অবৈধ বিয়ে: আপিলে হেরে গেলেন ইমরান-বুশরা
অবৈধ বিয়ের মামলায় প্রাপ্ত সাজা থেকে অব্যাহতি চেয়ে যে আপিল করেছিলেন পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান এবং তার তৃতীয় স্ত্রী বুশরা বিবি, তা খারিজ করে দিয়েছেন আদালত। আজ বৃহস্পতিবার ইসলামাবাদের একটি জেলা ও সেশন আদালত এই রায় ঘোষণা করেছেন।
২০১৮ সালের ফেব্রুয়ারিতে ইমরান খানের সঙ্গে বিয়ে হয় বুশরা বিবির। এই বিয়ের কয়েক মাস পরেই প্রথমবারের মতো দেশের প্রধানমন্ত্রী হন সফল ক্রিকেটার থেকে রাজনীতিবিদ বনে যাওয়া ইমরান। তবে পাকিস্তানের অন্যান্য সাবেক প্রধানমন্ত্রীর মতোই মেয়াদ অসম্পূর্ণ রেখে বিদায় নিতে হয়েছিল তাকে। ২০২২ সালের ১০ এপ্রিল পার্লামেন্টের বিরোধী এমপিদের অনাস্থা ভোটের জেরে যখন ক্ষমতাচ্যুত হন ইমরান খান, তখনও তার মেয়াদের দেড় বছরের বেশি সময় বাকি ছিল।
ইমরান-বুশরার বিয়ের পর বুশরার সাবেক স্বামী খাওয়ার মানেকা এই বিয়ে অবৈধ দাবি করে ইসলামাবাদের একটি বিচারিক আদালতে মামলা করেন। মামলার অভিযোগে বলা হয়, বুশরা বিবির সঙ্গে খাওয়ার মানেকার আনুষ্ঠানিক বিচ্ছেদ হয়েছে ২০১৭ সালের নভেম্বর মাসে। তারপর ২০১৮ সালের ফেব্রুয়ারিতে বুশরাকে বিয়ে করেন ইমরান।
ইসলাম ধর্মের বিধান অনুযায়ী, স্বামীর সঙ্গে বিবাহবিচ্ছেদ ঘটলে বা স্বামী মারা গেলে পরবর্তী বিয়ের জন্য মুসলিম নারীদের অন্তত ৩ মাস অপেক্ষা করতে হয়। এই সময়কালকে বলা হয় ‘ইদ্দত’। খাওয়ার মানেকার অভিযোগ, ‘ইদ্দত’ পার হওয়ার আগেই বুশরাকে বিয়ে করেছেন ইমরান। সুতরাং এই বিয়ে অবৈধ।
ইমরান খান প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর এই মামলার বিচার কার্যক্রম বন্ধ ছিল; কিন্তু ২০২২ সালে তিনি ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর ফের সচল হয় মামলটি। তারপর ২০২৩ সালে মামলার রায় ঘোষণা করেন বিচারিক আদালত। সেই রায়ে ইমরান-বুশরাকে দোষী সাব্যস্ত করে ৭ বছর কারাবাসের সাজা দেওয়া হয়।
বিচারিক আদালতের রায় বাতিল চেয়ে ইসলামাদের ওই জেলা ও সেশন আদালতে আপিল করেছিলেন ইমরান খানের আইনজীবীরা। আজ বৃহস্পতিবার তার রায় ঘোষণা করলেন ওই আদালতের বিচারক আফজাল মাজোকা।
রায় ঘোষণার পর হতাশা জানিয়েছে ইমরান খানের রাজনৈতিক দল তেহরিক-ই ইনসাফ। দলের অন্যতম মুখপাত্র সৈয়দ জুলফিকার বুখারি এই রায়কে ‘হাস্যকর’ ও ‘রাজনৈতিক পক্ষপাতদুষ্ট’ উল্লেখ করে এক প্রতিক্রিয়ায় বলেছেন, ‘আজ পাকিস্তানের বিচারব্যবস্থার জন্য একটি কালো দিন। ক্ষমতাবানরা যখন তাদের ক্রোধ মেটানোর জন্য বিচারব্যবস্থাকে ব্যবহার করা শুরু করেন, তখন বুঝতে হবে যে দেশের যাবতীয় প্রতিষ্ঠানের অস্তিত্ব হুমকির মুখে।’
সূত্র : আলজাজিরা, জিও টিভি
এসএমডব্লিউ