আজকের জয় বিশ্বের বৃহত্তম জয় : মোদি
লোকসভা নির্বাচনে ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি) প্রত্যাশা অনুযায়ী ফল করতে না পারলেও এনডিএ জোটের জয় উদযাপনে দিল্লিতে বিজেপি কার্যালয়ে পৌঁছে নেতাকর্মীদের উদ্দেশে ভাষণ দিয়েছেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। ফল ঘোষণার দিন মঙ্গলবার বাংলাদেশ সময় রাত সোয়া ৯টার পর সেখানে পৌঁছে উপস্থিত বিজেপি ও শরীক দলের নেতাকর্মীদের উদ্দেশে ভাষণ দেন তিনি।
এ সময় হাজার হাজার নেতাকর্মী বিভিন্ন ধরনের স্লোগান দেন এবং নরেন্দ্র মোদিকে স্বাগত জানান। বিজয় উদযাপনে বিজেপির সদরদপ্তরে উপস্থিত নেতাকর্মীদের ধন্যবাদ জানান মোদিও। তিনি বলেন, ‘‘আজ আমি হৃদয় থেকে অনেক, অনেক খুশি।’’
ভারতের এই প্রধানমন্ত্রী বলেন, এনডিএ জোট সরকার গঠন করবে এবং কাজ চালিয়ে যাবে। এটা পরিষ্কার, এনডিএ তৃতীয়বারের মতো সরকার গঠন করবে। দেশের মানুষ বিজেপি ও এনডিএর প্রতি পূর্ণ আস্থা রেখেছে। তিনি বলেন, ‘‘আজকের এই বিজয় বিশ্বের সবচেয়ে বড় বিজয়। এটাকে ‘‘ভারতীয়দের বিজয়’’ বলে অভিহিত করেন তিনি।
তিনি নিজ দল বিজেপির নির্বাচন কমিটিকে তাদের কার্যক্রমের জন্য ধন্যবাদ জানান। বিশেষ করে ‘‘চরম গরম আবহাওয়ার’’ মাঝে দলের নির্বাচন কমিটি কাজ করায় তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতাও জানান তিনি। মোদি বলেন, তারা অত্যন্ত দক্ষতার সাথে কাজ করেছেন... অনেক ভোট কেন্দ্র ছিল। প্রত্যেক কর্মী তার দায়িত্ব পালন করেছেন।
নির্বাচনে নিজ দলের তুলনামূলক খারাপ ফলাফলের বিষয়ে তেমন কিছু বলেননি নরেন্দ্র মোদি। তবে তিনি বলেছেন, এবারের এই নির্বাচন বিজেপি নেতৃত্বাধীন এনডিএ জোটের জন্য একটি ঘণ্টা ধ্বনি।
মোদি বলেন, ১৯৬২ সালের পর এবারই প্রথম কোনো সরকার দুই মেয়াদে দায়িত্ব পালনের পর তৃতীয় মেয়াদে ফিরেছে। এই ফলাফল তার জন্য ‘‘সম্মানজনক ও আনন্দদায়ক’’ বলে অভিহিত করেন তিনি।
তিনি বলেন, বিজয়ের এই মুহূর্তে দেশের প্রত্যেক ভোটারকে আমি মস্তকাবনত সালাম জানাতে চাই। প্রত্যেক ভারতীয় এটার জন্য গর্ব বোধ করেন। নির্বাচনে অংশ নেওয়া সব প্রার্থীকে শুভেচ্ছা জানাতে চান বলেও জানান তিনি।
ভারতের এই প্রধানমন্ত্রীর দাবি, ‘‘যেখানেই বিধানসভার নির্বাচন হয়েছে, সেখানেই এনডিএর বিজয় মিলেছে। সেটা অরুণাচল, অন্ধ্রপ্রদেশ, উড়িষ্যা কিংবা সিকিম হোক না কেন। এসব রাজ্যে কংগ্রেসের সুপরা সাফ হয়ে গেছে। আমার কাছে বিস্তারিত নেই। তবে হয়তো তাদের জামানত বাঁচানো মুশকিল হয়ে গেছে।’’
মোদি বলেন, ১৯৬২ সালের পর কোনো সরকার তৃতীয় মেয়াদে জয়ী হয়নি। এ সময় উপস্থিত জনতা হাততালি দেন এবং মোদির নামে স্লোগান দেন। তিনি বলেন, দিল্লিসহ কিছু এলাকায় তার দলের ভোটের সংখ্যা দ্বিগুণ হয়েছে। মোদি আরও বলেন, বিজেপি কেরালায় একটি আসনও জিতেছে। যেখানে কর্মীরা প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে ত্যাগ স্বীকার করেছেন।
