আট বছর অপেক্ষার পর সন্তান, ইসরায়েলি হামলায় নিমিষেই সব শেষ
দীর্ঘ আট বছরের অপেক্ষার পর চার মাস আগে ইয়াসির আল-দালু নামের একটি শিশুর জন্ম দেন নুর আল-দালু নামের এক নারী। তবে দখলদার ইসরায়েলের হামলায় নিমিষেই সব স্বপ্ন শেষ হয়ে গেছে গাজার এ নারীর।
গতকাল শুক্রবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) ইসরায়লি বাহিনীর ছোড়া ক্ষেপণাস্ত্রের আঘাতে গাজার দেইর এল-বালাহতে একসঙ্গে ২২ জনের মৃত্যু হয়। তাদের মধ্যে ছিল চার মাস বয়সী ইয়াসির।
শিশুটির মা বার্তাসংস্থা রয়টার্সকে বলেছেন, “তাকে পেতে আমি অনেক কষ্ট করেছি। আট বছরের অপেক্ষার পর তাকে পেয়েছিলাম আমি।”
সাদা কাফনে মুড়িয়ে ইয়াসিরের মরদেহ একটি মর্গে রাখা ছিল। সেখানেই দুঃখ করছিলেন এই সন্তানহারা মা।
দখলদার ইসরায়েলের চালানো ওই হামলায় ইয়াসিরসহ ১৪ শিশু, চারজন নারী এবং চারজন পুরুষ প্রাণ হারান।
আরও পড়ুন
যে বাড়িটিতে ইয়াসিরকে নিয়ে তার বাবা-মা আশ্রয় নিয়েছিলেন সেটি ছিল ফিলিস্তিনি কৌতুক অভিনেতা মাহমুদ আবু জাইতারের পরিবারের। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বেশ পরিচিত মাহমুদ আবু জাইতারের ১২ লাখ ফলোয়ার আছে।
ইয়াসিরের বাবা-মায়ের বাড়ি ছিল গাজা সিটিতে। যুদ্ধ শুরুর পর সেখান থেকে পালিয়ে দেইর এল-বালাহর এই বাড়িতে আশ্রয় নেন তারা। কিন্তু এখানে এসেও ইসরায়েলিদের বর্বর হামলার স্বীকার হতে হয়েছে তাদের।
ইয়াসিরের দাদি রাসা আবু জেইতার বলেছেন, “আমরা বসে ছিলাম। হঠাৎ করে ধ্বংসস্তূপ আমাদের মাথার ওপর পড়ে। আমি জানি না কিভাবে ক্ষেপণাস্ত্র পড়েছে। আমি শিশুটিকে আমার কোলে ধরে রেখেছিলাম। আমি তার মাকে বলি নুর, তোমার ছেলেকে দেখো। আমি শিশুটিকে হালকা করে ধাক্কা দিতে থাকি, নাড়াতে থাকি, চাপড়াতে থাকি যেন সে কেঁদে ওঠে। কিন্তু সে কাঁদেনি। সে নড়াচড়া করছিল না।”
অবৈধ দখলদার ইসরায়েলের সেনারা আজ শনিবার গাজার শেষ নিরাপদ স্থান রাফাহতে ব্যাপক বিমান হামলা চালিয়েছে। এতে অন্তত সাতজন নিহত ও অসংখ্য মানুষ আহত হয়েছেন।
সূত্র: রয়টার্স, আলজাজিরা
এমটিআই