পাকিস্তান: পিআইএর পাইলট-কেবিন ক্রুদের রোজা না রাখার নির্দেশ
বছর ঘুরে আবারও শুরু হয়েছে রহমত, মাগফেরাত আর নাজাতের মাস মাহে রমজান। রোজা ইসলামের মৌলিক ইবাদতের মধ্যে অন্যতম এবং এই কারণে সারা বিশ্বের মুসলিমরা ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্যের সঙ্গে রোজা পালন করে থাকেন।
তবে পাকিস্তানে পাইলট ও কেবিন ক্রুদের রোজা না রাখার নির্দেশ দিয়েছে দেশটির জাতীয় বিমান সংস্থা পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইন্স (পিআইএ)। এ বিষয়ে এয়ারলাইন্সটির কেবিন ক্রু সদস্যদের কাছে একটি সার্কুলারও পাঠানো হয়েছে।
বুধবার (১৩ মার্চ) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যম এক্সপ্রেস ট্রিবিউন।
Rawalpindi: Pilots and cabin crew members of the national airline Pakistan International Airlines (PIA) have been...
Posted by Express Tribune on Tuesday, March 12, 2024
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, জাতীয় বিমান সংস্থা পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইন্সের (পিআইএ) পাইলট এবং কেবিন ক্রু সদস্যদের রমজান মাসজুড়ে ভ্রমণ এবং ফ্লাইট চলাকালীন রোজা থেকে বিরত থাকার নির্দেশিকা মেনে চলার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
এক্সপ্রেস ট্রিবিউন বলছে, রোজা না রাখার নির্দেশিকাটি পিআইএর ফ্লাইট সুরক্ষা বিভাগের ম্যানেজারের কাছ থেকে এসেছে। তিনি এয়ালাইন্সের সকল কেবিন ক্রু সদস্যের কাছে একটি সার্কুলারও পাঠিয়েছেন। সেখানে ফ্লাইট চলাকালীন রোজা রাখার নির্দেশিকাগুলোর রূপরেখা দেওয়া হয়েছে।
সার্কুলারে জোর দিয়ে বলা হয়েছে, ফ্লাইটে ভ্রমণের সময় রোজা রাখা সম্ভব। তবে এটি ঝুঁকির কারণ হবে পারে। কারণ এটি কর্পোরেট নিরাপত্তা ব্যবস্থাপনা এবং এয়ারক্রু মেডিকেল সেন্টারের নির্দেশ অনুযায়ী নিরাপত্তার পরিধি কমিয়ে দিতে পারে।
এতে আরও বলা হয়েছে, রোজা সম্ভাব্যভাবে সতর্কতা হ্রাস করতে পারে এবং সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতাকে দুর্বল করতে পারে। আর এটি জরুরি পরিস্থিতিতে গুরুতর পরিণতির দিকে নিয়ে যেতে পারে।
চিঠিতে আরও উল্লেখ করা হয়েছে, রোজা যদিও ইসলামে একটি সম্মানিত ইবাদত, তারপরও এটি স্বাভাবিক রুটিনকে ব্যাহত করে এবং হাইপোগ্লাইসেমিয়া এবং ডিহাইড্রেশনের মতো শারীরবৃত্তীয় পরিবর্তন ঘটাতে পারে, যা মনোযোগ, সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা এবং রিফ্লেক্সেস (সচেতন চিন্তা ছাড়াই সঞ্চালিত কোনও কাজ) প্রভাবিত করতে পারে।
এক্সপ্রেস ট্রিবিউন বলছে, চিঠিতে রোজার শারীরিক প্রভাবের কারণে জরুরি পরিস্থিতিতে সম্ভাব্য গুরুতর পরিণতি সম্পর্কে সতর্ক করা হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, যদি রোজার প্রভাবের কারণে কোনও জরুরি পদক্ষেপ নেওয়া বিলম্বিত হয় বা ভুলভাবে কার্যকর করা হয়, তাহলে পরিণতি গুরুতর হতে পারে।
এছাড়া রোজা রাখার ধর্মীয় তাৎপর্য স্বীকার করার পাশাপাশি চিঠিতে ভ্রমণের সময় রোজা রাখায় ছাড় দেওয়া হয়েছে বলেও জোর দেওয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন
এদিকে চিঠিতে ককপিট এবং কেবিন ক্রু সদস্যদের কেবল নিজেদের জন্যই নয়, যাত্রী এবং গ্রাউন্ড স্টাফদের দায়িত্বের ওপরও জোর দেওয়া হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, ডিউটিতে থাকাকালীন রোজা রাখা কেবল তাদের নিজের নিরাপত্তার জন্যই নয়, অন্যদের জন্যও ঝুঁকির কারণ হতে পারে।
এছাড়া নির্দেশিকাটিতে স্পষ্টভাবে রোজা রাখা সকল ককপিট এবং কেবিন ক্রু সদস্যদের ফ্লাইট পরিচালনা থেকে বিরত থাকার নির্দেশও দেওয়া হয়েছে। একইসঙ্গে এতে যাত্রী এবং ক্রুদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে নিয়ম ও প্রবিধান মেনে চলার ওপর জোর দেওয়া হয়েছে।
এদিকে যোগাযোগ করা হলে পিআইএর একজন মুখপাত্র এই বিষয়ে আগে একটি সার্কুলার জারি করা হয়েছিল বলে দ্য এক্সপ্রেস ট্রিবিউনকে নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেছেন, এয়ারলাইনটি নিরাপত্তার মান বজায় রাখার জন্য কঠোরভাবে সেটির বাস্তবায়ন নিশ্চিত করছে।
টিএম