই দলটি এর আগেও মুসলিমদের লক্ষ্য করে একাধিকবার হামলা করেছে বলে উল্লেখ রয়েছে পুলিশের রেকর্ডে।
মার্সিসাইড পুলিশের মুখপাত্র এবং অ্যাসিসটেন্ট চিফ কনস্টেবল অ্যালেক্স গস এক বিবৃতিতে বলেন, “আজ সন্ধ্যায় সাউথপোর্ট পুলিশকে গুরুতর সহিংসতা মোকাবিলা করতে হয়েছে। দীর্ঘক্ষণ পুলিশকে লক্ষ্য করে হামলা চালিয়েছে দুর্বৃত্তরা। পুলিশ সাহসিকতার সঙ্গে তার দায়িত্ব পালন করেছে।”
দাঙ্গাকারীদের প্রতি কঠোর হওয়ার ইঙ্গিত দিয়েছেন যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী কেয়ার স্টার্মারও। বুধবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে পোস্ট করা এক বার্তায় তিনি বলেন, “সাউথপোর্টের জনগণ এখন আতঙ্কের মধ্যে রয়েছে। আমাদের উচিত তাদের পাশে দাঁড়ানো। যারা শোকার্ত জনগণের একটি শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিকে সহিংস ও গুণ্ডামিতে পরিপূর্ণ করেছে, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
সূত্র : বিবিসি, আলজাজিরা
এসএমডব্লিউ