পাকিস্তানে সেনা সদর দপ্তরে হামলা মামলায় ইমরান গ্রেপ্তার
পাকিস্তানের সেনা সদর দপ্তরে (জিএইচকিউ) হামলা মামলায় পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই) এর প্রতিষ্ঠাতা ও দেশটির সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
সাইফার মামলায় ইমরানের মুক্তির পরোয়ানা জারি হওয়ার পরপরই তাকে জিএইচকিউ হামলাসহ অন্যান্য মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়। মঙ্গলবার (৯ জানুয়ারি) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যম এক্সপ্রেস ট্রিবিউন।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সাবেক এই প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে গত বছরের ৯ মের দাঙ্গা সম্পর্কিত মামলাগুলোর শুনানি ভিডিও লিংকের মাধ্যমে মঙ্গলবার অনিুষ্ঠিত হয়। ইমরান বর্তমানে দেশটির আদিয়ালা কারাগারে বন্দি রয়েছেন এবং শুনানিতে একাধিক স্টেশন হাউস অফিসার (এসএইচও) উপস্থিত ছিলেন।
শুনানির সময় সেনা সদর দপ্তরে হামলা মামলায় ইমরানের রিমান্ড মঞ্জুর করতে আদালতের কাছে আবেদন করেন এক কর্মকর্তা। পরে বিচারক মালিক ইজাজের সভাপতিত্বে রাওয়ালপিন্ডির সন্ত্রাসবিরোধী বিশেষ আদালত আইনি যুক্তির সমাপ্তির পর ৯ মে দাঙ্গা সংক্রান্ত ১২টি মামলায় ইমরান খানের দুই দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
আদালতের সিদ্ধান্তের পর সকল থানার তদন্ত দলগুলোকে আদিয়ালা কারাগারের সীমানার মধ্যে ইমরান খানের জড়িত থাকার বিষয়ে তদন্ত করার ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে। তবে আদালত স্পষ্ট নির্দেশ দিয়েছে, পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই) প্রতিষ্ঠাতাকে জেল প্রাঙ্গণ থেকে সরানো যাবে না।
আদালত আপাতত শুনানি স্থগিত করেছেন এবং আগামী ১১ জানুয়ারির মধ্যে বিস্তৃত তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। পরবর্তী শুনানি ১১ জানুয়ারি সকাল ১০টায় আদিয়ালা কারাগার প্রাঙ্গণে হওয়ার কথা রয়েছে।
এর একদিন আগে অবশ্য অফিসিয়াল সিক্রেটস অ্যাক্টের অধীনে মামলার শুনানির জন্য গঠিত বিশেষ আদালত সাইফার মামলায় ইমরান খানের মুক্তির আদেশ জারি করে। ইমরানের মুক্তির আদেশ জারি করে বিচারক আবুল হাসনাত জুলকারনাইন বলেন, সাবেক এই প্রধানমন্ত্রীর জামিন মঞ্জুর করা হয়েছে এবং অন্য কোনও মামলায় আটক না থাকলে তাকে মুক্তি দেওয়া হবে।
অবশ্য মুক্তির আদেশ থাকা সত্ত্বেও তোশাখানা এবং ১৯০ মিলিয়ন পাউন্ড আল-কাদির ট্রাস্ট কেলেঙ্কারিতে গ্রেপ্তার হওয়ার কারণে ইমরান কারাগারে রয়েছেন।
উল্লেখ্য, দুর্নীতির মামলায় গত বছরের ৯ মে ইসলামাবাদ হাইকোর্ট প্রাঙ্গণ থেকে নাটকীয়ভাবে গ্রেপ্তার করা হয় ইমরান খানকে। তার সেই গ্রেপ্তার পারমাণবিক অস্ত্রধারী এই দেশে মারাত্মক অস্থিরতা সৃষ্টি করে। আধাসামরিক বাহিনী রেঞ্জার্স ইমরান খানকে গ্রেপ্তারের ফলে পাকিস্তানে যে অস্থিরতা শুরু হয় তা টানা চারদিন অব্যাহত ছিল এবং এতে কমপক্ষে ১০ বিক্ষোভকারীর মৃত্যু ও বহু সামরিক ও রাষ্ট্রীয় স্থাপনা ধ্বংস হয়ে যায়।
আরও পড়ুন
এছাড়া পাকিস্তানের ইতিহাসে সেবারই প্রথমবারের মতো বিক্ষোভকারীরা ব্যারিকেড ভেঙে রাওয়ালপিন্ডিতে দেশটির সেনা সদর দপ্তরে (জিএইচকিউ) প্রবেশ করে এবং লাহোরে কর্পস কমান্ডারের বাড়িতে অগ্নিসংযোগ করে। পরে সামরিক বাহিনী ৯ মেকে ‘কালো দিবস’ হিসেবে অভিহিত করে এবং সেনা আইনের অধীনে বিক্ষোভকারীদের বিচার করার সিদ্ধান্ত নেয়।
পরে শীর্ষ আদালতের হস্তক্ষেপে ইমরান কারাগার থেকে মুক্তি পলেও তার দল পিটিআইয়ের ওপর নেমে আসে ব্যাপক দমন-পীড়ন। সহিংসতা এবং সামরিক স্থাপনায় হামলায় জড়িত থাকার অভিযোগে শত শত পিটিআই কর্মী এবং সিনিয়র নেতাদের কারাগারে বন্দি করা হয়।
টিএম