ইরান-পাকিস্তান সংঘাতের নেপথ্যে কী, এখনই কেন?
প্রতিবেশী দুই দেশের মাঝে সৃষ্ট নজিরবিহীন এক উত্তেজনায় পরস্পরের ভূখণ্ডে পাল্টাপাল্টি হামলা চালিয়েছে পাকিস্তান এবং ইরান। এমন এক সময়ে এই পাল্টাপাল্টি হামলার ঘটনা ঘটেছে, যখন গাজা যুদ্ধ ঘিরে পুরো মধ্যপ্রাচ্য এবং এর বাইরেও উত্তেজনা তীব্র বৃদ্ধি পেয়েছে।
ইরান-পাকিস্তানের মাঝে প্রায় ৯০০ কিলোমিটারের অস্থিতিশীল সীমান্ত রয়েছে। এই সীমান্তের একদিকে পাকিস্তানের বেলুচিস্তান প্রদেশ এবং অন্যদিকে ইরানের সিস্তান ও বালুচিস্তান প্রদেশ। সীমান্তের অশান্ত বেলুচ অঞ্চলে উভয় দেশই দীর্ঘদিন ধরে জঙ্গিদের বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে আসছে। উভয়পাশের বিচ্ছিন্নতাবাদীরা দুই দেশের অভিন্ন শত্রু হলেও উভয়পক্ষের মাটিতে জঙ্গিদের বিরুদ্ধে সরাসরি হামলার চালানোর ঘটনা অত্যন্ত অস্বাভাবিক।
গাজা যুদ্ধ ঘিরে মধ্যপ্রাচ্যে ইরানের মিত্র এবং সশস্ত্র প্রতিরোধ গোষ্ঠীগুলো— যাদেরকে ইরান ‘‘প্রতিরোধের অক্ষ’’ হিসেবে অভিহিত করে; যখন ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী ও তার মিত্রদের ওপর প্রক্সি যুদ্ধ চালিয়ে যাচ্ছে, তখন ইরান এবং পাকিস্তানের ভূখণ্ডে পাল্টাপাল্টি হামলার ঘটনায় বিভিন্ন ধরনের প্রশ্ন উঠছে। ইরান কী ওই অঞ্চলে শক্তির জানান দিতে জঙ্গি আস্তানা গুঁড়িয়ে দেওয়ার বাহানায় পাকিস্তানে হামলা চালিয়েছে? নাকি এর পেছনে অন্য কোনও কারণ রয়েছে?
• আসলে কী ঘটেছে?
প্রতিবেশী দুই দেশের মাঝে হঠাৎ করে তৈরি হওয়া উত্তেজনা এত দ্রুতগতিতে পাল্টা প্রতিক্রিয়ায় রূপ নিয়েছে যে, ইরানের হামলার ৪৮ ঘণ্টা যেতে না যেতেই পাল্টা হামলা চালিয়েছে পাকিস্তান। এর শুরু হয়েছিল মঙ্গলবার; ওই দিন ইরানের বিপ্লবী গার্ড বাহিনী (আইআরজিসি) পাকিস্তানের বেলুচিস্তান প্রদেশে বিমান থেকে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায়। এই হামলায় বেলুচিস্তানে দুই শিশু নিহত ও আরও কয়েকজন আহত হয়েছেন বলে পাকিস্তানি কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে।
আরও পড়ুন
ইরান দাবি করেছে, তারা ‘‘পাকিস্তানি ভূখণ্ডে কেবল ইরানি সন্ত্রাসীদের লক্ষ্যবস্তু করেছে’’ এবং কোনও পাকিস্তানি নাগরিককে লক্ষ্যবস্তু বানায়নি। কিন্তু ইরানের হামলায় পাকিস্তানে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। দেশটি এই হামলাকে ‘‘আন্তর্জাতিক আইনের গুরুতর লঙ্ঘন এবং পাকিস্তান ও ইরানের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কে আঘাত’’ বলে অভিহিত করেছে।
