ভারতীয় দূতাবাসে কর্মরত পাকিস্তানের গোয়েন্দা, গ্রেপ্তারে চাঞ্চল্য
পাকিস্তানের গোয়েন্দা সন্দেহে ভারতে এক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অভিযুক্ত ওই ব্যক্তি রাশিয়ার রাজধানী মস্কোর ভারতীয় দূতাবাসে কর্মরত ছিলেন। তার বিরুদ্ধে ভারতীয় সেনাবাহিনীর গোপন তথ্য পাকিস্তানকে দেওয়ার অভিযোগ আনা হয়েছে।
রোববার (৪ ফেব্রুয়ারি) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পাকিস্তানের গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআইয়ের হয়ে গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগে রাশিয়ার মস্কোতে অবস্থিত ভারতীয় দূতাবাসের এক কর্মীকে গ্রেপ্তার করেছে ভারতের উত্তরপ্রদেশের সন্ত্রাসবিরোধী স্কোয়াড (এটিএস)।
গ্রেপ্তারকৃত ওই ব্যক্তির নাম সতেন্দ্র সিওয়াল। তিনি ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাল্টি টাস্কিং স্টাফ (এমটিএস) হিসাবে কর্মরত ছিলেন। অভিযোগ সামনে আসার পর তাকে মিরাট থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম বলছে, উত্তরপ্রদেশের অ্যান্টি টেরোরিস্ট স্কোয়াড রোববার মিরাট থেকে সতেন্দ্র সিওয়াল নামক এক যুবককে গ্রেপ্তার করে। ২০২১ সাল থেকে তিনি মস্কোর ভারতীয় দূতাবাসে কাজ করতেন। দূতাবাসে কাজ করার আড়ালে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও ভারতীয় সেনাবাহিনীর গোপন তথ্য পাকিস্তানের গুপ্তচর সংস্থা আইএসআই-কে পাঠাতেন তিনি।
এটিএসের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, অভিযুক্ত এই যুবক মস্কোর ভারতীয় দূতাবাসে কাজ করতেন। সেখানে তিনি ইন্ডিয়া-বেসড সিকিউরিটি অ্যাসিস্ট্যান্ট (আইবিএসএ) পদে নিযুক্ত ছিলেন। পাকিস্তানি গুপ্তচর সংস্থার হ্যান্ডলারদের সঙ্গে যোগাযোগ ছিল সতেন্দ্রর।
মোটা অংকের অর্থের বিনিময়ে ভারতীয় সেনাবাহিনীর গোপন তথ্য পাকিস্তানের কাছে ফাঁস করে দিতেন তিনি। তার এই কাজ ভারতের অভ্যন্তরীণ ও বাহ্যিক নিরাপত্তার জন্য মারাত্মক হুমকি সৃষ্টি করেছে বলেও দাবি করা হয়েছে।
সংবাদমাধ্যম বলছে, গ্রেপ্তারকৃত ওই যুবক উত্তরপ্রদেশের ওয়াহাপুরের শাহমহিউদ্দিনপুর গ্রামের বাসিন্দা। গোপন সূত্রে এটিএসের কাছে খবর আসে, পাকিস্তানের হয়ে গুপ্তচরবৃত্তি করছে ওই যুবক। দীর্ঘদিন ধরে নজরদারি চালানোর পরই জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তাকে মিরাটে ডেকে পাঠানো হয়।
প্রথমে অভিযোগ অস্বীকার করলেও, পরে চাপ দিতেই গুপ্তচরবৃত্তির কথা স্বীকার করেন সতেন্দ্র। তার কাছ থেকে দুটি ফোন, আধার কার্ড ও নগদ অর্থ উদ্ধার করা হয়েছে।
— Hindustan Times (@htTweets) February 4, 2024
সংবাদমাধ্যমের দাবি, সতেন্দ্র সিওয়ালকে এই গুপ্তচরবৃত্তির নেটওয়ার্কের ‘প্রধান খেলোয়াড়’ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। তিনি মস্কোতে ভারতীয় দূতাবাসের মধ্যে নিজের অবস্থানকে কাজে লাগিয়ে গোপনীয় নথিপত্র বের করে নিয়েছেন।
তিনি ভারতের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং ভারতীয় সামরিক স্থাপনাগুলোর কৌশলগত কার্যকলাপ সম্পর্কিত গুরুত্বপূর্ণ নানা তথ্য আইএসআই হ্যান্ডলারদের কাছে তুলে দিয়েছেন বলে অভিযোগ রয়েছে।
এর পাশাপাশি দূতাবাসের দৈনন্দিন কাজ এবং ভারতীয় সেনাবাহিনী সম্পর্কেও সুনির্দিষ্ট তথ্য পাকিস্তানের শক্তিশালী এই গোয়েন্দা সংস্থাকে পাঠাতেন তিনি।
এর আগে গত বছরের আগস্ট মাসে আইএসআই-এর হয়ে কাজ করার অভিযোগে মিরাট থেকেই এক যুবককে গ্রেপ্তার করেছিল উত্তরপ্রদেশের স্পেশাল টাস্ক ফোর্স (এসটিএফ)।
টিএম