কাতারে পৌঁছেছে ইসরায়েলি মোসাদের দল
হামাসের সাথে ইসরায়েলের আরেক দফার যুদ্ধবিরতি চুক্তির বিষয়ে আলোচনা করতে মধ্যস্থতাকারীর ভূমিকা পালন করা উপসাগরীয় অঞ্চলের দেশ কাতারে পৌঁছেছে ইসরায়েলি গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদের একটি দল। গাজায় হামাস-ইসরায়েলের নতুন যুদ্ধবিরতি চুক্তির বিষয়ে শনিবার দোহায় কাতারের কর্মকর্তাদের সাথে মোসাদের ওই দলের বৈঠক করার কথা রয়েছে।
হামাস-ইসরায়েলের যুদ্ধবিরতি চুক্তি শেষ হওয়ার পর শুক্রবার গাজা উপত্যকায় নির্বিচার বোমা হামলা শুরু করেছে ইসরায়েল। গত ২৪ ঘণ্টায় গাজায় অন্তত ৪০০ লক্ষ্যবস্তুতে ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ) হামলা চালিয়েছে। এতে অনেক বেসামরিক হতাহত ও ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির ঘটনা ঘটেছে। একই সময়ে লেবাননের দক্ষিণাঞ্চলে ইসরায়েলি বাহিনীর হামলায় অন্তত তিনজন নিহত হয়েছেন।
কাতারের মধ্যস্থতায় নতুন যুদ্ধবিরতি চুক্তির আলোচনায় কেবল নারী ও শিশু জিম্মিদের মুক্তি নয়, বরং ইসরায়েলি অন্যান্য জিম্মিদের সম্ভাব্য মুক্তি ও যুদ্ধবিরতির নতুন শর্তে জোর দিয়ে ইসরায়েল। এই চুক্তির আলোচনার বিষয়ে অবগত একটি সূত্র বলেছে, শুক্রবার ভেস্তে যাওয়া যুদ্ধবিরতি চুক্তির সাথে নতুন চুক্তির শর্তে পরিবর্তন আসতে পারে।
জিম্মিদের মুক্তি ও যুদ্ধবিরতির জন্য নতুন শর্ত নির্ধারণের চিন্তা-ভাবনা করছে ইসরায়েল ও হামাস। গত ২৪ নভেম্বর হামাস-ইসরায়েলের মাঝে প্রথম যুদ্ধবিরতি চুক্তি হয়। ওই দিন থেকে বাস্তবায়ন শুরু হওয়া যুদ্ধবিরতি চুক্তি অনুযায়ী, ইসরায়েলি কারাগারে বন্দী নারীসহ ফিলিস্তিনিদের মুক্তির বিনিময়ে ৭ অক্টোবর গাজায় ধরে নিয়ে আসা ইসরায়েলি নারী ও শিশু জিম্মিদের মুক্তি দেয় হামাস।
দুই দফায় বাড়ানো এই যুদ্ধরিবতি চুক্তি এক সপ্তাহ ধরে কার্যকর থাকে। তবে উভয়পক্ষই পরস্পরের বিরুদ্ধে পাল্টাপাল্টি চুক্তির শর্ত লঙ্ঘনের অভিযোগ করে। তৃতীয় দফায় চুক্তির মেয়াদ বাড়ানোর আগেই শুক্রবার থেকে উভয়পক্ষই হামলা-পাল্টা হামলা শুরু করেছে।
হামাস তাদের কাছে থাকা সব নারী জিম্মিকে মুক্তি দিতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে বলে অভিযোগ করেছে ইসরায়েল। ফিলিস্তিনি এক কর্মকর্তা বলেছেন, নারী ইসরায়েলি সেনাদের মুক্তি দেওয়া হবে কি-না, সেই বিষয়টিকে কেন্দ্র করে চুক্তি ভেস্তে গেছে।
এদিকে, যুদ্ধবিরতি চুক্তি ভেস্তে যাওয়ার পর গত ২৪ ঘণ্টায় ইসরায়েলি বাহিনীর হামলায় অন্তত ১৯৩ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন বলে গাজায় হামাস নিয়ন্ত্রিত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে। একই সময়ে ইসরায়েলের হামলায় আহত হয়েছেন আরও ৬৫২ জন।
শনিবার গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, গাজায় ইসরায়েলি হামলায় ফিলিস্তিনিদের প্রাণহানির সংখ্যা ১৫ হাজার ২০০ ছাড়িয়ে গেছে। আর আহত হয়েছেন আরও ৪০ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি। ইসরায়েলের নির্বিচার হামলায় হতাহত ফিলিস্তিনিদের ৭০ শতাংশ নারী এবং শিশু।
সূত্র: বিবিসি, এএফপি, রয়টার্স।
এসএস