গাজায় প্রবল লড়াইয়ে ইসরায়েলের আরও ৮ সৈন্য নিহত
ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা ভূখণ্ডে প্রতিরোধ যোদ্ধাদের হামলায় ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীর আরও ৮ সেনা নিহত হয়েছেন। উপত্যকাটির দক্ষিণাঞ্চল ও মধ্যাঞ্চলে স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র যোদ্ধাদের হামলায় প্রাণ হারান তারা।
সর্বশেষ এই প্রাণহানির ঘটনায় গাজায় স্থল অভিযান শুরুর পর নিহত ইসরায়েলি সেনাদের সংখ্যা দেড়শো ছাড়িয়েছে। রোববার (২৪ ডিসেম্বর) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যম টাইমস অব ইসরায়েল।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী রোববার যুদ্ধে নিহত অতিরিক্ত আরও আট সৈন্যের নাম ঘোষণা করেছে। এতে করে সপ্তাহান্তে নিহত সৈন্যের সংখ্যা ১৩ জনে পৌঁছেছে। এদিকে হামাস গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে চলমান আক্রমণ আরও তীব্র করেছে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী।
টাইমস অব ইসরায়েল বলছে, দক্ষিণ গাজায় অবস্থানের সময় ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর কমব্যাট ইঞ্জিনিয়ারিং কর্পসের চার সৈন্য এবং একজন প্যারামেডিক ট্যাংক-বিধ্বংসী গাইডেড ক্ষেপণাস্ত্রের আঘাতে নিহত হয়েছে। ক্ষেপণাস্ত্রটি তাদের বহনকারী সাঁজোয়া গাড়িতে আঘাত হানলে তারা প্রাণ হারান।
আর গাজার মধ্যাঞ্চলে বন্দুকধারীদের সঙ্গে যুদ্ধের দুটি পৃথক ঘটনায় বোমা হামলায় আরও চারজন ইসরায়েলি সৈন্য নিহত হন। শনিবারের এই প্রাণহানির ঘটনায় গত অক্টোবরের শেষের দিকে গাজায় স্থল অভিযান শুরুর পর থেকে নিহত সৈন্যের সংখ্যা ১৫২ জনে পৌঁছেছে।
এদিকে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী গাজায় বোমা হামলা চালিয়ে যাচ্ছে এবং আরও বেসামরিক লোকদের তাদের বাড়ি-ঘর ও এলাকা ছেড়ে পালিয়ে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছে। শনিবার ইসরায়েল বলেছে, তারা বিমান হামলা চালিয়ে হাসাহ আত্রাশ নামে এক ব্যক্তিকে হত্যা করেছে।
তিনি হামাসের কাছে গাজায় অস্ত্র সরবরাহের ‘অভিযোগে অভিযুক্ত’ একজন ব্যক্তি। হামাসের পক্ষ থেকে অবশ্য এই বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়নি।
ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী বলেছে, গাজা উপত্যকার উত্তরে তাদের প্রায় সম্পূর্ণ অপারেশনাল নিয়ন্ত্রণ রয়েছে এবং দক্ষিণে অভিযান আরও জোরদার করছে।
অন্যদিকে গাজার মধ্যাঞ্চলে ইসরায়েলি হামলায় আরও বহু ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা বলছে, শনিবার সন্ধ্যা থেকে মধ্য গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি হামলায় অন্তত ৪০ ফিলিস্তিনি নিহত ও আরও বহু মানুষ আহত হয়েছেন।
এছাড়া মধ্য গাজার দেইর আল-বালাহ শহরটি রাতের আঁধারে ইসরায়েলি বাহিনীর ভারী বোমাবর্ষণের শিকার হয় বলেও জানায় সংবাদমাধ্যমটি।
আরও পড়ুন
কাতারভিত্তিক এই সংবাদমাধ্যমটি বলছে, গত শুক্রবার জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের প্রস্তাব পাস হওয়ার পর থেকে মধ্য গাজায় ইসরায়েলি বোমা হামলা ব্যাপকভাবে বেড়েছে। দেইর আল-বালাহ শহরের আবাসিক এলাকায় রাতভর প্রচণ্ড বোমাবর্ষণে অনেক বাড়িঘর ধ্বংস হয়ে গেছে।
এর আগে শহরের বুরেইজ এবং নুসেইরাত শরণার্থী শিবিরের মতো জায়গা থেকে লোকজনকে সরে যাওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়। হামলার পর এখনও পর্যন্ত ধ্বংসস্তূপের নিচে থাকা ব্যক্তিদের খোঁজে তল্লাশি চলছে বলেও জানানো হয়েছে।
আল জাজিরা বলছে, গাজা উপত্যকার পূর্বাঞ্চলে আগ্রাসীভাবে কৃষি জমি ধ্বংস করার পাশাপাশি খান ইউনিসের পূর্বাঞ্চল ও পূর্ব গাজা সিটির শুজাইয়া এবং জেইতুনের আশপাশের এলাকাগুলোতেও বাড়িঘর ধ্বংস করে চলেছে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী।
টিএম