যুক্তরাজ্যের নির্বাচনে পাকিস্তানি ও কাশ্মিরি প্রার্থীদের জয়জয়কার
যুক্তরাজ্যের সাধারণ নির্বাচনে নিরঙ্কুশ জয় পেয়েছে স্যার কিয়ার স্টারমার-এর নেতৃত্বাধীন লেবার পার্টি। এই বিশাল জয়ের মধ্য দিয়ে ১৪ বছর পরে দলটি আবারও ব্রিটেনের রাষ্ট্র ক্ষমতায় ফিরে এসেছে। প্রধানমন্ত্রী হয়েছেন স্যার কিয়ার স্টারমার।
এছাড়া ইউরোপের এই দেশটির এই নির্বাচনে পাকিস্তানি ও কাশ্মিরি প্রার্থীদের জয়জয়কার লক্ষ্য করা গেছে। সর্বশেষ এই নির্বাচনে অন্তত ১৫ জন পাকিস্তানি ও কাশ্মিরি বংশোদ্ভূত প্রার্থী এমপি নির্বাচিত হয়েছেন।
শনিবার (৬ জুলাই) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যম এক্সপ্রেস ট্রিবিউন।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বরাবরের মতো জাতিগত পাকিস্তানি এবং কাশ্মিরি রাজনীতিবিদরা ব্রিটিশ সাধারণ নির্বাচনে তাদের জয়ের ধারা অব্যাহত রেখেছেন। এতে করে এরারের নির্বাচনেই যুক্তরাজ্যের ইতিহাসে ‘সবচেয়ে বৈচিত্র্যময়’ সংসদ তৈরি হয়েছে।
গত বৃহস্পতিবার অনুষ্ঠিত নির্বাচনের ফলাফলে দেখা গেছে, ব্রিটিশ পার্লামেন্টে নির্বাচিত জাতিগত সংখ্যালঘু পটভূমির ৮৭ জন প্রার্থীর মধ্যে কমপক্ষে ১৫ জন পাকিস্তানি ও কাশ্মিরি বংশোদ্ভূত প্রার্থী জনগণের ভোটে এমপি নির্বাচিত হয়েছেন।
পাকিস্তানি এবং কাশ্মিরি প্রবাসী গোষ্ঠীগুলো তাদের জয়কে স্বাগত জানিয়েছে এবং বলেছে, বৃহত্তর সম্প্রদায় কাশ্মির এবং ফিলিস্তিনে অবৈধ দখলদারিত্বের অধীনে বসবাস করা মানুষসহ তাদের অন্যান্য সমস্যাও সংসদে উত্থাপন করবে বলে তারা আশা করে।
এক্সপ্রেস ট্রিবিউন বলছে, যুক্তরাজ্যে এবারের নির্বাচনে আফজাল খান, ইমরান হুসেন, নাজ শাহ, ইয়াসমিন কোরেশি, মোহাম্মদ ইয়াসিন, তাহির আলী, শাবানা মাহমুদ, জারা সুলতানা, ডা. জুবায়ের আহমেদ, নওশাবাহ খান, ডা. রোসেনা আলিন-খান লেবার পার্টির মনোনয়নে নির্বাচিত হয়েছেন।
এছাড়া আইয়ুব খান এবং আদনান হুসেন গত সপ্তাহের এই নির্বাচনে জয়ী হয়েছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে। অন্যদিকে সাকিব ভাট এবং নুসরাত গনি কনজারভেটিভ পার্টির প্রার্থী হিসাবে নির্বাচনে জয়ী হয়েছেন।
লেবার পার্টি নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়ে সরকার গঠন করেছে। কাশ্মির এবং পাকিস্তানি প্রবাসী গোষ্ঠীর বিশিষ্ট নেতা ফাহিম কায়ানি সদ্য সমাপ্ত নির্বাচনে বিজয়ী প্রার্থীদের অভিনন্দন জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, ‘সংখ্যালঘু গোষ্ঠী থেকে এই প্রার্থীদের জয় কমিউনিটির জন্য বেশ উৎসাহব্যাঞ্জক। এটি আমাদের আশা এবং সমৃদ্ধির বার্তা দেয়।’
কায়ানি আরও বলেন, বিজয়ী এই প্রার্থীরা এমন সব ভোটারদের কাছ থেকেই প্রধানত ভোট পেয়েছেন যারা আশা করে, নবনির্বাচিত আইন প্রণেতারা কাশ্মিরি এবং ফিলিস্তিনিদের কণ্ঠস্বর হয়ে উঠবেন।
তার ভাষায়, ‘ভালো ব্যাপার হচ্ছে, কাশ্মিরপন্থি – যা ন্যায়বিচারের সমর্থক – আইন প্রণেতাদের সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে’।
আরও পড়ুন
কায়ানি মূলত নির্বাচনে জয়ী হওয়া লেবার পার্টির প্রায় ৫০ জন প্রার্থীকে ইঙ্গিত করে একথা বলেন, যারা কাশ্মিরিদের আত্মনিয়ন্ত্রণের অধিকারকে জোরালোভাবে সমর্থন করেন।
কিন্তু একইসঙ্গে তিনি দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, ‘কনজারভেটিভদের মধ্যে কাশ্মিরের কণ্ঠস্বর দুর্বল হয়েছে, কারণ বিদায়ী সংসদের ছয়জন আইনপ্রণেতা এইবার পরাজিত হয়েছেন, যার মধ্যে কাশ্মিরের কনজারভেটিভ বন্ধু পল ব্রিস্টোও রয়েছেন, যিনি মাত্র ১১৮ ভোটে হেরে গেছেন।’
কাশ্মিরের প্রবাসী নেতা কায়ানি বলেন, ‘কাশ্মিরি এবং ফিলিস্তিনিরা আশা করে, এই নব-নির্বাচিত আইন প্রণেতারা তাদের কণ্ঠস্বর হয়ে উঠবেন এবং কাশ্মিরি ও ফিলিস্তিনিদের তাদের ভবিষ্যৎ সিদ্ধান্ত নিতে দেওয়ার জন্য ভারত ও ইসরায়েলের সঙ্গে যুক্ত হয়ে কাজ করতে নতুন লেবার সরকারকে বাধ্য করবেন।’
টিএম