রাম মন্দির উদ্বোধনের আগে মুসলিম-খ্রিস্টানদের প্রার্থনার আহ্বান
ভারতের উত্তরপ্রদেশের অযোধ্যায় রাম মন্দিরের উদ্বোধন কেবল হিন্দুদের বিজয় নয়, বরং ভারতীয় সভ্যতার বিজয় বলে মন্তব্য করেছে দেশটির উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য আসামের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মা। সোমবার মন্দিরের উদ্বোধনের আগে তিনি দেশটির মুসলিম ও খ্রিস্টান সম্প্রদায়কে বিশেষ প্রার্থনার আয়োজন করার আহ্বান জানিয়েছেন।
রোববার গণমাধ্যমের সঙ্গে আলাপকালে হিমন্ত বিশ্ব শর্মা বলেছেন, ‘‘আমি মুসলিম এবং খ্রিস্টানদের আগামীকাল বিশেষ প্রার্থনার আয়োজন করার জন্য আহ্বান জানাই। যাতে আমরা সব জাতি ও সম্প্রদায়ের সদস্যরা শান্তিতে থাকতে পারি। এটা কেবল হিন্দুদের বিজয় নয়, বরং ভারতীয় সভ্যতার বিজয়। এটা ধর্মের বিজয় নয়।
‘একজন হামলাকারী ভারতীয় উপাসনালয় ভেঙে দিয়েছিল। বাবর একজন হামলাকারী। তিনি কেবল হিন্দুদের ওপর আক্রমণ করেননি। ব্রিটিশ ঔপনিবেশ ও বাবরের মধ্যে কোনও পার্থক্য নেই। বাবর ছিলেন বিদেশি শক্তি।’’
১৯৯২ সালে ভারতের উগ্রপন্থী হিন্দুত্ববাদীরা হামলা চালিয়ে অযোদ্ধায় নির্মিত ষোড়শ শতকের ঐতিহাসিক বাবরি মসজিদ ধ্বংস করেন। বাবরি মসজিদ যেখানে ছিল, অযোধ্যায় ঠিক সেখানেই বিশাল রাম মন্দির তৈরি করা হয়েছে। হিন্দুত্ববাদীরা বলেছেন, হিন্দু দেবতা রামের জন্মস্থানে নির্মিত প্রাচীন একটি মন্দিরের ওপর মসজিদটি নির্মাণ করা হয়েছিল।
মন্দিরের স্থানে মসজিদ নির্মাণের এই অভিযোগ নিয়ে দেশটিতে কয়েক দশক ধরে হিন্দু-মুসলিম বিবাদ চলে। পরে উগ্রপন্থী হিন্দুরা মসজিদটি ধ্বংস করে দেওয়ায় ভারতজুড়ে ভয়াবহ দাঙ্গা ছড়িয়ে পড়ে। এই দাঙ্গায় দেশটিতে ২ হাজার মানুষের প্রাণহানি ঘটে; যাদের বেশিরভাগই মুসলিম।
২০১৯ সালে ভারতের সুপ্রিম কোর্টের এক আদেশে বলা হয়, বাবরি মসজিদ বেআইনিভাবে ধ্বংস করা হয়েছিল। তবে মসজিদের নিচে হিন্দুদের একটি স্থাপনার কাঠামো পাওয়া গেছে। আদালত মন্দির নির্মাণের জন্য বাবরি মসজিদের জায়গা হিন্দু গোষ্ঠীগুলোর কাছে হস্তান্তরের নির্দেশ দেয়। একই সঙ্গে মুসলিম সম্প্রদায়ের নেতাদের একটি মসজিদ নির্মাণের জন্য শহরের অন্য এলাকায় জমি দেওয়ার আদেশও দেয় আদালত।
১৮০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার ব্যয়ে নির্মিত অযোধ্যার মন্দিরটির উদ্বোধন করা হবে সোমবার। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি উপস্থিত থেকে নবনির্মিত মন্দিরটির উদ্বোধন করবেন।
সূত্র: এনডিটিভি।
এসএস