তিনি বলেন, ১০ বছর আগে গভীর ক্ষতির মুখোমুখি হয়েছিল ভারত। ওই সময় দেশ যেসব চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হয়েছিল, সেসবই সংবাদমাধ্যমের শিরোনামে পরিণত হয়। কিন্তু বর্তমানে তার দল সবকিছু ঘুরিয়ে দিয়েছে।
দুর্নীতি নির্মূলে সম্ভাব্য সব কিছু করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন ভারতের এই প্রধানমন্ত্রী। মোদির বক্তৃতাজুড়ে করোনা মহামারী চলাকালীন দেশটি কীভাবে চলছিল সেই বিষয়ে কথা বলেন। কঠিন ওই সময়ে ভারতীয়রা তার পাশে থেকে সমর্থন জানানোয় সবার প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান তিনি। প্রধানমন্ত্রী প্রতিরক্ষা খাত, তরুণ জনগোষ্ঠী ও কৃষকসহ দেশটির এমন কিছু শিল্প ও গোষ্ঠীর নামও উল্লেখ করেছেন যাদের তিনি ভবিষ্যতে সহায়তা করবেন বলে আশাপ্রকাশ করেছেন।
তিনি দেশটিতে ‘‘সবুজ শিল্পায়ন’’ নিয়ে আসার অঙ্গীকার করেছেন। একই সঙ্গে দেশটি ‘‘সবুজ যুগে’’ প্রবেশ করছে বলে ঘোষণা দেন। দেশটিতে দুর্নীতির লাগাম টানা ছিল মোদির আরেকটি নির্বাচনী অঙ্গীকার। তা একেবারে নির্মূল করা কঠিন বলে তিনি স্বীকার করেছেন। তবে ক্ষমতার তৃতীয় মেয়াদে দেশ থেকে দুর্নীতির মূলোৎপাটনে সবকিছু করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন তিনি।
মোদি বলেন, সরকার প্রতিটি অঞ্চল থেতকে দারিদ্র্য নির্মূল করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। তার দল বিগত ১০ বছরে মানুষকে দারিদ্র্য থেকে মুক্ত করেছে বলেও দাবি করেছেন তিনি।
‘‘দেশ থেকে দারিদ্র্য দূর না হওয়া পর্যন্ত আমরা থামব না,’’ বলেন তিনি। নারীদের জন্য আরও সুযোগ সৃষ্টি করার অঙ্গীকারও করেছেন মোদি। ভারতকে দ্বিতীয় বৃহত্তম মোবাইল উৎপাদনকারী দেশে পরিণত করেছেন বলে দাবি করেছেন তিনি।
মোদি বলেন, ১৯৬২ সালের পর কোনো সরকার তৃতীয় মেয়াদে জয়ী হয়নি। এ সময় উপস্থিত জনতা হাততালি দেন এবং মোদির নামে স্লোগান দেন। তিনি বলেন, দিল্লিসহ কিছু এলাকায় তার দলের ভোটের সংখ্যা দ্বিগুণ হয়েছে। মোদি আরও বলেন, বিজেপি কেরালায় একটি আসনও জিতেছে। যেখানে কর্মীরা প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে ত্যাগ স্বীকার করেছেন।
তিনি বলেন, ১০ বছর আগে গভীর ক্ষতির মুখোমুখি হয়েছিল ভারত। ওই সময় দেশ যেসব চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হয়েছিল, সেসবই সংবাদমাধ্যমের শিরোনামে পরিণত হয়। কিন্তু বর্তমানে তার দল সবকিছু ঘুরিয়ে দিয়েছে।
সূত্র: বিবিসি, রয়টার্স, আলজাজিরা, দ্য হিন্দু।
এসএস