তৃণমূলের সাংসদ মহুয়া মৈত্রের সদস্যপদ খারিজ
অর্থ ও দামী উপহারের বিনিময়ে একজন ব্যবসায়ীর পক্ষে পার্লামেন্টে প্রশ্ন করার অভিযোগে তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্রের এমপি সদস্যপদ খারিজ হয়ে গেছে। ভারতের পার্লামেন্টের লোকসভার নৈতিকতা বিষয়ক কমিটির সুপারিশ ও তার ভিত্তিতে আয়োজিত কণ্ঠভোটে শুক্রবার তার এমপি সদস্যপদ বাতিল হয়।
সদ্য সাবেক হওয়া এই সাংসদ পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের নদীয়া জেলার কৃষ্ণনগর আসনের এমপি ছিলেন। ৪৯ বছর বয়সী মহুয়া মৈত্রের বিরুদ্ধে ২ কোটি রুপি এবং বিভিন্ন দামী উপহারের বিনিময়ে জনৈক ব্যবসায়ী দর্শন হীরানন্দানির পক্ষে পার্লামেন্টে প্রশ্ন এবং বক্তব্য দেওয়ার অভিযোগ ছিল। গত অক্টোবরের মাঝামাঝি এ অভিযোগ এনেছিলেন লোকসভার বিজেপিদলীয় এমপি নিশিকান্ত দুবে।
নিশাকান্তের অভিযোগ আমলে নিয়ে পার্লামেন্টের এথিক্স কমিটিকে এ বিষয়ে তদন্তের নির্দেশ দেন লোকসভার স্পিকার ওম বিড়লা। প্রায় দুই মাস তদন্ত শেষে শুক্রবার স্পিকার বরাবর ৪৯৫ পৃষ্ঠার প্রতিবেদন জমা দেয় এথিক্স কমিটির চেয়ারম্যান ও বিজেপি সাংসদ বিনোদ সোনকর। প্রতিবেদনে মহুয়ার বিরুদ্ধে উত্থাপিত অভিযোগের সত্যতা মিলেছে উল্লেখ করে তার এমপি সদস্যপদ খারিজের সুপারিশ করে নৈতিকতা কমিটি।
প্রতিবেদন জমা পড়ার পর কংগ্রেস, তৃণমূল কংগ্রেসসহ অন্যান্য বিজেপিবিরোধী দলগুলো সেই প্রতিবেদন পড়ার জন্য সময় চেয়েছিল, কিন্তু লোকসভা স্পিকার ওম বিড়লা তাতে আমল দেননি। মহুয়া মৈত্র আত্মপক্ষ সমর্থন করে বক্তব্য দেওয়ার জন্য সময় চেয়েছিলেন, তা ও মঞ্জুর করেননি স্পিকার।
সময় প্রদানের পরিবর্তে স্পিকার ওম বিড়লা মহুয়ার পার্লামেন্ট সদস্যপদ থাকবে-কী থাকবে না— প্রশ্নের ওপর ভোটাভুটির ডাক দেন। পার্লামেন্টের বিজেপি ও সমমনা অন্যান্য দলের এমপিদের কণ্ঠভোটে খারিজ হয়ে যায় মহুয়ার সদস্যপদ।
‘শেষ দেখে ছাড়ব’
এদিকে কণ্ঠভোটে লোকসভার সদস্যপদ খারিজ হওয়ার পর পার্লামেন্ট ভবনের বাইরে এসে ক্ষোভে ফেটে পড়েন মহুয়া মৈত্র। অপেক্ষমান সাংবাদিকদের উদ্দেশে তিনি বলেন লোকসভার এথিক্স কমিটিতে ‘এথিক্স’ বলে কিছু অবশিষ্ট নেই। তারা সব নিয়ম ভেঙে ফেলেছে। আমি কারও কাছ থেকে টাকা নিয়েছি বা কোনও উপহার নিয়েছি, তার কোনও প্রমাণ নেই।
তিনি আরও বলেন, ‘মোদী সরকার যদি ভেবে থাকে, আমাকে এভাবে চুপ করিয়ে আদানি ইস্যু থেকে তারা মুক্তি পাবে, তবে ভুল ভাবছে। আমি এর শেষ দেখে ছাড়ব।’
নিজ দলের এমপির পাশে দাঁড়িয়েছেন তৃণমূল কংগ্রেসের সভানেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও। কার্শিয়ং থেকে তাৎক্ষণিক এক বার্তায় মমতা বলেন, ‘মহুয়াকে আত্মপক্ষ সমর্থন করার সুযোগ দেওয়া হয়নি। এক জন মহিলাকে বিজেপি রাজনৈতিক স্বার্থ চরিতার্থ করার জন্য যে ভাবে হেনস্থা করল, তাতে গণতন্ত্রকে হত্যা করা হল। দল মহুয়ার পাশে ছিল, আছে। বিজেপির প্রতিহিংসাপরায়ণ রাজনীতি প্রমাণিত।’
এনডিটিভি
এসএমডব্লিউ