ইরানের রাষ্ট্রায়ত্ত বার্তা সংস্থা তাসনিম বলেছে, ইরানের সামরিক বাহিনী বেলুচিস্তানের সুন্নি জঙ্গিগোষ্ঠী জইশ আল-আদলের ঘাঁটিতে হামলা চালিয়েছে। এই একই গোষ্ঠীটি ইরানে জইশ আল-ধুলম বা আর্মি অব জাস্টিস নামে পরিচিত। বিচ্ছিন্নতাবাদী জঙ্গি গোষ্ঠীটি ইরান-পাকিস্তান সীমান্তের উভয় পাশে সক্রিয় রয়েছে। এর আগে, ইরানের লক্ষ্যবস্তুতে হামলার দায় স্বীকার করেছে গোষ্ঠীটি। জইশ আল-আদলের চূড়ান্ত লক্ষ্য ইরানের সিস্তান ও বালুচিস্তান প্রদেশের স্বাধীনতা।
পারমাণবিক অস্ত্রে সজ্জিত পাকিস্তান সংখ্যাগরিষ্ঠ সুন্নিপন্থী আর ইরান ও তার ‘‘প্রতিরোধ অক্ষ’’ মূলত শিয়া মতাবলম্বী।
ইরানের হামলার দুদিন পর ইরানি ভূখণ্ডে পাল্টা হামলা চালিয়েছে পাকিস্তান। এটাকে সিস্তান ও বালুচিস্তানের বিচ্ছিন্নতাবাদীদের কয়েকটি আস্তানায় ‘‘অত্যন্ত সমন্বিত এবং নির্ভুল নিশানায় নিখুঁত সামরিক সিরিজ হামলা’’ বলে অভিহিত করেছে দেশটি।
বৃহস্পতিবার পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, সিস্তান ও বালুচিস্তানে পাকিস্তানের সামরিক বাহিনীর হামলায় কয়েকজন জঙ্গি নিহত হয়েছেন। ইরানি কর্তৃপক্ষ বলেছে, সিরিজ বিস্ফোরণে অন্তত ৯ জন নিহত হয়েছেন; যাদের মধ্যে তিনজন নারী ও চারজন শিশু।
ইরানে বিচ্ছিন্নতাবাদী যোদ্ধাদের ‘‘নিরাপদ আশ্রয়স্থল এবং ঘাঁটি’’ রয়েছে বলে বছরের পর বছর ধরে অভিযোগ করে আসছে পাকিস্তান। বৃহস্পতিবারের হামলার মাধ্যমে এই বিষয়টি নিজেদের হাতে নিতে বাধ্য হওয়ার কথা জানিয়েছে ইসলামাবাদ।
• এখন কেন?
পরস্পরের সীমান্তের উভয়পাশে বিচ্ছিন্নতাবাদীদের বিরুদ্ধে পাকিস্তান ও ইরানের লড়াই নতুন নয়। গত কয়েক বছর ধরে অস্থিতিশীল সীমান্তে নিয়মিতই প্রাণঘাতী সংঘর্ষের ঘটনা ঘটছে। গত মাসে সিস্তান ও বালুচিস্তানের একটি পুলিশ স্টেশনে হামলার ঘটনা ঘটে। এই হামলায় জইশ আল-আদল জঙ্গিগোষ্ঠী জড়িত বলে অভিযোগ করেছে ইরান। হামলায় ইরানের পুলিশের অন্তত ১১ কর্মকর্তা নিহত হন বলে জানিয়েছে তাসনিম।
তবে সবচেয়ে অস্বাভাবিক বিষয় হলো কেউই উভয় দেশের কর্তৃপক্ষকে সীমান্ত এলাকার লক্ষ্যবস্তুতে হামলার বিষয়টি প্রথমে জানায়নি। আর এ সবই ঘটছে গাজায় ইসরায়েলের নির্বিচার বোমাবর্ষণের পটভূমিতে; যা ওই অঞ্চলজুড়ে উত্তেজনা সৃষ্টি করেছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বৃহত্তর আঞ্চলিক সংঘাত ইরানকে তার সীমানার বাইরে লক্ষ্যবস্তু নির্ধারণের ক্ষেত্রে আরও সক্রিয় হতে উৎসাহিত করতে পারে।
