গাজার পরিস্থিতিকে ‘মানবিক বিপর্যয়’ বললেন পুতিন
টানা প্রায় তিন সপ্তাহ ধরে ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা ভূখণ্ডে হামলা চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েল। নির্বিচার এই হামলায় এখন পর্যন্ত নিহত হয়েছেন সাড়ে ৬ হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনি। এছাড়া হামলার পাশাপাশি গাজায় সর্বাত্মক অবরোধও আরোপ করে রেখেছে ইসরায়েল।
এই অবস্থায় গাজার পরিস্থিতিকে ‘মানবিক বিপর্যয়’ হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। অন্যদের সংঘটিত অপরাধের মূল্য নিরপরাধ মানুষের দেওয়া উচিত নয় বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
বৃহস্পতিবার (২৬ অক্টোবর) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থ আনাদোলু।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চলমান সংঘাতের মধ্যে গাজা উপত্যকার পরিস্থিতিকে ‘মানবিক বিপর্যয়’ হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। বুধবার মস্কোতে বিভিন্ন ধর্মের প্রতিনিধিদের নিয়ে আয়োজিত এক সভায় বক্তৃতাকালে পুতিন বলেন, ‘অন্যদের সংঘটিত অপরাধের মূল্য নিরপরাধ মানুষ অবশ্যই দেবে না।’
রাশিয়ার এই প্রেসিডেন্ট গাজার ফিলিস্তিনিদের ‘সম্মিলিত শাস্তির’ নীতির বিরোধিতাও করেন। তিনি বলেন, এই ক্ষেত্রে বয়স্ক মানুষ, নারী, শিশু এবং পুরো পরিবার মারা যায়।
বুধবারের এই বক্তব্যে পুতিন ইসরায়েল-ফিলিস্তিন সংকট নিরসনে দ্বি-রাষ্ট্র সমাধানের বিষয়ে রাশিয়ার অবস্থান পুনর্ব্যক্ত করেন। তিনি বলেন, ‘ইসরায়েল ও ফিলিস্তিনের জন্য দুটি পৃথক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠাই হচ্ছে মধ্যপ্রাচ্যে দীর্ঘমেয়াদী শান্তির চাবিকাঠি।’
প্রেসিডেন্ট পুতিন হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, ‘মূল কাজ হলো রক্তপাত এবং সহিংসতা বন্ধ করা। অন্যথায়, সংকটের আরও সম্প্রসারণ হতে পারে এবং সেটি গুরুতর ও অত্যন্ত বিপজ্জনক, ধ্বংসাত্মক পরিণতি ডেকে আনতে পারে। এবং সেটি কেবল মধ্যপ্রাচ্য অঞ্চলের জন্য নয়, এটি মধ্যপ্রাচ্যের সীমানাও ছাড়িয়ে যেতে পারে।’
তিনি ‘কিছু শক্তির’ ধর্মীয় ও জাতীয় অনুভূতি নিয়ে খেলার প্রয়াসের নিন্দাও করেন যাতে তাদের ‘বৈরী স্বার্থের’ জন্য অস্থিতিশীলতা ও বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হয়।
পুতিন বলেন, ‘ইহুদিদের বিরুদ্ধে মুসলিমদের উস্কানি দেওয়া হচ্ছে...শিয়াদের উস্কানি দেওয়া হচ্ছে সুন্নিদের বিরুদ্ধে, ক্যাথলিকদের বিরুদ্ধে অর্থোডক্সদের উস্কানি দেওয়া হচ্ছে। ইউরোপে, তারা মুসলমানদের পবিত্র জিনিসের বিরুদ্ধে ব্লাসফেমি এবং ভাঙচুরের বিষয়ে অন্ধ থাকে। আবার বেশ কয়েকটি দেশে নাৎসি অপরাধীরা... ক্ষমতায় থেকে প্রকাশ্যে গৌরব বোধ করে।’
আরও পড়ুন
রাশিয়ার এই প্রেসিডেন্ট অভিযোগ করেন, ‘ইউক্রেন ক্যানোনিকাল অর্থোডক্স চার্চকে নিষিদ্ধ করতে এবং গির্জার মধ্যকার বিভেদকে আরও গভীর করার জন্য নানা পদক্ষেপ নিচ্ছে।’
তার দাবি, ‘আমার মতে, এই সমস্ত ক্রিয়াকলাপের লক্ষ্য সুস্পষ্ট, আর সেটি হচ্ছে বিশ্বে অস্থিতিশীলতা বৃদ্ধি করা, সংস্কৃতি, জনগণ, বিশ্ব ধর্মকে বিভক্ত করা, সভ্যতার সংঘাতকে উস্কে দেওয়া। আর এর সবই করা হচ্ছে ‘ডিভাইড অ্যান্ড রুল’-এর সুপরিচিত নীতি অনুসারে।’
টিএম