গাজার দুর্ভিক্ষ মানবসৃষ্ট, দায়ী ইসরায়েল : ইইউ
ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় দুর্ভিক্ষ পরিস্থিতির জন্য ইসরায়েলের কঠোর সমালোচনা করেছেন ইউরোপীয় দেশগুলোর জোট ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের (ইইউ) পররাষ্ট্র নীতি বিভাগের প্রধান জোসেপ বরেল। এই পরিস্থিতিকে ‘পুরোপুরি অগ্রহণযোগ্য’ বলেও উল্লেখ করেছেন তিনি।
সোমবার থেকে বেলজিয়ামের রাজধানী ব্রাসেলসে ইইউ’র অন্যতম অঙ্গসংস্থা ইউরোপিয়ান হিউম্যানিটেরিয়ান ফোরামের ২ দিনের সম্মেলন শুরু হয়েছে। সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে দেওয়া এক ভাষণে জোসেপ বরেল, ‘গাজায় এখন আর আমরা দুর্ভিক্ষের প্রান্তে নেই, সেই স্তর অতিক্রম করে আমরা এখন দুর্ভিক্ষের মধ্যে পৌঁছেছি, যা উপত্যকার হাজার হাজার মানুষের জন্য সীমাহীন ভোগান্তি এনে দিয়েছে।’
‘যুদ্ধের জেরে গাজা শিগগিরই এমন একটি অঞ্চলে পরিণত হতে চলেছে, যেখানে কোনো প্রকার আইনের শাসনের অস্তিত্ব থাকবে না এবং সামগ্রিকভাবে ফিলিস্তিন একটি ব্যর্থ রাষ্ট্রে রূপ নিচ্ছে…এমন একটি রাষ্ট্র যা কিনা জন্মের আগেই ব্যর্থ হচ্ছে।’
‘আর এই পরিস্থিতির জন্য সম্পূর্ণভাবে দায়ী ইসরায়েল। গাজার যুদ্ধে ক্ষুধাকে তারা যুদ্ধাস্ত্র হিসেবে হিসেবে ব্যবহার করছে এবং এটা পুরোপুরি অগ্রহণযোগ্য।’
প্রসঙ্গত, গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েলের ইরেজ সীমান্তে অতর্কিত হামলা চালিয়ে সামরিক-বেসামরিক ইসরায়েলি ও বিদেশি নাগরিকসহ ১ হাজার ২০০ জনেরও বেশি মানুষকে হত্যা করে গাজা উপত্যকার নিয়ন্ত্রণকারী গোষ্ঠী হামাসের যোদ্ধারা। সেই সঙ্গে জিম্মি হিসেবে ধরে নিয়ে যায় আরও ২৪০ জন ইসরায়েলি এবং অন্যান্য দেশের নাগরিককে।
১৯৪৮ সালে প্রতিষ্ঠার পর গত ৭৫ বছরের ইতিহাসে সেদিন প্রথম একদিনে এতজন মানুষের হত্যা দেখেছে ইসরায়েল। অভূতপূর্ব সেই হামলার জবাবে সেদিন থেকেই গাজায় অভিযান শুরু করে ইসরায়েলি বিমান বাহিনী এবং তার এক সপ্তাহ পর বিমান বাহিনীর সঙ্গে যোগ দেয় স্থল বাহিনীও।
অভিযানে এ পর্যন্ত নিহত হয়েছেন ৩১ হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনি, আহতের সংখ্যা ছাড়িয়েছে ৭৩ হাজার। নিহত ও আহতদের মধ্যে একটি বড় অংশই নারী, শিশু, কিশোর-কিশোরী এবং বেসামরিক লোকজন।
দারিদ্র্য ও বেকারত্বপীড়িত গাজা উপত্যকায় বসবাসকারী ২০ লাখেরও বেশি ফিলিস্থিনির এক তৃতীয়াংশই জাতিসংঘ ও অন্যান্য দাতা দেশ ও সংস্থার ত্রাণের ওপর সরাসরি নির্ভরশীল। গাজায় অভিযান শুরুর পর থেকে উপত্যকায় ত্রাণের প্রবেশে বাধা দিচ্ছে ইসরায়েলি বাহিনী।
ফলে খাদ্যের অভাবে পশুখাদ্য, গাছের পাতা খেতে বাধ্য হচ্ছেন গাজার লোকজন। ইতোমধ্যে সেখানে খাদ্যের অভাবে মৃত্যু শুরু হয়েছে।
সূত্র : আনাদোলু এজেন্সি
এসএমডব্লিউ