ভয়ংকর পদ্ধতিতে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হওয়া স্মিথের মৃত্যু যেভাবে হলো
যুক্তরাষ্ট্রের আলাবামা রাজ্যে নাইট্রোজেন গ্যাস প্রয়োগের মাধ্যমে কেনেথ স্মিথ নামের এক ব্যক্তির মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হয়েছে। স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার (২৫ জানুয়ারি) হোলম্যান কারাগারে এ দণ্ড কার্যকর করা হয়।
এরমাধ্যমে বিশ্বে প্রথমবার নাইট্রোজেন গ্যাসের মাধ্যমে কোনো মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়েছে।
পূর্বে ‘অপরীক্ষিত ও নতুন’ এ পদ্ধতি নিয়ে অনেক সমালোচনা হয়েছিল। জাতিসংঘের মানবাধিকার সংস্থাও এ নিয়ে আপত্তি তুলেছিল। কিন্তু সেসব আপত্তি আমলে না নিয়ে আলাবামায় কেনেথ স্মিথের দণ্ড কার্যকর করা হয়েছে।
১৯৮৮ সালে অপর এক সহযোগীকে নিয়ে মাত্র এক হাজার ডলারের বিনিময়ে এক নারীকে ছুরিকাঘাত করে হত্যা করেন স্মিথ। এ ঘটনায় দোষী সাব্যস্ত হওয়ার পর দুইজনকেই মৃত্যুদণ্ড দেন আদালত। ২০১০ সালে স্মিথের সহযোগীর দণ্ড কার্যকর করা হয়।
নাইট্রোজেন গ্যাসের মাধ্যমে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হলে স্মিথ বর্ণনাতীত কষ্ট ভোগ করবেন বলে আশঙ্কা করা হয়েছিল।
স্মিথের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর ও তার মৃত্যু কীভাবে হয়েছে সেটি দেখেছেন পাঁচজন সাংবাদিক। তাদের দণ্ড কার্যকরের স্থানে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল বলে জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।
ওই সাংবাদিকদের একজন হলেন লি হেডগেপেথ। তিনি জানিয়েছেন, যেই বিশেষ খাটে স্মিথকে শোয়ানো হয়েছিল, সেটিতে প্রচন্ড ছটফট করেছেন তিনি এবং সবমিলিয়ে দণ্ড কার্যকরে ২৫ মিনিট সময় লেগেছে।
তিনি আরও জানিয়েছেন, যখন মুখে নাইট্রোজেন গ্যাসের মাস্ক পরানো হয় তখন স্মিথ উপস্থিত সকলের উদ্দেশ্যে বলেন, ‘আলাবামা আজ মানবতাকে এক ধাপ পেছনে নিয়ে গেছে। আমাকে সমর্থন করার জন্য ধন্যবাদ। সবাইকে ভালোবাসি।’
যখন মাস্কের মাধ্যমে নাইট্রোজেন গ্যাস তার মুখে প্রবেশ করা শুরু করে তখন স্মিথ হাসেন এবং তার পরিবারের সদস্যদের দিকে তাকিয়ে ভালোবাসার চিহ্ন দেখান বলে জানিয়েছেন এই সাংবাদিক।
সাংবাদিক লি হেডগেপেথ বিবিসিকে বলেছেন, ‘আমি এর আগে আরও চারটি মৃত্যুদণ্ড কার্যকরে উপস্থিত ছিলাম। কিন্তু নাইট্রোজেন গ্যাসের প্রভাবে স্মিথ যেভাবে ছটফট করেছে; এ রকমটি কখনো দেখিনি। সে অক্সিজেনের জন্য অব্যাহতভাবে হাঁসফাস করছিল এবং দণ্ড কার্যকরে ২৫ মিনিট সময় লেগেছে।’
অক্সিজেন ছাড়া নাইট্রোজেন গ্যাস শুষে নিলে এটি দেহের কোষগুলো ভেঙে ফেলে এবং পরিশেষে মৃত্যু হয়।
আলাবামা রাজ্যের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছিল, নাইট্রোজেন গ্যাস শুষে নিলে কয়েক সেকেন্ডের মধ্যে স্মিথ জ্ঞান হারাবেন এবং কয়েক মিনিটের মধ্যে তার মৃত্যু হবে। তবে তাদের সেই ধারণার তুলনায় সময় অনেক বেশি লেগেছে এবং মৃত্যুর আগ পর্যন্ত অক্সিজেনের জন্য তিনি ছটফট করেছেন।
সূত্র: বিবিসি
এমটিআই