কোভিশিল্ডের মতোই ভয়ঙ্কর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া কোভ্যাক্সিনের টিকায়
করোনাভাইরাসের সেই ভয়াবহতা এখন আর নেই। কিন্তু ঘুরে-ফিরে আবারও আলোচনায় করোনার টিকা। কিছুদিন আগেই কোভিশিল্ডের টিকায় পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার কথা জানা গিয়েছিল। তবে শুধু কোভিশিল্ড নয়। ভয়ঙ্কর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া রয়েছে কোভ্যাক্সিনের টিকায়ও।
আর বিস্ফোরক এই দাবি করেছেন ভারতের বেনারস হিন্দু বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা। এই টিকা নেওয়া ব্যক্তিদের ওপর এক বছর ধরে পর্যবেক্ষণ চালিয়েছেন তারা। আর তারপরই সামনে এসেছে ভয়ঙ্কর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার তথ্য।
গত বৃহস্পতিবার (১৬ মে) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম হিন্দুস্তান টাইমস।
— The Times Of India (@timesofindia) May 16, 2024
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কোভ্যাক্সিন নিয়েছেন এমন ৩০ শতাংশ রোগীদের মধ্যে টিকার ভয়ঙ্কর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা গেছে বলে বেনারস হিন্দু বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএইচইউ) গবেষকরা দাবি করেছেন। যদিও ওই দাবি নাকচ করে দিয়েছে কোভ্যাক্সিনের প্রস্তুতকারক সংস্থা ভারত বায়োটেক।
বেনারস হিন্দু বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএইচইউ) গবেষকদের দাবি, কোভ্যাক্সিন নিয়েছেন এমন ৯২৬ জনের ওপরে এক বছর ধরে পর্যবেক্ষণ চালিয়েছেন তারা। পর্যবেক্ষণে দেখা গেছে, এই টিকা নেওয়া ব্যক্তিদের প্রতি ৩ জনের মধ্যে একজনের দেহে শ্বাসকষ্ট থেকে শুরু করে চর্মরোগ, স্ট্রোক, গিলান-বারি সিন্ড্রোম ও রক্ত জমাট বাঁধার মতো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে।
এর মধ্যে চর্মরোগ হয়েছে ১০.৫ শতাংশ টিকা গ্রহণকারীর। স্নায়ুর সমস্যায় ভুগছেন ৪.৭ শতাংশ রোগী। পেশির সমস্যায় ভুগছেন ৫.৮ শতাংশ রোগী। ১০.২ শতাংশের কিশোর-কিশোরীর দেহে নানাবিধ শারীরিক সমস্যা দেখা গেছে।
এছাড়া প্রাপ্তবয়স্কদের মধ্যে সাধারণ ব্যাধিতে আক্রান্ত হয়েছেন ৮.৯ শতাংশ। ৪.৬ শতাংশ নারীর দেহে ভ্যাকসিনের প্রভাবে ঋতুস্রাবজনিত নানা সমস্যা দেখা গেছে। ২.৭ শতাংশ নারীর মধ্যে চোখের সমস্যা দেখা গেছে।
বেনারস হিন্দু বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণা রিপোর্ট বলছে, গবেষণার জন্য বেছে নেওয়া ৯২৬ জনের মধ্যে ৩০ শতাংশ অ্যাডভার্স ইভেন্টস অব স্পেশ্যাল ইন্টারেস্ট-এর (এইএসআই) তালিকায় রয়েছেন। তাদের মধ্যে বেশিরভাগই বলছেন, শ্বাসযন্ত্রের ওপরের অংশে ভাইরাল সংক্রমণের সমস্যা ছিল। এছাড়াও রক্ত জমাট বাঁধা, অ্যালার্জির সমস্যাও ছিল বলেও দাবি করা হয়েছে।
এই গবেষণা ২০২২ সালের জানুয়ারি থেকে ২০২৩ সালের আগস্ট মাস পর্যন্ত করা হয়েছে। যাদের ওপর পরীক্ষা করা হয়েছে, তাদের ৬৩৫ জন কিশোর আর ২৯১ জন প্রাপ্তবয়স্ক। কিশোরদের মধ্যে এইএসআই-এর ত্বক সংক্রান্ত সমস্যা, সাধারণ শারীরিক সমস্যা, স্নায়ু সংক্রান্ত সমস্যা দেখা গেছে।
এছাড়াও প্রাপ্তবয়স্কদের মধ্যেও স্নায়ু সংক্রান্ত সমস্যা, সাধারণ শারীরিক সমস্যা এইএসআই-এর আওতায় থাকতে দেখা গেছে।
আরও পড়ুন
অন্যদিকে দ্য টাইমস অব ইন্ডিয়ায় প্রকাশিত এই গবেষণা সংক্রান্ত খবরে বলা হয়েছে, কিশোরীদের মধ্যেও এইএসআই-এর সমস্যা রয়েছে। সেক্ষেত্রে টাইফয়েডের মতো সমস্যার কথা উঠে এসেছে।
বলা হচ্ছে, যারা কোভ্যাক্সিনের দুটি ডোজ নিয়েছেন তাদের থেকে এইএসআই-এর প্রভাবে প্রভাবিত হওয়ার অনেক বেশি ঝুঁকি রয়েছে যারা তিনটি ডোজ বা বিবিভি১৫২ (BBV152) এর চারটি ডোজ নিয়েছেন। তাদের ঝুঁকির পরিমাণ ২ গুণ বেশি।
অবশ্য বেনারস হিন্দু বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকদের এই দাবি প্রত্যাখ্যান করেছে কোভ্যাক্সিনের প্রস্তুতকারক সংস্থা ভারত বায়োটেক। ভ্যাকসিন প্রস্তুতকারী ওই সংস্থার দাবি, এই ধরনের গবেষণার জন্য যে বৃহৎ পরিমাণ তথ্যের প্রয়োজন, সেটা গবেষকরা দিতে পারেননি।
এমনকি গবেষকদের নিরপেক্ষতা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছে ভারত বায়োটেক।
টিএম