পাকিস্তানে হামলার আগের দিন সিরিয়া এবং ইরাকে ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে ইরান। এ দুই হামলায় ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীর একটি গোয়েন্দা কার্যালয় ও ইরান-বিরোধী একটি সন্ত্রাসী গোষ্ঠীকে লক্ষ্যবস্তু করা হয়েছে বলে জানিয়েছে তেহরান।
এদিকে, লেবানন সীমান্তে ইরান-সমর্থিত শক্তিশালী সশস্ত্র গোষ্ঠী হিজবুল্লাহর সাথে ইসরায়েলের তুমুল লড়াই চলছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ইয়েমেনে ইরান-সমর্থিত হুথি বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে হামলা করছে। এই হুথিরা গাজায় ইসরায়েলের হামলার প্রতিশোধে লোহিত সাগরে মার্কিন ও ইসরায়েলি জাহাজকে লক্ষ্যবস্তু করছে। গাজা যুদ্ধের অবসান না হওয়া পর্যন্ত হুথিদের হামলা বন্ধ হবে না বলে ইরান জানিয়ে দিয়েছে।
কার্নেগি এনডাউমেন্ট ফর ইন্টারন্যাশনাল পিসের জ্যেষ্ঠ ফেলো করিম সাদজাদপৌর বলেন, ‘‘আপনি যদি ইরান এবং তার প্রক্সিদের নিন্দা না জানান... তাহলে তাদের এই কার্যক্রম চালিয়ে যাওয়ার কোনও মূল্যই নেই।’’
তিনি আরও বলেন, ইয়েমেন এবং সিরিয়ার মতো সংঘাতে বিপর্যস্ত দেশগুলোর বিপরীতে মধ্যপ্রাচ্যে ইরানের শক্তিশালী অবস্থানের অর্থ— আঞ্চলিক অস্থিতিশীলতা এবং ‘‘ক্ষমতার শূন্যতা পূরণে’’ লাভবান হওয়া। সাদজাদপৌর বলেছেন, ইরানের কর্মকাণ্ড এখন তার বেশ কয়েকটি প্রধান লক্ষ্যকে কেন্দ্র করে পরিচালিত হয়— যার মধ্যে রয়েছে ফিলিস্তিনিদের ক্ষমতায়ন এবং মধ্যপ্রাচ্যে মার্কিন প্রভাব প্রতিহত করা।
পশ্চিমা সামরিক জোট ন্যাটোর সাবেক মিত্রবাহিনীর কমান্ডার ও মার্কিন সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত জেনারেল ওয়েসলি ক্লার্ক বলছেন, ‘‘মধ্যপ্রাচ্যে চলমান বিভিন্ন ধরনের বৈরীতার নেপথ্যে রয়েছে ইরান। এ অঞ্চলে নেতা হিসাবে নিজের ভূমিকাকে শক্তিশালী করার চেষ্টা করছে দেশটি।’’
মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএনকে তিনি বলেন, ‘‘ইরান আসলে আঞ্চলিক আধিপত্য চাইছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েল যখন সেখানে আছে এবং ইসরায়েল হামাসের বিরুদ্ধে অভিযান চালাচ্ছে, তখন ইরান পাল্টা আঘাত ও নিজেকে জাহির করার তাগিদ অনুভব করছে।’’
• সীমান্ত সংঘাত কেন?
