ইরানের হামলার জবাব ইস্যুতে সিদ্ধান্ত নেবে শুধু ইসরায়েল
ইরানের সাম্প্রতিক হামলার জবাব কীভাবে ও কবে দেওয়া হবে— সে প্রসঙ্গে সিদ্ধান্ত কেবল ইসরায়েল নেবে। বিশ্বের একমাত্র এই ইহুদি রাষ্ট্রের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু বৃহস্পতিবার ব্রিটেনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরন এবং জার্মানির পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যানালেনা বেয়ারবকের সঙ্গে এক বৈঠকে এ ইস্যুতে সরকারের অবস্থান স্পষ্ট করেছেন।
বৈঠকে নেতানিয়াহু বলেন, ‘আত্মরক্ষার অধিকার সবারই রয়েছে এবং আমি স্পষ্ট করে বলতে চাই যে (ইরান ইস্যুতে) পরবর্তীতে কী পদক্ষেপ নেওয়া হবে— সেই সিদ্ধান্ত শুধু ইসরায়েল নেবে।’
প্রসঙ্গত, ফিলিস্তিন ইস্যুতে ইসরায়েলের সঙ্গে চরম দ্বন্দ্ব রয়েছে ইরানের। সেই দ্বন্দ্ব আরও ব্যাপকভাবে বেড়েছে গত ৭ অক্টোবর গাজায় ইসরায়েলি বাহিনীর অভিযান শুরুর পর থেকে।
চলমান এই বৈরীতার মধ্যেই গত ১ এপ্রিল সিরিয়ার রাজধানী দামেস্কে ইরানি দূতাবাসে বোমা হামলা চালিয়েছিল ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ)। এতে নিহত হন ১৩ জন। নিহতদের মধ্যে ইরানের সামরিক বাহিনীর এলিট শাখা ইসলামিক রেভোল্যুশনারি গার্ড কর্পসের (আইআরজিসি) দুই জ্যেষ্ঠ কমান্ডার মোহাম্মদ রেজা জাহেদী এবং মোহাম্মদ হাদি হাজি রাহিমিও ছিলেন।
হামলার দায় এখন পর্যন্ত ইসরায়েল স্বীকার করেনি। তবে সাক্ষ্য-প্রমাণ যা পাওয়া গেছে,তাতে হামলাটি যে আইডিএফ করেছিল— তা পরিষ্কার।
গত সপ্তাহে ইরানের সর্বোচ্চ আধ্যাত্মিক নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনি বলেছিলেন— এই হামলার জন্য ইসরায়েলকে অবশ্যই শাস্তি পেতে হবে।
তারপর শনিবার রাত ও রোববার ইসরাইলকে লক্ষ্য করে ৩ শতাধিক ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করে ইরানের সামরিক বাহিনী। হামলায় হতাহতের কোনো সংবাদ পাওয়া যায়নি। যুক্তরাষ্ট্র, জর্ডান ও আঞ্চলিক মিত্রদের সহায়তায় বেশিরভাগ ড্রোন-ক্ষেপণাস্ত্র আঘাত হানার আগেই ধ্বংস করেছে ইসরায়েলি বাহিনী। তবে ইসরায়েলের ৯টি স্থাপনায় ইরানি ড্রোন আঘাত হানতে সফল হয়েছে বলে জানা গেছে।
ব্যাপক সেই হামলার পর পাল্টা জবাব দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে ইসরায়েল। এই ঘোষণার প্রতিক্রিয়ায় ইরানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে বলা হয়েছে—ইসরায়েল যদি পাল্টা হামলা চালায় তাহলে পরবর্তী হামলার মাত্রা আরও ব্যাপক ও ভয়াবহ হবে।
এদিকে ইসরায়েলের সবচেয়ে ঘণিষ্ঠ মিত্র যুক্তরাষ্ট্র ইসরায়েলকে ‘পাল্টা হামলা’ না করার আহ্বান জানিয়ে বলেছে, ইসরায়েল যদি সত্যিই এ রকম কোনো পদক্ষেপ নেয়— তাহলে তা সমর্থন করবে না ওয়াশিংটন। পশ্চিমা বিশ্বের অন্যান্য দেশও যুক্তরাষ্ট্রের এই অবস্থানে সমর্থন জানিয়েছে।
ইরানের সেই হামলার পর বুধবার ইসরায়েল সফরে গিয়েছিলেন ডেভিড ক্যামেরন ও অ্যানেলিনা বেয়ারবক। নেতানিয়াহুর সঙ্গে বৈঠকে তারা এই ইস্যুতে পশ্চিমা বিশ্বের অবস্থান পুনর্ব্যক্ত করেন।
তাদের বক্তব্যের জবাবে ইসরায়েলে ক্ষমতাসীন সরকারের অবস্থান পরিষ্কার করেন নেতানিয়াহু।
সূত্র : এএফপি, এনডিটিভি ওয়ার্ল্ড
এসএমডব্লিউ