ভয়াবহ গরম-তাপপ্রবাহ : পাকিস্তানে বন্ধ হচ্ছে একের পর এক স্কুল
অস্বাভাবিক গরম-তাপপ্রবাহের কারণে পাকিস্তানের চার প্রদেশ ও তিন কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের প্রশাসন স্কুলগুলোর নিয়মিত ক্লাস কার্যক্রম স্থগিত রাখার নির্দেশ দিতে বাধ্য হচ্ছে। ইতোমধ্যে দেশটির সবচেয়ে জনবহুল দেশ পাঞ্জাবে আগামী এক সপ্তাহ স্কুল বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছে প্রাদেশিক সরকার।
বৃহস্পতিবার পাঞ্জাব প্রাদেশিক সরকারের শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে দেওয়া এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ‘চলমান তাপপ্রবাহের কারণে আগামী ২৫ মে থেকে ৩১ মে পর্যন্ত পাঞ্জাবের সব প্রাক-প্রাথমিক, প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক স্কুল বন্ধ থাকবে। কোনো স্কুল কৃর্তপক্ষ যদি চায়, তাহলে এই সময় পরীক্ষা নিতে পারবে; তবে সেক্ষেত্রে অবশ্যই শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের স্বাস্থ্যগত নিরাপত্তার ব্যাপারটি সবার আগে বিবেচনা করতে হবে।’
প্রসঙ্গত, পাকিস্তানের রাজধানী ইসলামাবাদ এবং অন্য তিন প্রদেশ সিন্ধ, বেলুচিস্তান ও খাইবার পাখতুনখোয়ায় গত প্রায় দু’সপ্তাহ ধরে চলছে তাপপ্রবাহ। কোনো কোনো এলাকায় তাপমাত্রা পৌঁছেছে প্রায় ৫০ ডিগ্রি সেলসিয়াসে।
পাকিস্তানের আবহাওয়া দপ্তরের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, গ্রীষ্মকালে পাকিস্তানের স্বাভাবিক যে গড় তাপমাত্রা, তার চেয়েও স্থানভেদে ৪ থেকে ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস বেশি গরম বেশি পড়েছে চলতি ২৯২৩ সালের মে মাসে।
বৃহস্পতিবার এক বিবৃতিতে পাকিস্তানের চিকিৎসকদের জাতীয় সংগঠন জানিয়েছে, বড় শহরগুলোতে হিটস্ট্রোক ও অন্যান্য গরমজনিত শারীরিক সমস্যা নিয়ে প্রতিদিন শত শত রোগী ভর্তি হচ্ছেন।
আবহাওয়াগত কারণে পাকিস্তানে স্কুল বন্ধ হওয়া বিরল নয়। ২০২২ সালের ভয়াবহ বন্যায় সপ্তাহের পর সপ্তাহ ডুবে ছিল দেশটির মোট ভূখণ্ডের এক তৃতীয়াংশ এলাকা। বন্যায় সরাসরি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিলেন ৩ কোটি ৩০ লাখেরও বেশি মানুষ। সেবারও দিনের পর দিন বন্ধ ছিল স্কুলগুলো।
বৃহস্পতিবার রাজধানী ইসলামাবাদে এক সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী শেহাবাজ শরিফের জলবায়ু বিষয়ক উপদেষ্টা রুবিনা খুরশিদ আলম বলেন, পাঞ্জাবের ২৬টি জেলার সবগুলোতে, সিন্ধের দক্ষিণাঞ্চলে এবং বেলুচিস্তানের দক্ষিনপশ্চিমাঞ্চলে কয়েক দিন আগে থেকে ব্যাপক তাপপ্রবাহ শুরু হয়েছে এবং আগামী অন্তত এক সপ্তাহ এই অবস্থা থাকবে।
‘উষ্ণতা বৃদ্ধির কারণে বিশ্বের যেসব দেশ বর্তমানে সবচেয়ে বেশি আবহাওয়াগত দুর্যোগ ও ক্ষয়ক্ষতির শিকার হচ্ছে, সেসব দেশের তালিকায় পঞ্চম স্থানে আছে পাকিস্তান,’ সংবাদ সম্মেলনে বলেন রুবিনা।
সূত্র : এএফপি, ভয়েস অব আমেরিকা
এসএমডব্লিউ