পাকিস্তান, আফগানিস্তান এবং ইরান সীমান্তের যেখানে মিলিত হয়েছে, সেখানে বেলুচ জনগণ আছে। এই বেলুচ জনগোষ্ঠী দীর্ঘদিন ধরে উগ্রতাবাদী স্বাধীন মতাদর্শ পোষণ করে আসছে। ইসলামাবাদ এবং তেহরানের শাসনে তারা সর্বদা ক্ষুব্ধ এবং অসন্তুষ্ট। দশকের পর দশক ধরে সীমান্তের অরক্ষিত অঞ্চলজুড়ে বিদ্রোহ করছেন বেলুচরা।
বেলুচ অধ্যুষিত অঞ্চল প্রাকৃতিকভাবেই সম্পদে সমৃদ্ধ। কিন্তু বেলুচ বিচ্ছিন্নতাবাদীদের অভিযোগ, ওই অঞ্চলের সবচেয়ে দরিদ্র জনগোষ্ঠী তারা। তাদের সম্প্রদায়ের সম্পদও দ্রুত কমে যাচ্ছে।
আয়তনে পাকিস্তানের বৃহত্তম প্রদেশ বেলুচিস্তান। গত কয়েক বছরে এই প্রদেশে ভয়াবহ প্রাণঘাতী হামলার ঘটনা ঘটেছে। পাকিস্তান থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে স্বাধীনতার দাবিতে আন্দোলন করে আসছেন বেলুচ বিচ্ছিন্নতাবাদীরা। ওই অঞ্চলের খনিজ সম্পদ একচেটিয়াভাবে উত্তোলন এবং শোষণের অভিযোগে দশকের পর দশক ধরে বিদ্রোহ করছেন তারা।
ইরানও প্রায় একই ধরনের সংখ্যালঘু বিচ্ছিন্নতাবাদীদের আন্দোলনের মুখোমুখি হয়েছে। দেশটির কুর্দি, আরব এবং বেলুচ সংখ্যালঘুরা দীর্ঘদিন ধরে স্বাধীন রাষ্ট্রের দাবিতে আন্দোলন করছেন। ইরানের ভূখণ্ডে সক্রিয় অনেক বিচ্ছিন্নতাবাদী গোষ্ঠীর একটি জইশ আল-আদল। যুক্তরাষ্ট্রের সরকারের জাতীয় সন্ত্রাস দমন কেন্দ্রের তথ্য অনুযায়ী, জইশ আল-আদল মূলত ইরানের ‘‘জুনদাল্লাহ’’ নামের একটি বৃহত্তর সুন্নি জঙ্গিগোষ্ঠীর অংশ ছিল।
২০১০ সালে ইরান এই গোষ্ঠীটির প্রধানের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করে। পরে জুনদাল্লাহ ভেঙে যায়। সেই সময় এই গোষ্ঠীর একাংশ জইশ আল-আদল গড়ে তোলে। মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর জইশ আল-আদলকে বিদেশি সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে ঘোষণা দিয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় সন্ত্রাস দমন কেন্দ্রের মতে, এই গোষ্ঠীটি প্রায়ই ইরানের নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্য, সরকারি কর্মকর্তা এবং বেসামরিক শিয়া ব্যক্তিদের লক্ষ্য করে হামলা চালায়। ২০১৫ সালে হামলা চালিয়ে ইরানের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর ৮ সদস্যকে হত্যার দাবি করে জইশ আল-আদল। ওই সময় গোষ্ঠীটির সদস্যরা পাকিস্তানি ভূখণ্ড থেকে সীমান্ত পেরিয়ে ইরানে ঢুকে হামলা চালিয়েছিল বলে জানা যায়।
২০১৯ সালে ইরানের সামরিক বাহিনীর সদস্যদের বহনকারী একটি বাসে হামলার দায় স্বীকার করে জইশ আল-আদল। ওই হামলায় সিস্তান-বালুচিস্তানে কমপক্ষে ২৩ নিরাপত্তা কর্মী নিহত হন। পাকিস্তানে ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলার একদিন পর বুধবার জইশ আল-আদল সিস্তান ও বালুচিস্তানে ইরানের সামরিক বাহিনীর গাড়ি লক্ষ্য করে হামলা চালানোর দায় স্বীকার করেছে।
• এরপর কী?
