দক্ষিণ গাজা থেকে সৈন্য প্রত্যাহার করল ইসরায়েল
অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় ছয় মাস ধরে চলা যুদ্ধে বিরতির লক্ষ্যে মিসরে আলোচনা শুরুর আগে দক্ষিণ গাজা থেকে আরও সৈন্য প্রত্যাহার করে নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে ইসরায়েল। রোববার ইসরায়েলের সামরিক বাহিনীর একজন মুখপাত্র বলেছেন, তারা দক্ষিণ গাজা থেকে আরও সৈন্য প্রত্যাহার করে নিয়েছেন।
সম্ভাব্য যুদ্ধবিরতি চুক্তি ঘিরে নতুন করে আলোচনা শুরু করতে মিসরে প্রতিনিধি পাঠিয়েছে ইসরায়েল এবং গাজার ক্ষমতাসীন গোষ্ঠী হামাস। এর মাঝেই দক্ষিণ গাজা থেকে ইসরায়েলি সৈন্য প্রত্যাহারের ঘোষণা এসেছে।
ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স বলছে, রিজার্ভ সৈন্যদের পরিত্রাণ দিতে চলতি বছরের শুরুর দিক থেকে গাজায় সৈন্য কমাতে শুরু করেছে ইসরায়েল। এছাড়া মানবিক পরিস্থিতির উন্নতির জন্য মিত্র ওয়াশিংটনের ক্রমবর্ধমান চাপের মাঝে রয়েছে ইসরায়েল; বিশেষ করে গত সপ্তাহে ইসরায়েলি হামলায় সাত দাতব্য কর্মীর প্রাণহানির পর ইসরায়েলের ওপর ওয়াশিংটনের চাপ বাড়ছে।
তবে সৈন্য প্রত্যাহারের কারণ বা কতসংখ্যক সৈন্যকে গাজা থেকে ফিরিয়ে নেওয়া হয়েছে সেই বিষয়ে বিস্তারিত কোনও তথ্য জানাননি সামরিক ওই মুখপাত্র। গাজার নিয়ন্ত্রণকারী ইসলামি আন্দোলন হামাস ও ইসরায়েল— উভয়ই মিসরে প্রতিনিধিদল পাঠানোর তথ্য নিশ্চিত করেছে।
এদিকে, ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু সতর্ক করে দিয়ে বলেছেন, ‘‘ইসরায়েল বিদেশি চাপের কাছে নত হবে না এবং ‘‘চরম দাবি’’ মেনে নেবে না। আর হামাসের নেতা বাসেম নাইম বলেছেন, ‘‘ব্যর্থতা থেকে নিজেকে রক্ষায় এবং যুদ্ধ শেষে দায় এড়াতে এখনও অচলাবস্থা জারি রাখতে চান নেতানিয়াহু। মার্কিন চাপ পূর্ণাঙ্গ ও ব্যাপক যুদ্ধবিরতির জন্য তাকে বাধ্য করতে যথেষ্ট নয় বলে মনে হচ্ছে।’’
হামাস বলেছে, পূর্ণাঙ্গ ও ব্যাপক যুদ্ধবিরতি চুক্তির জন্য গত ৭ অক্টোবরের পর দখলকৃত এলাকা থেকে ইসরায়েলি বাহিনীর সম্পূর্ণ প্রত্যাহার এবং গাজা উপত্যকাজুড়ে ফিলিস্তিনি বাসিন্দাদের অবাধ চলাচলের স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে হবে।
ইসরায়েলের গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদ ও শিন বেটের শীর্ষ কর্মকর্তাদের মিসরে যুদ্ধবিরতির আলোচনায় অংশ নেওয়ার কথা রয়েছে। এই আলোচনায় মধ্যস্থতা করতে ইতিমধ্যে কাতারের প্রধানমন্ত্রী শেখ মোহাম্মদ বিন আব্দুল রহমান বিন জসিম আল-থানি ও মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা সিআইএর পরিচালক উইলিয়াম বার্ন কায়রোতে পৌঁছেছেন।
ইসরায়েলের সরকারি পরিসংখ্যান অনুযায়ী, গত ৭ অক্টোবর সীমান্ত পেরিয়ে ইসরায়েলে ঢুকে এক হাজার ২০০ জনের বেশি মানুষকে হত্যা করে হামাস। একই সঙ্গে ওই দিন আরও ২৫০ জনের বেশি মানুষকে ধরে নিয়ে গাজায় জিম্মি করে রাখে গোষ্ঠীটি। এই হামলার প্রতিশোধে সে দিনই গাজা উপত্যকায় যুদ্ধ শুরু করে ইসরায়েলি বাহিনী। এই যুদ্ধে ইসরায়েলের নির্বিচার হামলায় ৩৩ হাজার ১০০ জনের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত ও আরও হাজার হাজার মানুষ আহত হয়েছেন বলে গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে।
সূত্র: রয়টার্স, আলজাজিরা।
এসএস