ইসরায়েলের নির্বিচার হামলায় গাজায় প্রাণহানি ২৫ হাজার ছাড়িয়েছে
অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় তিন মাস ধরে চলা যুদ্ধে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীর নির্বিচার হামলায় ফিলিস্তিনিদের প্রাণহানির সংখ্যা ২৫ হাজার ছাড়িয়েছে। রোববার গাজার ক্ষমতাসীন শাসক গোষ্ঠী হামাস নিয়ন্ত্রিত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের এক পরিসংখ্যানে এই তথ্য জানানো হয়েছে।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র আশরাফ আল-কিদরা বলেছেন, গত ২৪ ঘণ্টায় ইসরায়েলি হামলায় গাজায় নতুন করে আরও কমপক্ষে ১৭৮ জন নিহত হয়েছেন। এ ছাড়া হামলায় আহত হয়েছেন আরও অন্তত ৩০০ ফিলিস্তিনি।
জাতিসংঘ বলছে, হামাস-ইসরায়েল যুদ্ধের প্রধান ভুক্তভোগী ফিলিস্তিনি নারী ও শিশুরা। গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েলি ভূখণ্ডে হামলা চালিয়ে ১ হাজার ২০০ জনকে হত্যা করে হামাসের যোদ্ধারা। একই সঙ্গে আরও প্রায় ২৪০ জনকে ধরে নিয়ে গাজায় জিম্মি করে রাখে তারা।
পরে ওই দিনই গাজা উপত্যকায় ব্মিান হামলা শুরু করে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী। টানা তিন সপ্তাহের বিমান হামলার পর ইসরায়েলের সামরিক বাহিনী উত্তর গাজায় স্থল অভিযান শুরু করে।
জাতিসংঘের কর্মকর্তারা বলেছেন, গাজার মোট ২৩ লাখ বাসিন্দার প্রায় ৮৫ শতাংশই তাদের বাড়িঘর ছেড়ে পালিয়েছেন। সেখানকার হাজার হাজার মানুষ উপকূলীয় এই উপত্যকার দক্ষিণাঞ্চলে জাতিসংঘ পরিচালিত আশ্রয়কেন্দ্রে ঠাঁই নিয়েছেন। জাতিসংঘের কর্মকর্তারা বলছেন, উপত্যকার প্রায় এক চতুর্থাংশ মানুষ অনাহারে রয়েছে। অব্যাহত বোমাবর্ষণ আর ইসরায়েলের বিধিনিষেধের কারণে মানবিক সহায়তা পৌঁছাতে পারছে না গাজায়।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বলেছে, গত ৭ অক্টোবর যুদ্ধ শুরুর পর থেকে এখন পর্যন্ত গাজা উপত্যকায় ফিলিস্তিনিদের প্রাণহানির সংখ্যা বেড়ে ২৫ হাজার ১০৫ জনে পৌঁছেছে। এই সময়ে ইসরায়েলের হামলায় আহত হয়েছেন আরও ৬২ হাজার ৬৮১ ফিলিস্তিনি।
আল-কিদরা বলেছেন, ইসরায়েলের হামলায় ধ্বংস হয়ে যাওয়া ভবনের নিচে আরও অনেকেই আটকা পড়েছেন। চিকিৎসকরা পৌঁছাতে পারছেন না এমন অনেক এলাকায় হাজার হাজার মানুষ বিনা চিকিৎসায় মারা যাচ্ছেন। ইসরায়েলি হামলায় নিহত ফিলিস্তিনিদের দুই-তৃতীয়াংশই নারী এবং শিশু।
হামাসের সাথে যুদ্ধে ইসরায়েলের সামরিক বাহিনীর অন্তত ১৯৫ সদস্য নিহত হয়েছেন বলে ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ) জানিয়েছে। ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু হামাসকে ধ্বংস এবং জিম্মিদের ফেরত না দেওয়া পর্যন্ত যুদ্ধ চলবে বলে ঘোষণা দিয়েছেন।
সূত্র: এপি।
এসএস