আর্জেন্টিনার প্রেসিডেন্টের বিরুদ্ধে দেশজুড়ে বিক্ষোভ
অর্থনৈতিক সংস্কারের অংশ হিসেবে সরকারি কর্মী ও বিশ্ববিদ্যালয়ের আর্থিক বরাদ্দ কাটছাঁট করার প্রতিবাদে রাজধানী বুয়েন্স এইরেসসহ আর্জেন্টিনার বিভিন্ন শহরে ব্যাপক সরকারবিরোধী বিক্ষোভ হয়েছে। রয়টার্সের তথ্য অনুযায়ী, মঙ্গলবার শুধু রাজধানী বুয়েনস এইরেসেই বিক্ষোভ করেছেন লক্ষাধিক মানুষ।
আর্জেন্টিনার স্থানীয় সংবাদমাধ্যম ও রাজনীতি বিশ্লেষকদের মতে, দেশটির বর্তমান প্রেসিডেন্ট জেভিয়ের মিলেই ক্ষমতাসীন হওয়ার পর এই প্রথম এত বড় আকারের সরকারবিরোধী বিক্ষোভ শুরু হয়েছে আর্জেন্টিনায়।
বিশেষ করে এই প্রথম বিক্ষোভে ব্যাপক সংখ্যায় অংশ নিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। বুয়েন্স এইরেসের বিভিন্ন সড়কে সংঘটিত বিক্ষোভ মিছিলেও নেতৃত্ব দিয়েছেন তারা। ‘সরকারি বিশ্ববিদ্যাল বাঁচাও’, ‘শিক্ষা আমার অধিকার’, ‘ফের বরাদ্দ চালু করো, মিলেই’র পরিকল্পনা বাতিল করো’ প্রভৃতি স্লোগান লেখা প্ল্যাকার্ড ও ফেস্টুন হাতে নিয়ে বিক্ষোভ করেছেন শিক্ষার্থীরা।
আর্জেন্টিনার বিখ্যাত বিশ্ববিদ্যালয় ইউনিভার্সিটি অব বুয়েন্স এইরেস (ইউবিএ) থেকে স্থাপত্যবিদ্যায় ডিগ্রি নেওয়া ৮২ বছর বয়সী স্থপতি (বর্তমানে অবসরে) পেদ্রো পাল্মও অংশ নিয়েছিলেন মঙ্গলবারের বিক্ষোভে। সাংবাদিকদের তিনি বলেন, ‘আমি এখানে এসেছি সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে বাঁচানোর জন্য।’
প্রসঙ্গত, ডলারের মজুত তলানিতে ঠেকে যাওয়ায় করোনা মহামারির পর থেকে মূল্যস্ফীতি বাড়ছে আর্জেন্টিনায়। কয়েক মাস আগে বিশ্বকাপ ফুটবল চ্যাম্পিয়ন এই দেশটির ইতিহাসে প্রথমবারের মতো মূল্যস্ফীতির হার ছুঁয়েছে ১০০-র কোঠা। ফলে খাদ্য-ওষুধ-জ্বালানিসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় বিভিন্ন পণ্যের লাগামহীন আকাশছোঁয়া মূল্যে নাভিশ্বাস উঠছে দেশটির সাধারণ জনগণের।
এই পরিস্থিতিতে অর্থনীতির গতি ফেরাতে গত ২৭ মার্চ ৭০ হাজার সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীকে চাকরি থেকে অব্যাহতি দেওয়ার ঘোষণা দেন আর্জেন্টিনার প্রেসিডেন্ট জেভিয়ার মিলেই। সেই সঙ্গে সরকারের সমাজকল্যাণমূলক কর্মসূচি থেকে ২০ হাজার কর্মসূচি শিগগিরই বন্ধ হবে বলেও জানিয়েছেন তিনি। এসব কর্মসূচির মধ্যে সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের বরাদ্দের বিষয়টিও ছিল।
সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ছাঁটাইয়ের প্রতিবাদে এর আগে গত ১১ এপ্রিল দীর্ঘমেয়াদী আন্দোলন কর্মসূচি ঘোষণা করেছিল আর্জেন্টিনার বৃহত্তম ট্রেড ইউনিয়ন সংস্থা জেনারেল কনফেডারেশন অব লেবার (সিজিটি)। এবার তাতে শামিল হলেন বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীরাও।
তবে মঙ্গলবারের বিক্ষোভের পর বিশ্ববিদ্যালয়ে বরাদ্দের ব্যাপারটি পুনর্বিবেচনা করা হবে বলে ইঙ্গিত দিয়েছে প্রেসিডেন্টের দপ্তর। প্রেসিডেন্টের মুখপাত্র ম্যানুয়েল অ্যাডর্নি বলেন, ‘আমাদের সংবিধানে শিক্ষাকে মৌলিক অধিকার হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। তাই আমরা কখনও চাইবো না যে বিশ্ববিদ্যালয়গুলো বন্ধ হয়ে যাক।’
সূত্র : রয়টার্স
এসএমডব্লিউ