কিরগিজস্তান-তাজিকিস্তান সীমান্ত সংঘর্ষ, নিহত ৩১
একটি জলাশয় স্থাপনকে কেন্দ্র করে বিতর্কিত সীমান্তে প্রতিবেশী তাজিকিস্তানের সঙ্গে সংঘর্ষে কমপক্ষে ৩১ জন নিহত হয়েছে বলে জানিয়েছে মধ্য এশিয়ার দেশ কিরগিজস্তান। এদিকে এ সংঘাত নিরসনে সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নভুক্ত দেশ দুটি শুক্রবার আলোচনায় বসেছে।
বিতর্কিত ওই সীমানায় ভূখণ্ড ও পানি নিয়ে দেশ দুটির মধ্যে বিরোধ দীর্ঘদিনের। গতকাল বৃহস্পতিবার দুই প্রতিদ্বন্দ্বী দেশের সামরিক সেনারা মুখোমুখি সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। গোলাগুলির ঘটনা ঘটে। ফলে ঘটনাস্থল থেকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে ১০ হাজার মানুষকে।
কিরগিজস্তান ও তাজিকিস্তানের ওই সীমান্ত এলাকার মানুষজনের মধ্যে প্রায়শই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। তবে দেশ দুটির সীমান্তরক্ষীদের মধ্যে এ সংঘাতে জড়ানোর ঘটনা খুব কম। বিবিসি বলছে, গত কয়েক বছরে দুই দেশের সেনাদের এটাই সবচেয়ে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ।
তবে বৃহস্পতিবার দুই দেশের সামরিক বাহিনী সেখানে ভয়াবহ সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। উভয় পক্ষের মধ্যে ব্যাপক গোলাগুলি শুরু হয়। সংঘর্ষ শুরুর পর তা ব্যাপক পরিসরে ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কাও তৈরি হয়েছিল। তবে রাতেই কিরগিজস্তান যুদ্ধবিরতির ঘোষণা দেয়।
শুক্রবার কিরগিজ কর্তৃপক্ষ বিবৃতি দিয়ে ওই সংঘর্ষে কিরগিজস্তানের ৩১ জন নিহত হওয়ার কথা জানিয়েছে। আহত হয়েছেন শতাধিক। তাজিক কর্তৃপক্ষ হতাহত নিয়ে কিছু জানায়নি। তবে দেশটির সংবাদমাধ্যম ১০ জন নিহত এবং ৯০ জন আহতের কথা জানিয়েছে।
বিবিসি জানিয়েছে, গতকাল বৃহস্পতিবার এক জলাশয়ে নজরদারি ক্যামেরা বসানো নিয়ে দুই পক্ষের মানুষ একে অপরের দিকে পাথর ছুড়ে মারতে শুরু করলে সংঘর্ষের সূত্রপাত। পরে দুই দেশের নিরাপত্তা বাহিনী সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়লে সেই সংঘর্ষ প্রাণঘাতী রুপ নেয়।
বিতর্কিত অঞ্চলটি কিরগিজস্তানের বাতকেন প্রদেশে অবস্থিত। বাতকেনের গভর্নর জানান, উভয় সীমান্তে বসানো ওই ক্যামেরা সরাতে রাজি হয়েছিল উভয়পক্ষ। পরে নিজেদের অবস্থান থেকে সরে আসে তাজিকিস্তান। সেখান থেকেই এই বিবাদ। পরে তা সংঘর্ষে গড়ায়।
পরে রাতেই অবশ্য দুই পক্ষ যুদ্ধবিরতিতে রাজি হয়। যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়ার পর দু’পক্ষের সশস্ত্র বাহিনী ঘাঁটিতে ফিরতে শুরু করে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছবিতে দেখা গেছে, কিছু ভবন আগুন পুড়ে গেছে।
শুক্রবার প্রতিবেশী দেশ উজবেকিস্তানের নেতা শাভাকাত মিরজিওয়েভের কার্যালয় জানিয়েছে, তিনি বিরোধ নিরসনের লক্ষ্যে তাজিক নেতা রাখমন এবং কিরগিজ প্রেসিডেন্ট জাপারভের সাথে টেলিফোনে পৃথকভাবে আলোচনা করেছেন।
উল্লেখ্য, সোভিয়েত ইউনিয়নের পতনের পর ১৯৯১ সালে কিরগিজস্তান ও তাজিকিস্তান স্বাধীনতা লাভ করে। কিন্তু দেশ দুটির মধ্যে সীমান্ত নিয়ে বিরোধ থেকেই যায়। ফলে তখন থেকেই দুই দেশের মধ্য সীমানা নির্ধারণ নিয়ে দফায় দফায় সংঘর্ষ হয়ে আসছে।
এএস