পাগলু সেই নাচের ভিডিও নিজেই শেয়ার করলেন মোদি, বললেন— আনন্দ পেলাম
ভারতে চলছে লোকসভা নির্বাচন। ৩য় দফার ভোটে মঙ্গলবার (৭ মে) দেশটির ৯৩টি লোকসভা আসনে চলছে ভোটগ্রহণ। আর এর মধ্যেই সোশ্যাল মিডিয়ায় নিজের নাচের এক ভিডিও শেয়ার করেছেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।
ভিডিওটিতে তাকে এক মঞ্চে কায়দা করে হাঁটতে এবং নাচতে দেখা যাচ্ছে। না, ভিডিওটি সত্যিকারের নয়। তৈরি করা। পাগলু সেই নাচের ভিডিও নিজেই শেয়ার করে মোদি লিখেছেন— নিজেকে নাচতে দেখে আনন্দ পেলাম।
সোমবার (৬ মে) রাতে এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম বলছে, ভিডিওটি প্রথমে এথেয়িস্ট কৃষ্ণ নামের একটি এক্স হ্যন্ডেল থেকে শেয়ার করা হয়েছিল। এর সঙ্গে ক্যাপশনে লেখা ছিল, ‘এই ভিডিওটি পোস্ট করছি, কারণ আমি জানি এর জন্য ‘ডিক্টেটর’ আমাকে গ্রেপ্তার করবে না।’
— Narendra Modi (@narendramodi) May 6, 2024
আর এই ভিডিওটিই ফের শেয়ার করেছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। সঙ্গে ক্যাপশনে তিনি লিখেছেন, ‘আপনাদের সকলের মতো আমিও নিজেকে নাচতে দেখে আনন্দ পেয়েছি। ভোটের ভরা মৌসুমে এই ধরনের সৃজনশীলতা সত্যিই আনন্দ দেয়।’
কিন্তু হঠাৎ কেন ভোটের মধ্যে নিজের নাচের স্পুফ ভিডিও শেয়ার করলেন প্রধানমন্ত্রী মোদি? রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, এর পেছনেও রয়েছে রাজনীতি। সম্প্রতি পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে নিয়ে তৈরি প্রায় একই ধরনের একটি ভিডিও শেয়ার করার প্রেক্ষিতে, এক এক্স ব্যবহারকারীকে নোটিশ দিয়েছে পুলিশ।
আর সেই ঘটনার ঠিক পরপরই ভারতীয় প্রধানমন্ত্রীর এই ভিডিও শেয়ার করা কাকতালীয় বলে মানছেন না বিশ্লেষকরা।
মূলত মোদি যে ভিডিওটি শেয়ার করেছেন, সেটি আসলে মার্কিন র্যাপ সঙ্গীত শিল্পী লিল ইয়াচটির মঞ্চে প্রবেশ করার এক ভিডিও। ২০২২ সালের ২১ জুন ইউটিউবে ভিডিওটি প্রথম পোস্ট করা হয়েছিল।
তারপর থেকে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা এআই-এর সাহায্যে অ্যাডলফ হিটলার থেকে শুরু করে ডিসি কমিকসের সুপারভিলেন জোকারের মতো, বিভিন্ন বিখ্যাত বা কুখ্যাত ব্যক্তিত্বদের মুখ, ইয়াচটির জায়গায় ব্যবহার করে মিম তৈরি করা হয়েছে। এবার সেই জায়গায় বসলো নরেন্দ্র মোদির মুখও।
মজার বিষয়, সোমবারই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের একটি স্পুফ ভিডিও শেয়ার করার দায়ে কলকাতা পুলিশের সাইবার ক্রাইম বিভাগের নোটিশ পেয়েছেন দুই এক্স ব্যবহারকারী।
তাদের শেয়ার করা ভিডিওটির নিচেই কলকাতা পুলিশ লিখেছিল, যদি তারা অবিলম্বে তাদের নাম ও বাসস্থান-সহ পরিচয় প্রকাশ না করে, তাহলে ফৌজদারি আইন অনুযায়ী তাদের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হবে। পরে অবশ্য পুলিশের পক্ষ থেকে ওই পোস্ট মুছে দেওয়া হয়।
আরও পড়ুন
তবে, ততক্ষণে ওই ভিডিওটি সোশ্যাল মিডিয়ায় ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ে। কলকাতা পুলিশ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘পাপোশের মতো’ আচরণ করছে বলে কটাক্ষ করেন বিজেপির আইটি সেলের প্রধান অমিত মালব্য।
কলকাতায় মোদিকে ব্যঙ্গ করে অশ্লীল পোস্টার লাগানোর বিষয়ে কলকাতা পুলিশ কেন কোনও পদক্ষেপ নিচ্ছে না, সেই প্রশ্নও তোলেন তিনি।
অবশ্য মোদি তার নিজের স্পুফ ভিডিওটি এক্স অ্যাকাউন্টে শেয়ার করার পর, এই বিষয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সমালোচনা করেছেন হিমাচল প্রদেশের মান্ডি লোকসভা আসনের বিজেপির প্রার্থী তথা বলিউড অভিনেত্রী কঙ্গনা রানাওয়াত।
এক্স হ্যান্ডেলে তিনি লিখেছেন, ‘মমতা দিদি জি এটাকে বলে ‘টেকিং আ চিল পিল (মাথা ঠান্ডা রাখা)। আপনিও মাঝে মাঝে এটা ব্যবহার করুন। আপনি সবসময় রেগে থাকেন। কয়েকটা বাচ্চা ছেলে আপনার নাচের ভিডিও বানিয়েছে। আপনি তাদের জেলে পাঠানোর চেষ্টা করছেন। আপনি খুব রাগী এবং অনমনীয়।’
টিএম