তাপমাত্রা ছাড়িয়েছে ৪৭ ডিগ্রি, ‘রেড অ্যালার্ট’ জারি দিল্লিতে
রাজধানী নয়াদিল্লিসহ অধিকাংশ অঞ্চলে তাপমাত্রা ৪৭ দশমিক ৮ ডিগ্রিতে পৌঁছানোর পর ৫ দিনের জন্য ‘লাল সতর্কতা’ (রেড অ্যালার্ট) জারি করেছে দিল্লির রাজ্য সরকার। গতকাল সোমবার থেকে শুরু হয়েছে এই রেড অ্যালার্টের মেয়াদ।
এদিকে ভয়াবহ গরম-তাপপ্রবাহের কারণে ইতোমধ্যে দিল্লিতে সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছেছে বিদ্যুতের চাহিদা। যেসব স্কুল এখনও গ্রীষ্ককালীন ছুটি ঘোষণা করেনি, গতকাল সোমবার রেড অ্যালার্ট জারির পাশাপাশি অবিলম্বে সেসব স্কুলকে ছুটি ঘোষণা করতে নির্দেশ দিয়েছে দিল্লির রাজ্য সরকার।
গ্রীষ্মকালে সাধারণত দিল্লিতে তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রি বা তার কিছু ওপরে থাকে; কিন্তু এবারের গ্রীষ্মে যে গরম পড়েছে, তা স্বাভাবিক নয় বলে জানিয়েছেন নয়াদিল্লির আবহাওয়া দপ্তরের (আইএমডি) কর্মকর্তারা। বিশেষ করে গত চারদিনের প্রতিদিনই তাপমাত্রা বেড়েছে ভারতের রাজধানী ও তার আশপাশের এলাকাগুলোতে।
আইএমডির তথ্য অনুযায়ী, গত শুক্রবার দিল্লির তাপমাত্রা ৪২ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস, পরের দিন শনিবার ৪৩ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস, তার পরের দিন রোববার ৪৪ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস ছিল। সোমবার তা পৌঁছায় ৪৭ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসে। কর্মকর্তারা বলেছেন, মে মাসের এই সময়ে দিল্লির যে স্বাভাবিক তাপমাত্রা, তার তুলনায় প্রায় ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপ বেশি ছিল সোমবার।
গতকাল সোমবার দিল্লিতে চলতি ২০২৪ সালের সবচেয়ে উষ্ণ দিন ছিল বলেও জানিয়েছেন আবহাওয়া দপ্তরের কর্মকর্তারা। এদিন সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে দিল্লির দক্ষিণপশ্চিমাঞ্চলে — ৪৭ দশমিক ৮ ডিগ্রি।
অসহনীয় এই গরমে সবাই কষ্ট পেলেও মূলত ভুক্তভোগী নিম্ন আয়ের লোকজন, যাদের ঘরে এসি নেই, পানিও ব্যয় করতে হয়ে হিসেব করে। এই গরমের যাদের প্রতিদিন কাজের জন্য বাইরে বের হতে হয়, তারাও হিটস্ট্রোক ও অন্যান্য তাপজনিত অসুস্থতার ঝুঁকি নিয়ে বের হন।
গরমের কারণে ১১ মে থেকে ৩০ জুন পর্যন্ত স্কুল ছুটির নির্দেশ দিয়েছিল দিল্লির রাজ্য সরকারের শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের। পরীক্ষার কারণে কিছু স্কুলে এখনও ছুটি হয়নি, রেড অ্যালার্ট জারির পর সেগুলোকে দ্রুত ছুটি ঘোষণার নির্দেশ দিয়েছে মন্ত্রণালয়।
এদিকে গরমের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে বিদ্যুতের চাহিদা। সোমবার বিকেল ৩ টা ৩৩ মিনিটে নয়াদিল্লিতে বিদ্যুতের চাহিদা ছিল ৭ হাজার ৫৭২ মেগাওয়াটে। এটি দিল্লিতে একদিনে সর্বোচ্চ বিদ্যুৎ চাহিদার রেকর্ড। এর আগের রেকর্ডটি হয়েছিল গত বছর ২২ আগস্ট। ওই দিন বিদ্যুতের চাহিদা পৌঁছেছিল ৭ হাজার ৪৩৮ মেগাওয়াটে।
তাপপ্রবাহের কারণে ব্যাপক কষ্ট হচ্ছে চিড়িয়াখানার পশুপাখিদেরও। দিল্লির প্রধান চিড়িয়াখানা ন্যাশনাল জুওলজিক্যাল পার্ক পশুপাখিদের স্বস্তি দেওয়ার জন্য ওয়াটার কুলার, খড়ের ছাউনি, ফ্রুট আইস বল, ওয়াটার শাওয়ার প্রভৃতির ব্যবস্থা নিয়েছে।
তাপপ্রবাহ, হিটস্ট্রোক এবং গরমজনিত অসুস্থতা থেকে সুরক্ষা নিশ্চিত করতে লোকজনকে খুব জরুরি প্রয়োজন ব্যতীত ঘর থেকে বের না হওয়ার পরামর্শ দিয়েছে আইএমডি। সেই সঙ্গে পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পানি ও তরল খাবার গ্রহনের নির্দেশনাও দেওয়া হয়েছে।
সূত্র : এনডিটিভি
এসএমডব্লিউ