পাকিস্তানে ইরানের মঙ্গলবারের হামলার ঘটনায় উভয় দেশের মাঝে কূটনৈতিক সংকটের সূত্রপাত হয়। ইরান থেকে রাষ্ট্রদূতকে প্রত্যাহার করে নিয়েছে পাকিস্তান। একই সঙ্গে প্রতিবেশী এই দেশটির সাথে উচ্চপর্যায়ের সব ধরনের সফর স্থগিত করেছে ইসলামাবাদ। পাকিস্তানের হামলার পর বৃহস্পতিবার ইরান প্রতিবেশী দেশটির চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্সকে তলব করে ‘‘তাৎক্ষণিকভাবে ব্যাখ্যা’’ দাবি করেছে।
আশপাশের দেশগুলো ইরান-পাকিস্তান পরিস্থিতির ওপর কড়া নজর রাখছে। একই সঙ্গে উভয় দেশকে অত্যন্ত সংযম প্রদর্শনেরও আহ্বান জানিয়েছে প্রতিবেশীরা। পাকিস্তানের চিরবৈরী প্রতিবেশী ভারত বলেছে, ‘‘সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে তাদের জিরো টলারেন্স নীতি রয়েছে। আর হামলা-পাল্টা হামলার ঘটনা পাকিস্তান ও ইরানের অভ্যন্তরীণ বিষয়।’’
উভয় দেশকে সংযম অবলম্বন এবং উত্তেজনার সম্প্রসারণ এড়াতে পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে চীন। পাশাপাশি উভয় দেশ রাজি হলে সংকট প্রশমনে চীন মধ্যস্থতা করতে রাজি আছেও বলে জানিয়েছে দেশটির পররাষ্ট্র দপ্তর।
বুধবার মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার বলেছিলেন, মধ্যপ্রাচ্যে যাতে পূর্ণমাত্রার সংঘাতের শুরু না হয় সে জন্য ওয়াশিংটন কাজ করছে। পাকিস্তান, ইরাক এবং সিরিয়ার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেছেন, ‘‘আমরা দেখেছি গত কয়েক দিনে ইরান তার তিন প্রতিবেশীর সার্বভৌম সীমান্ত লঙ্ঘন করেছে। ইরানের হামলার পর ওই অঞ্চলে ওয়াশিংটনের দীর্ঘদিনের মিত্র পাকিস্তানের প্রতিশোধ নেওয়ার সম্ভাবনা কতটুকু, সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে মিলার বলেছিলেন, ‘‘আমরা আশা করছি, চলমান এই সংকটের শান্তিপূর্ণ সমাধান হবে।’’
ইরানি ভূখণ্ডে পাকিস্তানের পরবর্তী হামলায় ইসলামাবাদ কেবল কূটনৈতিক প্রতিক্রিয়াই নয়, বরং শক্তি প্রদর্শনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। তবে ইরান অথবা পাকিস্তান— উভয় দেশই বিচ্ছিন্নতাবাদী গোষ্ঠীগুলোকে অভিন্ন শত্রু হিসাবে বিবেচনা করে তাদের বিরুদ্ধে পূর্ণমাত্রার সংঘাতে জড়াবে কি না তা স্পষ্ট নয়।
হামলা-পাল্টা হামলার পর উভয়পক্ষ নিজেদের অবস্থান জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছে। যেখানে পরিস্থিতির ক্রমবর্ধমান সম্প্রসারণ কোনও পক্ষই চায় না বলে ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছে। পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ইরানকে ‘‘ভ্রাতৃপ্রতিম দেশ’’ বলে অভিহিত করেছে এবং ‘‘যৌথ সমাধান খুঁজে বের করার’’ প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দিয়েছে।
সূত্র: সিএনএন, তাসনিম।
এসএস