১ম ডোজ কোভ্যাকসিন, দ্বিতীয় ডোজে কোভিশিল্ড দিল হাসপাতাল
চলমান গণটিকাদান কর্মসূচিতে এক ব্যক্তিকে প্রথম ডোজে কোভ্যাকসিন এবং দ্বিতীয় ডোজে কোভিশিল্ড টিকা দেওয়ার ঘটনায় তুমুল আলোচনা-সমালোচনা চলছে ভারতের উত্তরাঞ্চলীয় রাজ্য উত্তর প্রদেশের সংবাদমাধ্যমগুলোতে। সাধারণ মানুষ ও প্রশাসন এই ঘটনার সমালোচনা করলেও বিশেষজ্ঞরা বলছেন, করোনা প্রতিরোধী শক্তি বাড়ার ক্ষেত্রে ঘটনটি ইতিবাচক।
বুধবার ভারতের উত্তরপ্রদেশের মহারাজগঞ্জ জেলার আমন সরকারি হাসপাতালে টিকা নিতে আসা উমেশ নামের এক ব্যক্তির সঙ্গে ঘটে এই ঘটনা। তিনি পেশায় মহারাজগঞ্জের প্রধান উন্নয়ন কর্মকর্তা গৌরব সিং সোগারওয়ালের গাড়ির চালক।
এর আগে করোনার প্রথম ডোজের টিকা নেওয়ার সময় কোভ্যাক্সিনের টিকা নিয়েছিলেন উমেশ। বুধবার টিকার দ্বিতীয় ডোজ নিতে এলে হাসপাতালের চিকিৎসাকর্মীরা ভুলবশত তাকে কোভিশিল্ডের টিকা দিয়ে দেন।
তাৎক্ষনিকভাবে এই ঘটনায় বেশ উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। এইদিন উমেশের সঙ্গে টিকা নিতে এসেছিলেন মহারাজগঞ্জের প্রধান উন্নয়ন কর্মকর্তার অপর দুই ব্যক্তিগত কর্মচারী চন্দন কুশওয়াহা ও মদন। উমেশের সঙ্গে এই ঘটনা ঘটার পর ভয়ে তারা টিকা নেওয়া থেকে বিরত থাকেন।
হাসপাতালসূত্রে অবশ্য জানা গেছে, দুই ডোজে দুই ধরনের টিকা নিলেও কোনো শারীরিক সমস্যা হয়নি উমেশের। তবে উত্তর প্রদেশের প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা এ কে শ্রীবাস্তব এর জেরে কড়া হুশিয়ারি দিয়েছেন রাজ্যের স্বাস্থ্যকর্মীদের।
স্থানীয় সাংবাদিকদের শ্রীবাস্তব বলেন, ‘দুটি ভিন্ন টিকা দেওয়ার পরও এখন পর্যন্ত ওই ব্যক্তির কোনো শারীরিক সমস্যায় হয়নি— এটা আশার কথা; তবে ঘটনাটি অনভিপ্রেত। স্বাস্থ্যকর্মীদের কড়া নির্দেশ দেওয়া হয়েছে যেন এর পুনরাবৃত্তি আর না ঘটে। তাদেরকে আরো বলা হয়েছে, যারা দ্বিতীয় ডোজের টিকা নিতে আসবেন, তাদেরকে যেন সেই টিকাই দেওয়া হয়, যেটি তারা প্রথম ডোজে নিয়েছিলেন।’
তবে ভারতের বিশেষজ্ঞমহলের একাংশ এই ঘটনাকে ইতিবাচক হিসেবে দেখছেন। তাদের মত, এতে করোনা প্রতিরোধী শক্তি বাড়বে মানুষের দেহে।
এক্ষেত্রে অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকদের সাম্প্রতিক গবেষণার উদাহারণ টেনেছেন তারা। সেই গবেষণায় দেখা গিয়েছে, প্রথম ডোজে অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা নেওয়ার পর দ্বিতীয় ডোজে ফাইজারের টিকা নেওয়া হলে অনেক বেশি মাত্রায় করোনা প্রতিরোধী শক্তি গড়ে ওঠে মানবদেহে।
নিজস্ব প্রযুক্তিতে এ পর্যন্ত দু’টি করোনা টিকা এনেছে ভারত। এগুলো হলো ভারত বায়োটেক কোম্পানির তৈরি টিকা কোভ্যাক্সিন এবং সেরাম ইনস্টিটিউটের করোনা টিকা কোভিশিল্ড। গত ১৫ জানুয়ারি থেকে দেশটিতে শুরু হওয়া গণটিকাদান কর্মসূচিতে অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার পাশাপাশি এই দুই টিকাও ব্যবহার করা হচ্ছে।
এসএমডব্লিউ