ইসরায়েলি সেনাবাহিনী চলে যাওয়ার পর খান ইউনিসে মিলল গণকবর
ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা ভূখণ্ডে একটি গণকবর শনাক্ত করা হয়েছে। এতে ৫০টি মরদেহের খোঁজ মিলেছে। অবরুদ্ধ এই ভূখণ্ডটির খান ইউনিসে নাসের মেডিকেল কমপ্লেক্সে এই গণকবর শনাক্ত করা হয়।
চলতি মাসের শুরুতে ইসরায়েলি বাহিনী এই শহরটি ছেড়ে যায়। রোববার (২১ এপ্রিল) এই তথ্য জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা।
— Quds News Network (@QudsNen) April 20, 2024
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, খান ইউনিসের নাসের মেডিকেল কমপ্লেক্সে ৫০ টি মৃতদেহ-সম্বলিত একটি গণকবর উন্মোচন করেছে ফিলিস্তিনি জরুরি পরিষেবা।
পরিষেবাটি বলেছে, ‘আমাদের দলগুলো আগামী দিনে অবশিষ্ট শহীদদের খোঁজে তাদের অনুসন্ধান এবং পুনরুদ্ধার অভিযান অব্যাহত রাখবে। কারণ তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক এখনও (গণকবরে) রয়েছে।’
আল জাজিরা বলছে, ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী গত ৭ এপ্রিল গাজার দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর খান ইউনিস থেকে তাদের সৈন্য প্রত্যাহার করে। আর এরপরই সেখানে এই গণকবর শনাক্ত হলো।
মূলত কয়েক মাসের নিরলস ইসরায়েলি বোমাবর্ষণ এবং ভারী লড়াইয়ের পরে গাজার এই শহরের বেশিরভাগ অংশ এখন ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে।
উল্লেখ্য, গত ৭ অক্টোবর হামাসের নজিরবিহীন আন্তঃসীমান্ত হামলার পর থেকে ইসরায়েল গাজা উপত্যকায় অবিরাম বিমান ও স্থল হামলা চালিয়ে যাচ্ছে। ইসরায়েলি এই হামলায় হাসপাতাল, স্কুল, শরণার্থী শিবির, মসজিদ, গির্জাসহ হাজার হাজার ভবন ক্ষতিগ্রস্ত বা ধ্বংস হয়ে গেছে।
এছাড়া ইসরায়েলি আগ্রাসনের কারণে প্রায় ২০ লাখেরও বেশি বাসিন্দা তাদের বাড়িঘর ছাড়তে বাধ্য হয়েছেন।
মূলত ইসরায়েলি আক্রমণ গাজাকে ধ্বংসস্তূপে পরিণত করেছে। জাতিসংঘের মতে, ইসরায়েলের বর্বর আক্রমণের কারণে গাজার প্রায় ৮৫ শতাংশ ফিলিস্তিনি বাস্তুচ্যুত হয়েছেন। আর খাদ্য, বিশুদ্ধ পানি এবং ওষুধের তীব্র সংকটের মধ্যে গাজার সকলেই এখন খাদ্য নিরাপত্তাহীন অবস্থার মধ্যে রয়েছেন।
এছাড়া অবরুদ্ধ এই ভূখণ্ডের ৬০ শতাংশ অবকাঠামো ক্ষতিগ্রস্ত বা ধ্বংস হয়ে গেছে। হাজার হাজার মানুষ কোনও ধরনের আশ্রয় ছাড়াই বসবাস করছে এবং প্রয়োজনের তুলনায় খুবই কম ত্রাণবাহী ট্রাক এই অঞ্চলে প্রবেশ করছে।
ইসরায়েল গাজার ওপর ব্যাপকভাবে অবরোধ আরোপ করে রেখেছে। এর ফলে এই ভূখণ্ডের জনগোষ্ঠী বিশেষ করে উত্তরাঞ্চলের বাসিন্দারা অনাহারের দ্বারপ্রান্তে রয়েছেন।
আরও পড়ুন
ফিলিস্তিনের গাজা ভূখণ্ডের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, গাজায় ইসরায়েলের আক্রমণের ফলে এখন পর্যন্ত ৩৪ হাজারের বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন। যাদের বেশিরভাগই নারী ও শিশু। এছাড়া আহত হয়েছেন আরও ৭৬ হাজারের বেশি মানুষ।
এছাড়া ইসরায়েল আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে (আইসিজে) গণহত্যার দায়ে অভিযুক্ত হয়েছে।
গত জানুয়ারিতে এই আদালতের দেওয়া এক অন্তর্বর্তীকালীন রায়ে তেল আবিবকে গণহত্যামূলক কর্মকাণ্ড বন্ধ করতে এবং গাজার বেসামরিক নাগরিকদের মানবিক সহায়তা প্রদানের নিশ্চয়তা দেওয়ার ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল।
টিএম