সমুদ্রের নিচে মুক্তিযুদ্ধকালীন সাবমেরিন খুঁজে পেলো ভারত
সমুদ্রের অতল গভীরে— বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের মধ্যে হওয়া মুক্তিযুদ্ধের সময় ব্যবহৃত একটি সাবমেরিনের ধ্বংসাবশেষ খুঁজে পেয়েছে ভারত। বাংলাদেশের স্বাধীনতার মহান যুদ্ধের শেষ দিকে এতে যোগ দেয় ভারতীয় বাহিনী। ওই সময় ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যেও যুদ্ধ বাধে।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যমগুলো জানিয়েছে, ১৯৭১ সালের ৪ ডিসেম্বর ভারতীয় বাহিনীর হামলায় ভারতের পূর্বাঞ্চলীয় সমুদ্র উপকূলের কাছে— পাকিস্তানের পিএনএস গাজী নামের সাবমেরিনটি ডুবে যায়। যা দীর্ঘ ৫০ বছর পর খুঁজে পাওয়া গেছে।
ভারতের গভীর সমুদ্রে নিজজ্জিত জাহাজ উদ্ধারকারী যান (ডিএসআরএভ) সাবমেরিনটি সমুদ্রের ২ কিলোমিটার গভীরে খুঁজে পেয়েছে।
তবে সাবমেরিনের ক্রুদের প্রতি সম্মান জানিয়ে এটি সমুদ্র থেকে উদ্ধার না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দেশটি। মুক্তিযুদ্ধের সময় সাবমেরিনটি ডুবে যাওয়ার বিষয়টিকে যুদ্ধের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা হিসেবে ধরা হয়।
স্বাধীনতা যুদ্ধে ভারত ও তৎকালীন সোভিয়েত ইউনিয়ন (রাশিয়া) বাংলাদেশের পক্ষে অবস্থান নিয়েছিল। অপরদিকে পাকিস্তানের পক্ষে কাজ করেছিল যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের মতো শক্তিশালী দেশগুলো।
পিএনএস গাজী নামের সাবমেরিনটি ১৯৭১ সালের ১৪ নভেম্বর পাকিস্তানের করাচি বন্দর থেকে ছেড়ে ৪ হাজার ৮০০ কিলোমিটার ভ্রমণ করে ভারতের ভাইজাগ উপকূলে পৌঁছায়। যা অন্ধ্রপ্রদেশের একটি বন্দর নগরীর পাশে অবস্থিত।
সাবমেরিনটি মূলত ১৯৪৪ সালে যুক্তরাষ্ট্রের নৌবাহিনীর জন্য তৈরি করা হয়। ওই সময় এটির নাম ছিল ইউএসএস দিয়াবলো। এরপর ১৯৬৩ সালে পাকিস্তানকে লোন হিসেবে সাবমেরিনটি দেয় মার্কিন সরকার। এরপর পাকিস্তান এটিকে গাজী নামে নামকরণ করে।
বলা হয়ে থাকে, সাবমেরিনটি ভারতের পূর্বাঞ্চলের সমুদ্র অঞ্চলে মাইন পুঁততে এসেছিল। এছাড়া ভারতের প্রথম বিমানবাহী রণতরী আইএনএস বিক্রন্তকে ধ্বংস করার লক্ষ্য ঠিক করেছিল এটি।
তবে কোনো লক্ষ্য অর্জনের আগেই ভারতীয় ডেস্ট্রয়ার আইএনএস রাজপুত্র সাবমেরিনটিকে ডুবিয়ে দেয়। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় যুক্তরাজ্যের তৈরি এই ডেস্ট্রয়ারটি ব্যবহার করা হয়েছিল। পরবর্তীতে এই ডেস্ট্রয়ারের ক্রুদের পুরস্কারে ভূষিত করা হয়েছিল।
তবে পাকিস্তানের দাবি, তাদের এ সাবমেরিনটি দুর্ঘটনার কবলে পড়ে বিস্ফোরিত হয়ে ডুবে গিয়েছিল।
সূত্র: আরটি
এমটিআই