গাজার সমর্থনে আন্দোলন, মার্কিন শিক্ষার্থীদের প্রশংসা খামেনির
অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলের রক্তক্ষয়ী যুদ্ধে ক্রমবর্ধমান প্রাণহানির ঘটনার প্রতিবাদে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের প্রশংসা করেছেন ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনি। বৃহস্পতিবার ইরানের এই নেতার সরকারি ওয়েবসাইটে প্রকাশিত বিবৃতিতে মার্কিন শিক্ষার্থীদের প্রশংসা করা হয়েছে।
মধ্যপ্রাচ্যজুড়ে তেহরান-সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন সশস্ত্র গোষ্ঠীর কথা উল্লেখ করে খামেনি বলেন, ‘‘আপনারা এখন প্রতিরোধ ফ্রন্টের একটি শাখা গঠন করেছেন।’’ ইরান সমর্থিত এসব সশস্ত্র গোষ্ঠী চিরশত্রু ইসরায়েলের বিরুদ্ধে সক্রিয় রয়েছে। মধপ্রাচ্যের এসব গোষ্ঠী প্রতিরোধ অক্ষ হিসাবেও পরিচিত।
বিবৃতিতে ইরানের সর্বোচ্চ এই নেতা বলেছেন, ‘‘ইতিহাসের পাতা যখন উল্টে যাচ্ছে, তখন আপনারা এর ডান প্রান্তে দাঁড়িয়ে আছেন।’’
গত এপ্রিলে যুক্তরাষ্ট্রের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো ফিলিস্তিনপন্থি বিক্ষোভে উত্তাল হয়ে ওঠে। পরে পরিস্থিতি মোকাবিলায় ক্যাম্পাসে মোতায়েন করা পুলিশের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের দফায় দফায় সংঘর্ষ হয়। সেই সময় কয়েক ডজন শিক্ষার্থীকে গ্রেপ্তার করে যুক্তরাষ্ট্র পুলিশ।
আর এই বিক্ষোভের শুরু হয় নিউইয়র্কের কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এবং পরবর্তীতে তা পুরো যুক্তরাষ্ট্রের পাশাপাশি ইউরোপ ও অন্যান্য অঞ্চলেও ছড়িয়ে পড়ে।
গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েলের দক্ষিণাঞ্চলে ঢুকে হামলা চালায় গাজা উপত্যকার ক্ষমতাসীন গোষ্ঠী হামাসের শত শত যোদ্ধা। ওই হামলায় ইসরায়েলে এক হাজার ১৮৯ জন নিহত হন; যাদের বেশিরভাগই বেসামরিক।
ফরাসি বার্তা সংস্থা এএফপির পরিসংখ্যান বলছে, ইসরায়েলে হামলা চালিয়ে ২৫২ জনকে ধরে নিয়ে গাজায় জিম্মি করে রাখে হামাস। তাদের মধ্যে এখনও ১২১ জন গাজায় জিম্মি অবস্থায় রয়েছেন। এছাড়া জিম্মিদের অন্তত ৩৭ জন নিহত হয়েছেন বলে ইসরায়েলের সেনাবাহিনী জানিয়েছে।
হামাসের হামলার দিনই গাজা উপত্যকায় যুদ্ধ শুরু করে ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনী। সাত মাসের বেশি সময় ধরে চলা এই যুদ্ধে গাজায় ৩৬ হাজার ১৭১ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন বলে সেখানকার হামাস-নিয়ন্ত্রিত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে।
গাজায় যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকেই হামাসের প্রতি সমর্থন জানিয়ে আসছে ইরান। গাজা যুদ্ধে ফিলিস্তিনিদের প্রতি সমর্থন জানিয়ে ইরানের অন্যান্য মিত্র সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলো সিরিয়া, লেবানন, ইরাক ও ইয়েমেন থেকে প্রতিনিয়ত ইসরায়েলি ও পশ্চিমা স্বার্থে হামলা চালিয়ে আসছে। প্রতিরোধ ফ্রন্টের হামলা ঘিরে পুরো মধ্যপ্রাচ্যজুড়ে আঞ্চলিক উত্তেজনা চরমে পৌঁছেছে।
হামলা-পাল্টা হামলার ঘটনা বৃদ্ধি পাওয়ায় গত মাসে সরাসরি ইসরায়েলে শত শত ক্ষেপণাস্ত্র ও রকেট নিক্ষেপ করেছে ইরান।
সূত্র: এএফপি।
এসএস