আরেক দফা যুদ্ধবিরতির জন্য ইসরায়েল প্রস্তুত
গাজা উপত্যকা নিয়ন্ত্রণকারী গোষ্ঠী হামাসের কব্জায় থাকা জিম্মিদের মুক্ত করতে উপত্যকায় দ্বিতীয় দফা যুদ্ধবিরতির জন্য প্রস্তুত রয়েছে ইসরায়েল। মধ্যপ্রাচ্যের ইহুদিশাসিত ভূখণ্ডটির প্রেসিডেন্ট ইসাক হেরজগ মঙ্গলবার এক বৈঠকে এ তথ্য জানিয়েছেন।
মঙ্গলবার হেরজগের কার্যালয়ে গিয়েছিলেন বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূতরা। তাদের সঙ্গে মত বিনিময়কালে ইসরায়েলের প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘গাজায় অবরুদ্ধ জিম্মিদের মুক্ত করতে সেখানে আরেক দফা যুদ্ধবিরতির জন্য ইসরায়েল প্রস্তুত। এখন (পরবর্তী যুদ্ধবিরতি সংক্রান্ত) সব দায়দায়িত্ব নির্ভর করছে ইয়াহিয়া সিনওয়ার এবং হামাস নেতৃত্বের ওপর।’
ইয়াহিয়া সিনওয়ার হামাসের শীর্ষ নেতাদের একজন। সশস্ত্র এই গোষ্ঠীটির হাই কমান্ডের প্রায় সবাই কাতারে থাকেন; তবে সিনওয়ার থাকেন গাজায়। গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে হামলা হয়েছিল, তার মূল পরিকল্পনাকারীও ছিলেন তিনি।
গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েলের উত্তরাঞ্চলীয় ইরেজ সীমান্তে অতর্কিত হামলা চালায় হামাস যোদ্ধারা। তারপর ওই দিন থেকেই গাজায় অভিযান শুরু করে ইসরায়েলি বিমান বাহিনী। পরে ২৮ অক্টোবর থেকে অভিযানে যোগ দেয় স্থল বাহিনীও।
ইসরায়েলি বাহিনীর টানা দেড় মাসের অভিযানে কার্যত ধ্বংসস্তুপে পরিণত হয়েছে গাজা উপত্যকা, নিহত হয়েছেন ১৯ হাজার ৬৬৭ জন। এই নিহতদের ৭০ শতাংশই নারী, শিশু,অপ্রাপ্তবয়স্ক কিশোর-কিশোরী এবং বয়স্ক লোকজন।
সেই সঙ্গে আহত হয়েছেন আরও ৫২ হাজার ৫৮৬ জন ফিলিস্তিনি। এছাড়া হাজার হাজার পরিবার বাড়িঘর-সহায় সম্বল হারিয়ে আশ্রয় নিয়েছেন বিভিন্ন স্কুল, সরকারি প্রতিষ্ঠান ও হাসপাতাল প্রাঙ্গণে।
অন্যদিকে, হামাসের গত ৭ অক্টোবরের হামলায় ইসরায়েলে নিহত হয়েছিলেন ১ হাজার ২০০ জন ইসরায়েলি ও অন্যান্য দেশের নাগরিক। পাশাপাশি, ইসরায়েলের ভূখণ্ড থেকে ২৪২ জন ইসরায়েলি ও অন্যান্য দেশের নাগরিকদের সেদিন জিম্মি হিসেবে ধরে নিয়ে গিয়েছিল হামাস যোদ্ধারা।
এই জিম্মিদের মধ্যে ইসরায়েলিদের সংখ্যা ১০৪ জন। বাকি ১৩৬ জনের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র, থাইল্যান্ড, জার্মানি, ফ্রান্স, আর্জেন্টিনা, রাশিয়া ও ইউক্রেনের নাগরিকরা রয়েছেন; এবং রয়েছেন শিশু, নারী, তরুণ-তরুণী এবং বৃদ্ধ-বৃদ্ধা— সব বয়সী মানুষ।
৭ দিনের অস্থায়ী বিরতির সময় নিজের কব্জায় আটক জিম্মিদের মধ্যে থেকে ১১৮ জনকে মুক্তি দিয়েছে হামাস; বিপরীতে এই সময়সীমায় ইসরায়েলের বিভিন্ন কারাগার থেকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে ১৫০ জন ফিলিস্তিনি বন্দিকে।
এএফপি
এসএমডব্লিউ